রাজনীতির মাঠে নতুন ইনিংস শুরু করেছেন সাকিব আল হাসান। অতি নাটকীয় কিছু না ঘটলে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাগুরা-১ আসনের সাংসদ হতে যাচ্ছেন তিনিই। রাজনীতির অভিষেকেই তাই বাইশ গজের মতো নিজেকে রাঙালেন টাইগার এ অলরাউন্ডার।
অবশ্য অলরাউন্ডার সাকিব ছুটবেন তাঁর অলরাউন্ডার স্বত্ত্বাকে সঙ্গী করেই। এখনই ক্রিকেটকে বিদায় বলছেন না তিনি। জাতীয় দলের হয়ে আরো অনেকটা দিন খেলতে চান বলেই গুঁটিয়ে নিয়েছেন ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট থেকে। তবে খেলোয়াড়ি জীবনে সক্রিয় রাজনীতিতে অংশ নেওয়ার দিক দিয়ে সাকিবই কিন্তু ইতিহাসের প্রথম ক্রিকেটার নন। এর আগে খেলোয়াড়ি জীবনেই সাংসদ হয়েছেন সনাথ জয়াসুরিয়া ও মাশরাফি বিন মর্তুজা।
ক্রিকেটারদের রাজনীতিতে যোগ দেওয়া নতুন কিছু নয়। সিবি ফ্রাইয়ের মতো কিংবদন্তি ক্রিকেটার রাজনীতিতে যুক্ত হয়েছিলেন। পাকিস্তানের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ইমরান খান তো আরো এক ধাপ এগিয়ে ছিলেন। প্রথম কোনো ক্রিকেটার হিসেবে হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তবে কেউই তাদের খেলোয়াড়ি জীবনে রাজনীতিতে প্রবেশ করেননি।
এই ধারাটা শুরু হয়েছিল শ্রীলঙ্কার সনাথ জয়াসুরিয়ার হাত ধরে। ২০১০ সালেই রাজনীতিতে আসনে লঙ্কান এ অলরাউন্ডার। মাতারা জেলা থেকে প্রার্থী হিসেবে সেবার নির্বাচনে দাঁড়িয়েছিলেন মাতারা হারিকেন এবং জিতেও ছিলেন। পরবর্তীতে মাহিন্দা রাজাপক্ষের সরকারের অধীনে উপমন্ত্রী ছিলেন জয়াসুরিয়া।
সাংসদ হওয়ার পরেও ২০১১ সাল পর্যন্ত শ্রীলঙ্কার হয়ে টি-টোয়েন্টি আর ওয়ানডে খেলে গেছেন জয়াসুরিয়া। এ ছাড়া খুলনা রয়্যাল বেঙ্গলসের হয়ে বিপিএল রুহুনা রাইনোস ও কান্দুরাতা ওয়ারিয়র্সের হয়ে খেলেছেন ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট।
জয়াসুরিয়ার মতোই ২০১৯ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নড়াইল-২ আসনে সাংসদ নির্বাচিত হন মাশরাফি। সাংসদ হওয়ার পর তিনি ২০১৯ বিশ্বকাপে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। যদিও বিশ্বকাপের পর এক সিরিজ বাদেই আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার থেমে যায় তাঁর। তবে এখন পর্যন্ত ঘরোয়া ক্রিকেট খেলে যাচ্ছেন তিনি।
জয়াসুরিয়া, মাশরাফিদের মতো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ঠিক ততটা চেনা মুখ না হলেও ২০২১ সালে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে শিবপুরের বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন মনোজ তিওয়ারি। একটা সময় কলকাতা নাইট রাইডার্সে যার সতীর্থ ছিলেন সাকিব আল হাসান।
ভারতের জার্সি গায়ে তেমন সুবিধা করতে না পারলেও এখনও রঞ্জি ট্রফিতে বাংলাকে দিচ্ছেন নেতৃত্বে। সবশেষ তাঁর অধিনায়কত্বেই রঞ্জি ট্রফির ফাইনালে উঠেছিল বাংলা। তবে এই খেলোয়াড়ি জীবনে রাজনীতিতে দারুণ সক্রিয় মনোজ তিওয়ারি। এখন বিধায়কের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ক্রীড়ামন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
জয়াসুরিয়া, মাশরাফি, তিওয়ারির পর এবার রাজনীতির ময়দানে সফল মুখ হতে যাচ্ছেন সাকিব আল হাসান। আগেই বলে রেখেছেন, ক্রিকেট ক্যারিয়ারের মতোই রাজনৈতিক ক্যারিয়ারও তিনি বড় করতে চান। তবে ক্রিকেট ক্যারিয়ারে যেভাবে নন্দিন-নিন্দিত, দুটোই হয়েছেন, সাংসদ হিসেবে নিশ্চিয়ই নিন্দিত হতে চাইবেন না সাকিব।