টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে হারটা বিরাট এক নাড়া দিয়েছে পুরো ভারতীয় ক্রিকেটে। দশ বছর ধরে কোনো আইসিসি শিরোপা না জেতা ভারতকে তাই নতুন করে ভাবতেই হচ্ছে।
গুঞ্জন ছিল টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে হারের জন্য অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হতে পারে রোহিত শর্মাকে। কিন্তু দরজায় যখন কড়া নাড়ছে বিশ্বকাপ, তখন অধিনায়কত্ব বদলের মত এমন বড় সিদ্ধান্ত নেবার ঝুঁকি নিতে চায় না ভারত।
তবে বিশ্বকাপের পরপর ভারতের অধিনায়কত্বে আসতে পারে বদল। ৩৬ বছর বয়সী রোহিতকে বিশ্বকাপের পরপরই সরিয়ে দেয়া হতে পারে অধিনায়ক রোহিতকে। এমনকি অনেক অভিজ্ঞ খেলোয়াড়কে সরিয়ে নতুন করে ঢেলে সাজানো হতে পারে ভারতকে।
তাই ভারতীয় ক্রিকেটে এখন বড় প্রশ্ন, রোহিতের পর কে হচ্ছেন ভারতের অধিনায়ক। এমনিতে প্রতিভার অভাব নেই ভারতে। কিন্তু, রোহিত-কোহলিদের উত্তরসূরী হিসেবে কাউকে এখনো গড়ে তুলতে পারেনি ভারত। তবে ভারতের টি-টোয়েন্টি দলের বর্তমান অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়াকেই অধিনায়ক হিসেবে যোগ্য মনে করেন রবি শাস্ত্রী।
এর আগে ঘরোয়া কিংবা বয়স ভিত্তিক ক্রিকেটে খুব বেশি অধিনায়কত্ব করেননি পান্ডিয়া। তবে ২০২২ সালে আইপিএলে নতুন ফ্রাঞ্চাইজি গুজরাট টাইটান্স খেলে একটি মাস্টার স্ট্রোক। অধিনায়ক করে হার্দিককে।
এরপরই অধিনায়ক হিসেবে হার্দিকের উত্থান দেখে বিশ্ব। প্রথমবার দায়িত্ব নিয়েই নতুন ফ্রাঞ্চাইজি গুজরাটকে শিরোপা এনে দেন এই অলরাউন্ডার।
গুজরাটের হয়ে এমন সাফল্যের পর ভারতের টি-টোয়েন্টি দলেও অধিনায়ক করা হয় হার্দিককে। শুধু মাঠ নয়, মাঠের বাইরেও নিজের অধিনায়কত্বে সবাইকে মুগ্ধ করে আসছেন হার্দিক।
রোহিতের অনুপস্থিতিতে প্রায়ই নেতৃত্ব দিচ্ছেন ভারতকে। টি-টোয়েন্টি দল নতুন করে গড়ে তোলার গুরুভার দেয়া হয়েছে অধিনায়ক হার্দিকের হাতেই।
তাই সাদা বলের ক্রিকেটে ভারতের ভবিষ্যত নেতা হিসেবে আপাতত সবচেয়ে এগিয়ে আছেন এই অলরাউন্ডারই। তবে দীর্ঘ ইনজুরি কাটিয়ে ফেরার পর এখনো টেস্ট ক্রিকেটে ফেরা হয়নি তাঁর।
তাই হার্দিকের ফিটনেসের ওপর নির্ভর করছে তিনি টেস্ট ক্রিকেটে আর ফিরবেন কিনা। আর টেস্ট ক্রিকেটে ফিরে আসলে তিন ফরম্যাটের অধিনায়ক হিসেবেই দেখা যেতে পারে তাকে।
তবে ভারতের সাবেক খেলোয়াড় ও কোচ রবি শাস্ত্রী মনে করেন শুধু সাদা বলেই মনযোগ দেয়া উচিত এই অলরাউন্ডারের এবং এই দুই ফরম্যাটে ভবিষ্যতের অধিনায়ক হিসেবে তাকেই দেখেন তিনি, ‘তাঁর শরীর টেস্ট ক্রিকেটের সাথে মানিয়ে নিতে পারে না। এই বিষয়টি নিশ্চিত করা দরকার যে, তাঁর শরীর যদি যথেষ্ট ফিট থাকে তাহলে সাদা বলের অধিনায়কত্বের দায়িত্বটা তাঁরই নেয়া উচিত।’
শাস্ত্রী মনে করেন ভারতীয় ক্রিকেটে সিনিয়র ক্রিকেটারদের পাশাপাশি তরুণদেরও বিশ্বমমঞ্চে পারফর্ম করার জন্য প্রস্তুত করে তোলা উচিত। তিনি বলেন, ‘আইপিএলের কারণে আমরা অনেক মানসম্পন্ন সাদা বলের ক্রিকেটার পাচ্ছি। তবে কারোই এটা ভাবা উচিত নয় যে এর মাধ্যমেই তারা টেস্ট ক্রিকেটেও অটো চয়েজ হয়ে যাবে। আমার মতে লাল বলে তাদের পরিসংখ্যানও দেখা উচিত। আমি সেই জায়গায় থাকলে নির্বাচকদের সাথে বসে লাল বলের ক্রিকেটে কারা পারফর্ম করছে, কাদের বিরুদ্ধে করছে, তাদের শক্তির জায়গা ও টেম্পারমেন্ট নিয়ে পর্যালোচনা করতাম।’