টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের কিছু সময় আগে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) সভাপতি হিসেবে নিযুক্ত হন সাবেক ক্রিকেটার ও প্রধান নির্বাহী রমিজ রাজা। এরপর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল ঘোষণার ঘন্টাখানেকের মাঝেই প্রধান কোচ মিসবাহ উল হক ও বোলিং কোচ ওয়াকার ইউনুসের পদত্যাগে আলোচনার ঝড় উঠে।
বিশ্বকাপের আগে দলের অভ্যন্তরীণ পরিবেশ গরম হওয়াটা ক্রিকেটারদের জন্য যে বাড়তি চাপ তৈরি করবে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। এরপর অন্ত্যবর্তীকালীন হেড কোচ হিসেবে সাকলাইন মুশতাক ও বোলিং কোচ হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয় আব্দুল রাজ্জাককে।
নতুন বোর্ড প্রধান, নতুন কোচিং প্যানেল, বিশ্বকাপের আগে স্কোয়াডে পরিবর্তন – সব মিলিয়ে বিশ্বকাপের আগে পাকিস্তান দলকে নিয়ে অনেকের মনেই ছিলো শঙ্কা। তবে সব শঙ্কা আর সংশয় কাটিয়ে ইতোমধ্যেই টানা দুই জয়ে সেমির দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে দলটি।
এর মধ্যে শক্তিশালী ভারতকে ২৯ বছরের রেকর্ড গুড়িয়ে প্রথমবার বিশ্বমঞ্চে পরাজিত করার রেকর্ডও গড়েছে পাকিস্তান। পরের ম্যাচেই জয় পেলে অনেকটা নিশ্চিতভাবে সেমিতে পৌঁছে যাবে দলটি। বেশ অস্থিরতার মাঝেও কম সময়ের মাঝেই সব মিলিয়ে নিজেদের সেরাটা দিয়ে সব সমালোচনার জবাব দিয়েছেন বাবর আজম, মোহাম্মদ রিজওয়ানরা।
নতুন কোচদের অধীনে এখন পর্যন্ত চোখ ধাঁধাঁনো পারফরম্যান্স করলেও বিশ্বকাপের পরই বদলে যেতে পারে কোচিং প্যানেল। আর সেই ভাবনায় স্থায়ী প্রধান কোচ হিসেবে দেখা যেতে পারে ভারতীয় দলের সাবেক কোচ গ্যারি কার্স্টেনকে। ২০১১ সালে সাবেক এই প্রোটিয়া ওপেনারের অধীনেই বিশ্বকাপ জেতে ভারত।
এছাড়া পিটার মুর ও সাইমন ক্যাটিচও আছেন এই সংক্ষিপ্ত তালিকায়। সাবেক অজি ব্যাটার ক্যাটিচ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) কলকাতা নাইট রাইডার্স ও রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরুতে কোচিং করিয়েছেন। অপরদিকে, দুই মেয়াদে ইংল্যান্ড দলের কোচিং করিয়েছেন মুর।
বোর্ডের এক সূত্রে জানা যায় বোর্ড সভাপতি রমিজ রাজার পছন্দ বিদেশি কোচ। আর সেই তালিকায় সবার উপরেই আছেন গ্যারি কারস্টেন। বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত বেশ দুর্দান্ত পারফরম করা পাকিস্তানের অন্ত্যবর্তীকালীন কোচ হিসেবে নিয়োগ পাওয়া মুশতাক ও রাজ্জাকের মেয়াদ যে বিশ্বকাপ পর্যন্তই সেটা এখন অনেকটাই নিশ্চিত।
বিশ্বকাপের দল ঘোষণার পর সাবেক দুই কোচের পদত্যাগে অবশ্য কম সমালোচনা হয়নি। যদিও বিশ্বকাপের পরই কোচিং প্যানেলে পরিবর্তন আসবে সেটা নিয়েও চলছিলো বেশ আগ থেকেই আলোচনা। ২০১৯ বিশ্বকাপের পর দায়িত্ব নেওয়া মিসবাহ ও ওয়াকারের অধীনে পাকিস্তানের দলীয় পারফরম্যান্সে বেশ অবনতি লক্ষ্য করা যায়।
দল নির্বাচক নিয়েও বেশ সমালোচিত ছিলেন মিসবাহ। তবে শোনা যায় বিশ্বকাপের স্কোয়াড নির্বাচন ও বোর্ডের সাথে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণেই হুট করে পদত্যাগ করেন মিসবাহ ও ওয়াকার।