অনবদ্য ও অবিস্মরণীয় – রোহিত ও জয়সওয়ালের জুটি কাব্য

টেস্টে কমপক্ষে ৫০ রানের জুটিতে ওভার প্রতি এত বেশি রান এর আগে আর কেউ তোলেননি। ২৩ বলে ৫৫ রান তুলেছেন এই দুই ব্যাটার। মানে ওভারপ্রতি ১৪.৩৪ রান। এটাই ক্রিকেটের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।

রোহিত, আপনি কেন টি-টোয়েন্টি থেকে অবসর নিয়ে ফেললেন? – ধারাভাষ্যে বলছিলেন মুরালি কার্তিক। সাবেক এই ক্রিকেটার মোটেও ভুল বলেননি। টেস্ট ক্রিকেটে এসেও এভাবে ব্যাটিং করতে পারাটা কেবল ওই এক রোহিত শর্মার পক্ষেই সম্ভব।

ওপেনিং জুটি ভারতের জন্য কেবল স্থায়ী হল মোটে তিন ওভার পাঁচ বল। সেখানে সর্বোচ্চ কত রান তোলা সম্ভব? ভারতের দুই ব্যাটার রোহিত শর্মা আর যশস্বী জয়সওয়াল মিলে তুললেন ৫৫ রান। অবিস্মরণীয় আর অভাবনীয় – কোনো শব্দ দিয়েই কানপুরের এই ব্যাটিং ঝড়কে ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়।

বিশেষ করে প্রথম তিনটা ওভারে বাংলাদেশের পেসারদের ওপর দিয়ে রীতিমত রোলার কোস্টারই চালিয়ে গেছেন এই দুই ভারতীয় ব্যাটার। একজন নবীন, আরেকজন প্রবীন – কি অদ্ভুত এক মিশেলে কানপুরের দুপুরে লেখা হল স্ট্রোকের ফুলঝুড়ির গল্প।

টেস্টে কমপক্ষে ৫০ রানের জুটিতে ওভার প্রতি এত বেশি রান এর আগে আর কেউ তোলেননি। ২৩ বলে ৫৫ রান তুলেছেন এই দুই ব্যাটার। মানে ওভারপ্রতি ১৪.৩৪ রান। এটাই ক্রিকেটের ইতিহাসে সর্বোচ্চ।

দ্বিতীয় স্থানে আছেন দুই বেন – স্টোকস আর ডাকেন। তারা চলতি বছরই এজবাস্টনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে করেছিলেন ৪৪ বলে অপরাজিত ৮৭ রানের জুটি। সেখানে ওভার প্রতি রান রেট ছিল ১১.৮৬। এর আগে ১১.৫৫ রান রেটে ২৭ বলে ৫২ রানের জুটি গড়েছিলেন নিউজিল্যান্ডের লেজের দুুই ব্যাটার নিল ওয়াগনার ও ট্রেন্ট বোল্ট, ২০১৩ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে লিডসে।

এবারের গল্পের শুরুটা হয় জয়সওয়ালের হাত ধরে। প্রথম ওভারেই তিনি টানা তিন চার হাকান হাসান মাহমুদের বলে। ওভার থেকে আসে ১২ রান। এরপর দ্বিতীয় ওভারে অনেকদিন বাদে টেস্ট খেলতে নামা খালেদ আহমেদকে দু’টো ছক্কা উপহার দেন রোহিত, ওভারের শেষ বলে আরেকটা চার মারেন জয়সওয়াল।

দুই ওভার শেষে রান ২৯, এক রান আসে বাই থেকে। তৃতীয় ওভারে দু’টি করে চার ও ছক্কা হাকান রোহিত-জয়সওয়াল। সাথে একটা নো বল আর সিঙ্গেল – মোট ২২ রান। তিন ওভার শেষৈ ভারতের রান ৫১, বিশ্বাস করুন এটা কোনো টি-টোয়েন্টি ম্যাচ নয়।

চতুর্থ ওভারের শুরুটা চার দিয়ে শুরু করা রোহিত আউট হয়ে যান পঞ্চম বলেই, মেহেদী হাসান মিরাজের বলে বোল্ড হয়ে। ১১ বলে ২৩ রান করে সাজঘরে ফিরেন রোহিত। যদিও, সময় মত রিভিউ নিতে পারলে তিনি তৃতীয় ওভারের প্রথম বলেই হাসান মাহমুদের বলে আউট হতে পারতেন।

কিন্তু, মিরাজের আত্মবিশ্বাসে এবার ভরসা রাখেননি অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। তৃতীয় ওভারের সেই ঝড়টা বরং আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দেয় ভারতের!

লেখক পরিচিতি

সম্পাদক

Share via
Copy link