রঞ্জিতে গৌরবের ‘গৌরবগাঁথা’

নিজ রাজ্যদল মধ্যপ্রদেশ ছেড়ে এবারই প্রথম পুদুচেরির হয়ে খেলছেন। আর আগের আসরে বঞ্চিত থাকা এবারের আসরের প্রথম ম্যাচেই করলেন বাজিমাত। দুই ইনিংস মিলিয়ে গৌরবের এবারের রঞ্জি ট্রফি শুরু হয়েছে ১০ উইকেটের মাধ্যমে।

রঞ্জি ট্রফিতে দিল্লী-পুদুচেরির ম্যাচ। খাতা-কলমে পুদুচেরির থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী দল দিল্লী। তবে সেই দিল্লীকে একাই গুড়িয়ে দিয়েছেন পুদুচেরির পেসার গৌরব যাদব। পুদুচেরির বলাটা অবশ্য ভুল হলো। নিজ রাজ্যদল মধ্যপ্রদেশ ছেড়ে এবারই প্রথম পুদুচেরির হয়ে খেলছেন। আর আগের আসরে বঞ্চিত থাকা এবারের আসরের প্রথম ম্যাচেই করলেন বাজিমাত। দুই ইনিংস মিলিয়ে গৌরবের এবারের রঞ্জি ট্রফি শুরু হয়েছে ১০ উইকেটের মাধ্যমে। 

পুদুচেরির হয়ে খেলারই কথা ছিল না মধ্যপ্রদেশের ছেলে গৌরবের। কিন্তু মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন কোচ,  কলকাতা নাইট রাইডার্সের (কেকেআর) প্রধান কোচ চন্দ্রকান্ত পণ্ডিতের কারণে তিনি নিজের রাজ্য ছেড়ে পুদুচেরিতে খেলতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। দারুণ ছন্দে থাকার পরও বারবারই কোচের চক্ষুশূল হয়েছেন তিনি। ভালো খেলার পরও তাঁকে প্রথম একাদশে রাখেননি পণ্ডিত। সরাসরি বাদ দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন তিনি। অধিনায়ক ভেঙ্কটেশ আইয়ারের মধ্যস্ততায় অবশ্য শেষমেশ গত আসরে খেলতে পেরেছিলেন গৌরব। 

তবে পরের আসরে আর মধ্যপ্রদেশের হয়ে নিজের যাত্রাটা চলমান রাখেননি তিনি৷ এরপর রীতিমত একটা রূপকথাই লিখলেন গৌরব। পুদুচেরিতে যোগ দিলেন। অপেক্ষাকৃত শক্তিশালী দল ‘দিল্লীজয়ে’ হয়ে উঠলেন প্রধান সেনানী। দিল্লীর বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ২৬.৫ ওভারে ৪৯ রান দিয়ে সাত উইকেট নিয়েছিলেন গৌরব।

তার ঐ বোলিংয়েই প্রথম ইনিংসে মাত্র ১৪৮ রানে গুটিয়ে যায় দিল্লি। যেখান থেকে আর ফিরতে পারেননি ধুলরা। দ্বিতীয় ইনিংসে কিছুটা ছন্দে ফেরার আশা করলেও গৌরবরা সেটা সফল হতে দেননি। দ্বিতীয় ইনিংসে তিনটি উইকেট নেন তিনি। আর তাতেই ১৪৫ রানে অল-আউট হয়ে যায় দিল্লী। সবমিলিয়ে নয় উইকেটে ম্যাচটি জিতে নেয় পুদুচেরি। 

অথচ গৌরবের সেই দুর্দান্ত বোলিংয়ের সুবিধা পেতে পারত মধ্যপ্রদেশ। আর সেটা কেন পায়নি, কারণটা অজানা। ২০১৯-২০ মৌসুমে বিজয় হাজারে ট্রফিতে দেশের সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহক হয়েছিলেন। মাত্র ৯ ম্যাচে নিয়েছিলেন ২৩টি উইকেট। মধ্যপ্রদেশ যে বছর রঞ্জি জিতেছিল, সেই বছরও ভালো ছন্দে ছিলেন। কিন্তু পণ্ডিতের স্বেচ্ছাচারিতায় পুদুচেরিতে যোগ দিতে হয় গৌরবকে।

তবে নিজের রাজ্য ছেড়ে ভুল করেননি ৩২ বছর বয়সী এ পেসার। নতুন দল পুদুচেরির হয়ে নিজেকে ঠিকই প্রমাণ করছেন তিনি। খুব বড় দলে হয়তো সুযোগ পাচ্ছেন না।তবে ছোট দলের বড় তারকা হয়ে উঠছেন তিনি। পেসার হিসেবে এমন উত্থানের গল্প লিখতে পারে আর ক’জনই! আগের বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন। এবার দেখার পালা, পুদুচেরির হয়ে গৌরবের এই গৌরবগাঁথা আর কতদূর গড়ায়।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...