হাসতে ভুলে যাওয়া সেই হার্দিক পান্ডিয়া মাঠে কিংবা মাঠের বাইরে হাসির পাত্রই বনে গিয়েছিলেন। কিন্তু, মঞ্চটা যখন বিশ্বকাপ, তখন ভারতের প্রথম ম্যাচেই তিনি বুঝিয়ে দিলেন হাসির পাত্র নয়, বরং ভারতীয় ভক্তদের মুখে হাসি ফোঁটাতে জানেন তিনি।
দুয়োধ্বনি শোনাটা যেন তাঁর দৈনন্দিন জীবনেরই অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। গেল ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) এমন কোনো দিন নেই যেদিন তিনি কোনো রকম গালি হজম করেননি।
অধিনায়কত্ব ইস্যুতে গণমাধ্যম কিংবা স্যোশাল মিডিয়া অথবা, দর্শক গ্যালারি – সব জায়গাতেই যেন ভারতের জাতীয় শত্রুতে পরিণত হয়েছিলেন হার্দিক পান্ডিয়া। মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স দলে রোহিত শর্মাকে সরিয়ে অধিনায়ক করা হয়।
দলের পারফরম্যান্স ছিল যাচ্ছেতাই। ফলে, দর্শকদের দুয়ো শোনা, ‘ছাপড়ি’ গালি হজম করা ছিল হার্দিক পান্ডিয়ার রোজকার রুটিন। আইপিএল শেষ না হতেই নতুন আপদ।
ঝড় ওঠে তাঁর ব্যক্তিগত জীবনে। বাতাসে গুঞ্জন সার্বিয়ান মডেল নাতাশা স্ট্যানকোভিচের সাথে তাঁর সাজানো সুখের সংসার ভাঙতে চলেছে। এমনকি ভারতীয় দলে তাঁর জায়গা নিয়েও ওঠে প্রশ্ন।
রিঙ্কু সিংকে কেন দলের বাইরে রেখে কেন হার্দিককে কেন নেওয়া হল দলে, সেই নিয়েও আগুন ঝরে কথায় কথায়! সেসব সমালোচনার জবাব দেওয়ার জন্য মাঠই ছিল পান্ডিয়ার সবচেয়ে উপযুক্ত জায়গা।
সেটা পারলেন তিনি। পারলেন বিশ্বকাপে একদম নিজের প্রথম দিনেই। নিজের প্রথম ওভারেই বোল্ড করেন আইরিশ উইকেটরক্ষক লোরকান টাকারকে।
নিজের দ্বিতীয় ওভারের শেষ ডেলিভারি আর তৃতীয় ওভারের পঞ্চম ডেলিভারিতে উইকেট পেয়ে তিনি হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও জাগিয়ে তুলেছিলেন। সেই সম্ভাবনা বাস্তবে রূপ না নিলেও, সেটা আয়ারল্যান্ডের ব্যাটিংয়ের মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়ার জন্য ছিল যথেষ্ট।
তৃতীয় ওভারটা ছিল উইকেট মেইডেন। তারপরও ভারতের অন্যতম খরুচে বোলার পান্ডিয়াই। কারণ, চতুর্থ ওভারে তিনি হজম করেন ১৪ রান। তবে, এর আগে যা করেছেন, তাতেই ভারতীয় জনতার আস্থা ফিরেছে পান্ডিয়ায়।