হ্যারি কেন বিলিয়ে দিলেন ইংল্যান্ডের স্বপ্ন

৬০ বছর ধরে বিশ্বকাপ ধরে রাখতে পারেনি কোনো দল। ফ্রান্সের সামনে এবার সুযোগ ছিলো। টুর্নামেন্টের প্রথম থেকেই দুর্দান্ত ফুটবল খেলা ফ্রান্স প্রতিটি ধাপেই দেখাচ্ছে শিরোপা ধরে রাখতেই কাতারে এসেছে তারা। বিশ্বকাপেরই অন্যতম হাই ভোল্টেজ ম্যাচে ইংল্যান্ডকে ২-১ গোলে হারিয়ে শিরোপা ধরে রাখা থেকে আর মাত্র দুই ধাপ দূরে এখন দিদিয়ের দেশ্যম শিষ্যরা।

ম্যাচের শুরু থেকেই খেলার নিয়ন্ত্রণ ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের কাছে। যদিও ম্যাচের প্রথম আক্রমণটি করে ইংল্যান্ড। ৪ মিনিটের মাথায় ফিল ফোডেনের জোড়ালো শট প্রতিহত হয় ফরাসি রক্ষণে। এরপরেই শুরু হয় এমবাপ্পে ডেম্বেলেদের আক্রমণ। লিড নিতেও বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি দুইবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের।

ডিবক্সের বেশ খানিকটা বাইরে যখন চুয়েমিনি বল পেলেন তখন ইংল্যান্ডের ডিফেন্ডাররাও হয়তো ভাবেননি এত দূর থেকে শট নেবেন এই রিয়াল মাদ্রিদ তারকা। ডিবক্সের বাইরে থেকেই জোড়ালো শটে ইংল্যান্ড গোলরক্ষক পিকফোর্ডকে পরাস্থ করেন চুয়ামেনি। ১-০ গোলের লিড নেয় ফ্রান্স। ফ্রান্সের জার্সিতে চুয়ামেনির এটি দ্বিতীয় গোল।

গোল খেয়ে খেলার গতি বাড়ায় ইংল্যান্ডও। ২৬ মিনিটে ডিবক্সের ভেতরে হ্যারি কেইন ফাউলের শিকার হয়ে পেনাল্টির আবেদন করলেও পেনাল্টি দেননি রেফারি। ২৯ মিনিটে কেইনের জোড়ালো শট লরিস প্রতিহত করলে সমতা ফেরানো হয়নি ইংল্যান্ডের। ১-০ গোলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় ফ্রান্স।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই প্রবল আক্রমণাত্মক ইংল্যান্ড। একের পর এক আক্রমণে ফরাসি রক্ষণকে ব্যস্ত রাখে তারা। সমতা ফেরাতেও বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি ইংল্যান্ডের। ৫৩ মিনিটে ডিবক্সে সাকাকে ফাউল করে বসেন চুয়ামেনি। পেনাল্টি থেকে গোল করে ইংল্যান্ডকে সমতায় ফেরান অধিনায়ক কেইন। ইংল্যান্ড এর জার্সিতে ৫৩ গোল করে এখন সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতার ওয়েইন রুনির রেকর্ডে ভাগ বসালেন কেইন।

খেলায় সমতা ফেরার পর দুইদলই আক্রমণ চালাতে থাকে। তবে দ্বিতীয়ার্ধে দুর্দান্ত ছিলো ইংল্যান্ডই। বেশ কয়েকবার খেলায় লিড নেবার সুযোগ তৈরি করে তারা। ৭০ মিনিটে কর্নার থেকে হ্যারি ম্যাগুয়েরের করা হেড অল্পের জন্য লক্ষভ্রষ্ট না হলে এগিয়ে যেতে পারত ইংল্যান্ড। তবে দ্বিতীয়ার্ধের শেষ কোয়ার্টারে খেলার নিয়ন্ত্রণ নিতে শুরু করে ফ্রান্স।

৭৭ মিনিটে দারুণ বিল্ড আপ থেকে ডিবক্সে বল পেয়ে যান অলিভার জিরুদ। দুর্দান্ত শট নিলেও পিকফোর্ডের দুর্দান্ত সেভ এ সে যাত্রায় বেঁচে যায় ইংল্যান্ড। তবে পরের মিনিটে আর ইংল্যান্ডের তাত্রা হতে পারেননি পিকফোর্ড। আবারো অলিভার জিরুদের দুর্ন্দান্ত হেড,এবার লক্ষ্যভেদ করে। ২-১ এ এগিয়ে যায় ফ্রান্স।

তবে ৮৪ মিনিটেই লাইফ লাইন পেয়েছিলো ইংরেজরা। থিও হার্নান্দেজ এর ফাউল থেকে পেনাল্টি পায় ইংল্যান্ড। তবে এবার ইংল্যান্ড অধিনায়ক শট নিলেন গোলপোস্টের অনেক বাইরে দিয়ে। খেলায় ফেরায় সুযোগ হেলায় নষ্ট করে ইংল্যান্ড।

এরপর বেশ কয়েকবার আক্রমণে উঠলেও আর গোলের দেখা পায়নি কোনো দলই। ২-১ গোলের জয় নিয়ে সেমি ফাইনলালে পৌঁছে গেল ফ্রান্স।

৬০ বছর পর বিশ্বকাপ শিরোপা ধরে রাখতে আর দুই ম্যাচ দূরে ফ্রান্স। ১৯৯৮ সালে খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপ জেতা দেশ্যম এবার অপেক্ষায় কোচ হিসেবে টানা দুই শিরোপা জেতার অনন্য রেকর্ড করতে। ফাইনালে ওঠার লড়াইতে দেশ্যম শিষ্যদের প্রতিপক্ষ রূপকথা রচনা করে চলা আফ্রিকান সিংহ মরক্কো।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link