আফিফকে আর দলে দেখতে চান না হাতুরুসিংহে!

‘পারফরম্যান্সের কারণেই আফিফ বাদ পড়েছেন, চেহারার কারণে নয়’ – দল থেকে আফিফ হোসেন ধ্রুব’র বাদ পড়া প্রসঙ্গে এমনটাই জানিয়েছিলেন প্রধান কোচ চান্দিহা হাতুরুসিংহে। তখনই বুঝা গিয়েছিল, আফিফকে নিয়ে বেশ কড়া অবস্থানে বাংলাদেশের লঙ্কান এ কোচ। হাতুরু এখনও সেই অবস্থানেই অটল রয়েছেন। এমনকি এটাও শোনা যাচ্ছে, বাঁহাতি এ ব্যাটারকে একটা দীর্ঘমেয়াদ পর্যন্ত দলের বাইরে দেখতে চাচ্ছেন চান্দিকা হাতুরুসিংহে।

২০১৯ সাল থেকে বাংলাদেশের হয়ে রেকর্ড টানা ৬১ টা টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন আফিফ হোসেন। কিন্তু, এরপরই হঠাৎ ছন্দপতন। নিজের ব্যাটিং নিয়ে ভুগছিলেন বেশ কয়েকটা সিরিজে। রানখরার এক গোলকধাঁধায় পড়ে গিয়েছিলেন তিনি। যা হাতুরুর চক্ষুশূল হওয়ার জন্য যথেষ্টই ছিল। হয়েছেও তাই। ঘনিষ্ঠ সূত্র জানাচ্ছে, আফিফকে নাকি কিছুদিন দলের আশেপাশেই দেখতে চান না হাতুরুসিংহে!

সিলেটে আইরিশদের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের সময় নির্বাচকদের স্পষ্ট ভাবেই আফিফকে দলে না রাখার নির্দেশ দিয়েছেন হাতুরু। তাঁর শর্তানুযায়ী, আফিফকে দলে ফিরতে হলে ঘরোয়া লিগে পারফর্ম করেই ফিরে আসতে হবে। এর আগে দলে কোনো জায়গা নেই। এর পাশাপাশি, আফিফকে তাঁর সমস্যা নিয়েও কাজ করার পরামর্শ দিয়েছেন হাতুরু।

গুঞ্জন আছে, আফিফ নাকি উপরে ব্যাট করার অনুরোধ জানিয়েছিলেন হাতুরুকে। আর সেখান থেকেই লঙ্কান এ কোচের বিরাগভাজনদের তালিকায় পড়ে যান আফিফ। আসন্ন ওয়ানডে বিশ্বকাপ নিয়ে এরই মধ্যে দল গুছিয়ে নেওয়ার কাজ শুরু করে দিয়েছেন হাতুরুসিংহে।

আফিফের জন্য কিছুটা দুর্ভাগ্যজনক ব্যাপার হলো, হাতুরুর সেই তালিকায় এখন পর্যন্ত এ বাঁহাতি ব্যাটার বেশ দূরেই রয়েছেন। অবস্থাদৃষ্টে যেটা মনে হচ্ছে, আফিফকে এখন ঘরোয়া ক্রিকেট চক্রেই ঘুরপাক খেতে হবে। হাতুরুর ভাবনা কিংবা মানসিকতায় এটা অনেকটাই নিশ্চিত যে, অতি অসাধারণ কিছু না করতে পারলে ভারতগামী বিশ্বকাপ দলে ঠাই হবে না আফিফের।

বাংলাদেশ দলে গেল তিন বছর নিয়মিত মুখই ছিলেন আফিফ। কিন্তু চান্দিকা হাতুরুসিংহের দ্বিতীয় ইনিংস শুরুর সাথে সাথেই যেন বাতিলের খাতায় নাম উঠে গেল এ ব্যাটারের। অবশ্য আফিফ নিজেও অফফর্মের দায়টা এড়াতে পারেন না। শেষ ৬ ওয়ানডেতে নিজের নামের পাশে যোগ করতে পেরেছেন মাত্র ৬১ রান। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটেও সেই একই দশা। ব্যাট হাতে শেষ ফিফটি পেয়েছিলেন মাস সাতেক আগে। এরপরে আর বলার মতো ইনিংস খেলতে পারেননি। ফলাফল, শেষ পর্যন্ত দল থেকে ছিটকে যেতে হয়েছে তাঁকে।

অবশ্য আফিফের জন্য জাতীয় দলের দরজা এখনই বন্ধ হয়ে যাচ্ছে না। ঘরোয়া ক্রিকেটে ভাল করলেই আবারো দলে ফিরতে পারেন তিনি। তবে তাঁর জন্য এখন পর্যন্ত হাতুরুর বার্তা একদম স্পষ্ট, – নিজের সমস্যার উন্নতি না ঘটাতে পারলে সুযোগ নেই। এর পাশাপাশি ঘরোয়া ক্রিকেটে তাঁকে প্রমাণ করেই আসতে হবে।

কড়া হেডমাস্টারের এমন কড়া বার্তায় আফিফ কতটা শক্তপোক্তভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারেন, সেটিই এখন দেখার বিষয়। তবে এর মাঝে একটি প্রশ্নেরও উদয় হয়, হাতুরুর আগমনে আফিফের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার অনিশ্চয়তায় পড়ে গেল না তো? এমন প্রশ্নের উত্তর অবশ্য মিলবে সময়ের স্রোত কিছুদূর গড়ালেই।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link