মুম্বাইয়ের ফ্ল্যাট উইকেটে ট্রেন্ট বোল্ট আর টিম সাউদি বিশ ওভার বল করে দিয়েছেন ১৮৬ রান! মোহাম্মদ সিরাজ এবং জাসপ্রিত বুমরাহ পাওয়ারপ্লে-তে কোন সুইং পাননি পিচ থেকে, ফলে স্বাচ্ছন্দ্যেই খেলেছেন কিউই ওপেনাররা। কিন্তু মোহাম্মদ শামি আক্রমণে আসতেই বদলে গিয়েছে দৃশ্যপট, তখন মনে হয়েছে চোখের ইশারায় বল ঘোরাচ্ছেন তিনি।
ব্যাটারদের আধিপত্যের দিনে শামি অন্যরকম জাদু দেখিয়েছেন। সিম মুভমেন্টে বোকা বানিয়ে কনওয়ে, রবীন্দ্রদের উইকেট তুলে নিয়েছেন; এরপর আবার কেন উইলিয়ামসনকে আউট করে ব্রেক থ্রু এনে দিয়েছিলেন। আর ম্যাচ শেষে তাঁর বোলিং ফিগার ছিল ৭-০-৫৭-৭! বিশ্বকাপের নক আউটে তো বটেই, ভারতের ওয়ানডে ইতিহাসেই এটি সেরা বোলিং পারফরম্যান্স।
নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক উইলিয়ামসন তাই অকপটে এই পেসারের প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন, ‘সে সম্ভবত অর্ধেক ম্যাচ খেলেই শীর্ষ উইকেট শিকারী হয়েছে। নতুন বলে দারুণ বোলিং করা দুজনের পরেই তৃতীয় বোলার হিসেবে দুর্দান্ত সে; নিঃসন্দেহে বিশ্বসেরাদের একজনও। এই টুর্নামেন্টে এত কম ম্যাচেই যে পরিমাণ উইকেট পেয়েছে তা সত্যিই অসাধারণ।’
শামির বিধ্বংসী রূপ দেখে প্রশ্ন জেগেছে প্রথম চার ম্যাচ কেন তাঁকে বেঞ্চে রেখেছিল টিম ম্যানেজম্যান্ট; উত্তর খুঁজে পাওয়া না গেলেও সেই সিদ্ধান্ত এই ডানহাতিকে আরো তাঁতিয়ে দিয়েছে এমনটাই জানিয়েছেন তাঁর তরুণ বয়সের কোচ বদরুদ্দীন সিদ্দিক।
বদরুদ্দীন বলেন, ‘সবথেকে বড় কথা, শামি সেই পরিস্থিতিও উপভোগ করছিল; সেই সাথে তাঁর যোগ্যতা প্রমাণের অপেক্ষায় ছিল। সে জানতো যে দল ভালো করছে, ম্যাচ জিতছে। কিন্তু তাঁর সুযোগ আসবেই, সামনের বড় ম্যাচগুলোতে তাঁর প্রয়োজন হবে।’
তিনি আরো যোগ করেন, ‘শামি ক্রমাগত একটি চ্যানেলে বোলিং করতে পারে, যা একজন ফাস্ট বোলারের জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় জিনিস। আপনি যখন এক জায়গায় বারবার বোলিং করেন তখন ব্যাটসম্যানরা বুঝতে পারেনা বল ঢুকবে নাকি বাইরে যাবে।’
চলতি বিশ্বকাপে মাত্র ছয় ম্যাচ খেলে ১০ এর কম বোলিং গড়ে ২৩ উইকেট শিকার করেছেন উত্তর প্রদেশের এই পেসার; এই ছয়ের ম্যাচের মধ্যে তিনবারই পেয়েছেন ফাইফারের স্বাদ। তাতেই টু্র্নামেন্টের সেরা বোলার বনে গিয়েছেন তিনি। শুভমান গিলও স্বীকার করেছেন নেটে এই বোলারকে মোকাবিলা করা বেশ কঠিন, প্রতিপক্ষ ব্যাটারদের অবস্থাটা তাই কল্পনা করে নেয়াই যায়।