অথচ, ম্যাচটায় থাকারই কথা নয় হেলসের!

অ্যালেক্সে হেলসের আর কখনো ইংল্যান্ডের জাতীয় দলের জার্জি গায়ে উঠবে এমন বাজি ধরার লোকের সংখ্যাও হয়ত খুবই কম ছিল। ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের (ইসিবি) বাধ্যতামূলক ডোপ টেস্টে দুবারের দুবারই ফেইল করলে কেন্দ্রীয় চুক্তি সহ আন্তর্জাতিক দল থেকে ছাটাই করা হয় হেলসকে। এমনকি এই বিশ্বকাপে খেলবেন, সেমিফাইনালে দলকে একা হাতে জিতিয়ে ফাইনালে তুলবেন এমনটা কি হেলস ও কখনো ভেবেছিলেন? স্বপ্নেও?

২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপের আগে সেই যে দল থেকে বাদ পরলেন, জাতীয় দলে ফেরার আশা হয়তো হেলস নিজেও করেন নি৷ অন্তত এউইন মরগান অধিনায়ক থাকাকালীন তো করেনই নি। কিন্তু ঐ যে কথা আছে না, কারও পৌষ মাস তো কারো সর্বনাশ। হেলসের ক্ষেত্রেই কথাটা একদম মানানসই।  একদিকে ইয়ন মরগান ও অবসর নিলেন আরেকদিকে বিশ্বকাপের ঠিক আগে আগে বেয়ারস্টো পরলেন ইনজুরিতে। ব্যস, দুয়ার খুলে গেল হেলসের।

কেনই বা খুলবে না। জাতীয় দলে ফেরার জন্য কি করেননি তিনি। অলিখিত এই নির্বাসনে থাকাকালীন বিশ্বের সব নামী দামী টি টোয়েন্টি লিগে খেলেছেন হেলস। বিগ ব্যাশ থেকে শুরু করে, পিএসএল, সিপিএল এমনকি নিজ দেশের ন্যাটওয়েট ব্লাস্ট টি টোয়েন্টি, দ্য হান্ড্রেড। সব টুর্নামেন্টেরই সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন হেলস। সবসময়ই থেকেছেন সেরা রান সংগ্রাহকদের তালিকায়।

আজ ভারতের বিপক্ষে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ম্যাচ জয়ের পর ম্যান অব দ্যা ম্যাচের পুরষ্কার নিতে এসে সেসব সময়ের কথায় যেন মনে করিয়ে দিলেন হেলস। এটাই তার খেলা সেরা ইনিংস কিনা উপস্থাপকের  এমন প্রশ্নের জবাবে হেলস বলেন, ‘সেরা না হলেও,সেই তালিকাতেই থাকবে এটা।’

কারণ হিসেবে হেলস বলেন, ‘এত এত দর্শকের সামনে, ভারতের মতন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে অবশ্যই ইনিংস টাকে আরওই স্পেশাল করে তোলে। তবে আমি খুশি ভাল খেলতে পেরে।আমি কখনোই ভাবিনি যে ইংল্যান্ডের হয়ে আমি আবার কোনো বিশ্বকাপ খেলব। সেমিফাইনালের মত মঞ্চে এমন ইনিংস খেলে দলকে ফাইনালে তুলতে পেরে খুবই ভাল লাগছে।’

অস্ট্রেলিয়ান কন্ডিশনে খেলাটাকে উপভোগ করছেন কিনা এই প্রশ্নের জবাবে হেলস বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়াতে আমি বছরের বেশিরভাগ সময়টাই থাকি। আর সেজন্য অস্ট্রেলিয়ার কন্ডিশন, মাঠ,পিচ সবই আমার অন্যান্য জায়গার চেয়ে বেশি চেনা।’

কথার শেষে অধিনায়ক জস বাটলারের প্রশংসা করতে ভুলে যান নি,এই ওপেনার ব্যাটার।  তিনি বলেন, ‘জশ এক কথায় অসাধারণ।’

অপরদিকে ইংলিশ অধিনায়কের কন্ঠে স্তুতি ঝরলো তার দলের খেলোয়াড়দের সম্পর্কেই। পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে, হেলস থেকে শুরু করে,আদিল রশিদ, ক্রিস জর্ডান প্রত্যেকের আলাদা আলাদা করে প্রশংসা করেন বাটলার। বলেন ‘আয়ারল্যান্ড এর সাথে হারের পরে, দলের প্রত্যেকটা খেলোয়াড় পরের সব কটি ম্যাচে যেভাবে নিজেদের সেরাটা দিয়েছে, এটা আসলে পুরো দলের ব্যক্তিত্বই দেখায় যে তারা জয়ের জন্য কতটা মরিয়া, ক্ষুধার্ত।’

বাটলারের কন্ঠে বিশেষ করে আদিল রশিদের স্পেলের কথা ফুটে ওঠে, ‘এরকম হাই ভোল্টেজ ম্যাচে, দারুণ বল করেছে রশিদ।’ অপরদিকে নিয়মিত খেলার ভেতরে না থেকেও, হুট করে সেমিফাইনালের মত ম্যাচে এসে, ডেথ ওভারে টানা তিন ওভার বল করার জন্য ক্রিস জর্ডানকে ধন্যবাদ দেন অধিনায়ক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link