ভারতের সর্বকালের সেরা বাঁ-হাতি একাদশ

ক্রিকেটে বরাবরই বাঁ-হাতিদের আলাদা গুরুত্ব থাকে। সেই থেকে ভাবলাম, বানিয়ে ফেলি ভারতের সর্বকালের সেরা বাঁ-হাতি টেস্ট একাদশ। এই ধরণের লেখা বহুদিন লেখা হয় না। কাজেই নেট প্র্যাকটিস টা একটু ঝালিয়ে নেওয়া যাক। তবে আগেই বলে রাখি, অনেক এমন খেলোয়াড় রয়েছেন যারা বাঁ-হাতে ব্যাট, ডান হাতে বল অথবা উল্টোটা করতেন বা করেন। তাঁদেরকেও এই দলে জায়গা দেওয়া হয়েছে এবং যুক্তিও দেবার চেষ্টা করলাম। বাকিটা পাঠক বুঝবেন।

  • ওপেনার: নরি কন্ট্রাক্টার ও গৌতম গম্ভীর

এই দুজন ছাড়া ভারতে বিশ্বমানের বাঁ-হাতি ওপেনার এসেছেন বলে আমার জানা নেই। শিখর ধাওয়ান, রামন ইত্যাদি অনেকটাই পিছিয়ে। কন্ট্রাক্টারের তখনকার যুগে ৩১ গড় আজকের যুগে ৪০ এর কম হতো না বলেই মনে হয়।

চার্লি গ্রিফিথ নামক ত্রাস না থাকলে এবং হেলমেট নামক বালিশ থাকলে বোধহয় আরো ভালো দেখাতো তাঁর পরিসংখ্যান। আর গম্ভীর ২০১১ পরবর্তী টেস্টে বেশ ধেড়িয়েছেন, তবে সেরা সময়ের গম্ভীর নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকায় গিয়ে দারুন সব ইনিংস খেলেছেন।

  • তিন নম্বর: সৌরভ গাঙ্গুলি

ভারতের সর্বকালের সেরা বাঁ-হাতি। তর্কাতীত ভাবে। এই নির্বাচন নিয়ে আর বাক্য ব্যায় না করাই ভালো। শুধু বলবো, ভদ্রলোক তিন নম্বরে আরেকটু নিয়মিত ব্যাট করার সুযোগ পেলে ৪২ ব্যাটিং গড় টা অন্তত ৪৫-৪৬ হতে পারতো। সাথে আরো খান ছয়েক সেঞ্চুরি।

  • চার নম্বর: অজিত ওয়াদেকার

১৯৭১ সালে জোড়া সিরিজজয়ী অধিনায়ক ব্যাটসম্যান হিসাবেও যথেষ্ট ভালো ছিলেন। কাম্বলি-সৌরভদের আগের যুগে ভারতের সেরা বাঁ-হাতি ব্যাটসম্যানের মশাল ইনিই বহন করেছেন।

  • পাঁচ নম্বর: বিনোদ কাম্বলি

উৎশৃঙ্খল জীবনযাপন কিভাবে এক চরম প্রতিভার অপমৃত্যু ঘটাতে পারে, তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ বোধহয় কাম্বলি। তবুও তাঁর সীমিত ক্রিকেট জীবনে যা করেছেন, তা কেবল আর চার জন করেছেন। নামগুলো হলো-কোহলি, সচিন, গাভাস্কার ও দ্রাবিড়। কীর্তিটি হলো ৫০ এর ওপর টেস্ট ব্যাটিং গড়। যুবরাজকে টেস্ট ম্যাচের জন্য অন্তত আমি কাম্বলির আগে নিতে পারছি না। তবে, সীমিত ওভার হলে শুধু ভিন্ন ব্যাপার।

  • উইকেট রক্ষক: ঋষভ পান্ত

ভারতের হয়ে যারা উইকেট কিপিং করেছেন, তাঁদের মধ্যে মাত্র দুজন বাঁ-হাতি। পার্থিব প্যাটেল ও ঋষভ পান্থ। কাজেই এখানে তর্কের অবকাশ কম। আর বিদেশের মাঠে বিগত ২০ বছরে ভারতের সেরা কিপার ব্যাটও ইনি। কাজেই বাকি মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন।

  • অলরাউন্ডার: রবীন্দ্র জাদেজা

সেলিম দুরানি আসতে পারেন ওনার জায়গায়। তবে পরিসংখ্যানগত দিক থেকে জাদেজা বেশ এগিয়ে। দুরানি সাহেবের রোমান্স উপেক্ষা করে তাই জাদেজাকে নিতে হচ্ছে। তবে তাঁর চেয়েও যিনি যোগ্য, তাঁকে কেন অলরাউন্ডার হিসাবে নিলাম না সেটায় আসছি।

  • স্পিনার: ভিনু মানকড় ও বিষান সিং বেদি

বেদির নির্বাচন প্রশ্নাতীত। ভারতে ওনার চেয়ে বড় বাঁ-হাতি স্পিনার কোনোদিন ছিল না। মানকড় অলরাউন্ডার হিসাবে দলে আসতেই পারতেন। তবে যেহেতু ব্যাটিং তিনি ডানহাতে করতেন, কাজেই অলরাউন্ডারের দায়িত্ব জাদেজাই নিন। মানকড় বাঁ-হাতি স্পিনার হিসেবেও এতো উঁচু দরের যে শুধু তার জোরেই এই দলে তাঁর জায়গা হয়ে যায়।

  • পেসার: জহির খান ও ইরফান পাঠান

সেরা সময়ের ইরফান বোলার হিসেবে অনবদ্য। আমার চোখে টেস্ট বোলার নেহরার চেয়ে একটু এগিয়ে। সালমান বাটের মতো ব্যাটসম্যানকে ২০০৬ এর পাকিস্তান সফরে বলে বলে মুরগি করেছেন।

ব্যাটিংয়েও গভীরতা বাড়বে ইরফান এলে। আর জাহির তো ভারতের সর্বকালের সেরা টেস্ট দলেই আসবেন। কাজেই এই দলে তাঁর নির্বাচন বোধহয় কারুর ভ্রু কুঞ্চনের কারণ হবে না।

অধিনায়ক হিসাবে সৌরভ ছাড়া আর কারোর নাম মাথায় আসছে না। দলটি যদিও স্পিন নির্ভর, তবে মানকড় ও বেদির ওপর ভরসা রয়েছে। বাকিটা পাঠক বলবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link