হাসানই হাসালেন

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) একটা আসর শেষ হয়ে গেল। অথচ, তাঁকে নিয়ে কিছু বলাই হল না। গোটা আসরে ১৭ টি উইকেট নিয়েছেন, যুগ্মভাবে আসরের সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহক। অথচ, তাঁকে যেন সবাই বেমালুম ভুলে গেল।

বিপিএল শেষ হতে না হতেই ইংল্যান্ড এল। ওয়ানডে সিরিজ শুরু হয়ে শেষও হয়ে গেল। একটা ম্যাচেও সুযোগ পেলেন না হাসান মাহমুদ। এবারও সবাই চুপ।

চুপ ছিলেন হাসান মাহমুদ নিজেও। তবে, বুকের মধ্যে একটা আগুন তিনি ঠিকই পুষে রেখেছিলেন। তাই তো, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে যখন একাদশে ফিরলেন – তখন নিজেকে উজাড় করে দিলেন। সবাইকে যেন বাধ্য করলেন নিজেকে আলোচনায় রাখতে।

চার ওভারে বোলিং করে ২৬ রান দিয়ে দুই উইকেট নিয়েছেন এই পেসার। সাদা চোখে এমন বোলিং ফিগারকে খুব আহামরি কিছু ভাবার সুযোগ নেই। তবে, একটু ভেতরে ডুব দিলে বের হয়ে আসবে অবিশ্বাস্য রত্ন।

তখন দুই ওপেনার জশ বাটলার আর ফিল সল্টের দাপটে চালকের আসনেই ছিল দুই ফরম্যাটের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন দল ইংল্যান্ড। ৮০ রানের উদ্বোধনী জুটি শেষে সাজঘরে ফেরেন ফিল সল্ট। ঠিক তখনই একাদশ-তম ওভারে আক্রমণে আসেন হাসান।

প্রথম ওভারে হজম করেন মাত্র চারটি রান। বিপরীতে তখন ব্যাট করছিলেন জশ বাটলার ও ডেভিড মালান। এর পরের ওভারটা অবশ্য বেশ বাজেই কাটে হাসানের। সেখানে বাটলার তাঁকে পর পর দু’টো ছক্কা হাঁকান। রান আসে ১৭ টি। প্রথম স্পেলে দুই ওভারে ২১ রান।

হাসানের মূল কারিশমাটা দেখা যায় দ্বিতীয় স্পেলে। সেখানে ১৭ তম ওভারটা যেন হয়ে রইল টি-টোয়েন্টির ডেথ ওভার বোলিংয়ের আদর্শ এক টেমপ্লেট। সেখানে প্রথম ডেলিভারিতেই বিপজ্জনক জশ বাটলারকে ফিরিয়ে দেন। পরের পাঁচটা ডেলিভারিও ভীষণ নিখুঁত। শেষ ডেলিভারিতে রান না হলে মেইডেন উইকেটই আদায় করে নিতে পারতেন।

১৯ তম ওভারেও তিনি মিতব্যয়ী। চার রান, আর একটি উইকেট। মাঝের ১৮ তম ওভারটাতে দারুণ বোলিং করেন মুস্তাফিজুর রহমান। বলা যায় এই তিনটা ওভারই বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরায়।

একটা সময় দুই উইকেট হারিয়ে ইংল্যান্ডের স্কোর ছিল ১৩৫। সেখানে পরের ২১ রান তুলতে আরও চারটা উইকেট হারাতে হয় ইংল্যান্ডকে। আর খেলতে হয় ২৫ টা ডেলিভারি। এই ২৫ টা ডেলিভারির মধ্যে হাসান ১২ টা ডেলিভারিতে রান দেন মাত্র পাঁচটি।

যে অবস্থায় ইংল্যান্ড ছিল, সেখান থেকে ১৮০ না হলেও ১৭০-১৭৫ রান করা খুবই সম্ভব ছিল। সেটা হতে দেয়নি ওই হাসান মাহমুদের বোলিং।

লেখক পরিচিতি

সম্পাদক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link