সবশেষ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজে সিডনি টেস্টে ভারতের দূর্দান্ত এক ড্র দেখেছিলো ক্রিকেট বিশ্ব। প্রায় হেরে যাওয়া ম্যাচে ভারতকে উদ্ধার করতে সেদিন রবিচন্দন অশ্বিন ছাড়া যেই মানুষটির সবচেয়ে বড় অবদান ছিলো তিনি হনুমা বিহারি।
প্যাট কামিন্স, স্টার্ক আর হ্যাজেলউডের গতি আর বাউন্সের সামনে বুক চিতিয়ে লড়াই করে ড্র ছিনিয়ে নিয়েছিলেন তিনি।
সেই হনুমা বিহারি এবারের আসরের ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) সুযোগ না পেয়ে ওয়ারউইকশায়ারের হয়ে তিন ম্যাচ খেলেছিলেন কাউন্টিতে। আর সেই অভিজ্ঞতা থেকেই আসন্ন টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালকে ভারতের জন্য চ্যালেঞ্জ হিসেবেই দেখছেন তিনি। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেলা হবে ডিউক বলে। আর ইংলিশ কন্ডিশনে ডিউক বল ভারতের জন্য বেশ সমস্যা করবে বলেই তিনি মনে করেন।
বিহারি বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়াতে খেলার সময় একটা পর্যায়ে কোকাবুরা বল কিছুটা নরম হয়েছিলো। কিন্তু ডিউক বল সবসময়ই এক রকমের থাকে। ডিউক বলে সবসময়ই বোলারদের জন্য বিশেষ কিছু থাকে, এই ব্যাপারটাই চ্যালেঞ্জের।’
এরপর তিনি তার কাউন্টি অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে যেয়ে বলেন কিভাবে ইংল্যান্ডের মাটিতে হঠাৎ করেই আবহাওয়ার পরিবর্তন হয়! আর উইকেটে হঠাৎ করেই মুভমেন্টের ব্যাপারেও তিনি জানান, ‘যখন আমি এপ্রিলে ইংল্যান্ডে খেলতে এসেছিলাম, তখন এখানে বেশ ঠান্ডা ছিলো। যদি আপনি সবকিছুতে প্রস্তুত থাকে তবুও অবাক হবেন আবহাওয়ার পরিবর্তন দেখে। যেমন আমি এসেক্সের বিপক্ষে যখন ৩০ রানে আউট হই! আমি ভেবেছিলাম উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য বেশ উপযুক্ত হবে, কিন্তু ডিউক বলের অতিরিক্ত মুভমেন্টের কারণে বোলিংয়ে সুবিধে হচ্ছিলো।’
নিজের আউটের বর্ণনা করে হনুমা বলছিলেন, ‘ডান হাতি পেসার জেমি পোর্টাল বল করছিলো। আমি বলের লাইনে গিয়েই খেলেছিলাম এবং এটা খুব সাধারণ ডেলিভারি হওয়া সত্ত্বেও আমাকে অবাক করে! কারণে হটাৎ করেই বল মুভমেন্ট হওয়া শুরু হয় আর বল মিডল স্টাম্প থেকে অফ স্টাম্পে স্যুইং করে। আমি অবাক হয়েছিলাম কারণ বিগত কয়েক ওভারে উইকেটে বোলিংয়ে কোনো মুভমেন্টই হচ্ছিলো না, কিন্তু হঠাৎ করেই বল মুভ করে অফ স্টাম্পে এসে ব্যাটে লেগে ক্যাচ উঠে যায়।’
ইংল্যান্ডের কন্ডিশনে উইকেটে গার্ড নেওয়ার ব্যাপারেও বেশ সতর্ক থাকতে বলেন এই ব্যাটসম্যান। তিনি বলেন, ‘অস্ট্রেলিয়াতে লেগ স্টাম্পের বেশ সামনে গার্ড নিলেও সমস্যা হয়নি, কারণ উইকেটে খুব বেশি মুভমেন্ট ছিলো না। যার কারণে আপনি বলের লাইনে সহজেই খেলতে পারবেন। কিন্তু ইংল্যান্ডে আপনাকে অফ স্টাম্পে বেশি গার্ড দিতে হবে কারণ বল প্রচুর মুভমেন্ট করে। আমি মিডল স্টাম্পে গার্ড দিয়ে শুরু করেছিলাম। একই সময়ে আপনাকে মনে রাখতে হবে যদি বলটা স্টাম্প লাইনে থাকে তাহলে আপনাকে সোজা ব্যাটে খেলতে হবে।’
এছাড়াও ইংল্যান্ডের আবহাওয়া বরাবরই বেশ চ্যালেঞ্জিং। সে ব্যাপারেও বিহারি জানিয়েছেন, ‘অবশ্যই এখানে অনেক চ্যালেঞ্জ আছে৷ এখানে আবহাওয়া একটা বড় ভূমিকা পালন করে খেলায়। যখন এখানে রোদ থাকে ব্যাট করতে সুবিধা হয়, কিন্তু মেঘ থাকলেই সারাদিন বল মুভ করে। কাউন্টিতে আমি এই চ্যালেঞ্জটার মুখোমুখি হয়েছিলাম। কারণ সেখানে বেশ ঠান্ডা ছিলো এবং উইকেটে বল অনেক মুভমেন্ট করছিলো।’
কাউন্টিতে খেলা তিন ম্যাচের প্রথম ম্যাচে স্টুয়ার্ট ব্রডের বলে শূন্য রানে আউট হন বিহারি। ওই বল নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি ভেবেছিলাম ড্রাইভ করার জন্য এই বলটা যথেষ্ট ভালো ছিলো। আবারও বলছি, ইংল্যান্ডে আপনাকে খুব ভেবে চিন্তেই শট সিলেকশন করতে হবে। ভারতে আপনি চাইলে পুশ করলেন কিংবা ড্রাইভ করলেন কিন্তু সেখানে এটা বেশ কঠিন। যদি আমি সেখানে ওই বলটা দ্বিতীয়বার খেলার সুযোগ পেতাম তাহলে আমি বলটা যত দেরিতে খেলা যায় সেটার চেষ্টা করতাম।’