বিসিবিকে অবকাঠামোগত কৌশলও বাতলে দিচ্ছেন হাতুরুসিংহে!

উঠতি ক্রিকেটার তৈরির সূতিকাগার বলা হয় বাংলাদেশ ক্রিকেটে বোর্ডের (বিসিবি) এইচপি (হাই পারফম্যান্স) ইউনিটকে। এ ছাড়া বাংলাদেশ টাইগার্স, বয়স ভিত্তিক ক্রিকেট, বাংলাদেশ ‘এ’ দল সহ বিসিবি’র আরো বেশ কিছু প্রোগ্রাম রয়েছে। যে গুলো একজন ক্রিকেটারের জাতীয় দলে পা রাখার ক্ষেত্রে সেতুপথ বলে বিবেচিত হয়।

কিন্তু হতাশার ব্যাপার হচ্ছে, এত শক্ত অবকাঠামো থাকা স্বত্ত্বেও এমন প্ল্যাটফর্ম থেকে সাম্প্রতিক কালে ক্রিকেটার উঠে আসে না বললেই চলে। বাংলাদেশ ক্রিকেট এগিয়ে চলেছে সেই পরীক্ষিতদের নিয়েই। বাস্তবতা বলে, এখনও সাকিব-লিটন ব্যতিত দল গড়ার মতো অবস্থাতেই যায়নি কিংবা সেই সাহস গড়ে ওঠেনি নির্বাচকদের। ভবিষ্যৎ ক্রিকেটার তৈরির লক্ষ্যে বিসিবি’র এতসব আয়োজন তাই দিনশেষ এক প্রকার বৃথাই যায় বলা চলে।

এমন সংকটাপন্ন অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতেই এবার বেশ সতর্ক অবস্থানে বিসিবি। নিজেদের অবকাঠামোগত উন্নয়ন নিশ্চিতের জন্য এবার তারা শরণাপন্ন হয়েছে প্রধান কোচ চান্দিকা হাতুরুসিংহের। তাঁর পরামর্শেই মূলত বিসিবি’র আগামী প্রোগ্রাম গুলো পরিচালিত হবে।

সম্প্রতি বিসিবি’র হেড অব প্রোগ্রাম ডেভিড মুরের পরিচালনায় ক্রিকেট অবকাঠামোর একটি নকশা দাঁড় করিয়েছে বিসিবি। আর সেই অবকাঠামোগত উন্নয়নকেই প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হাতুরুসিংহের সাথে ‘স্ট্রাকচার মিটিং’-এ বসেছিল বিসিবি। জানা গেছে, এ নকশায় সবচেয়ে গুরুত্ব পেয়েছে ক্রিকেটারদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম আর পাইপলাইন তৈরির ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা।

এ ছাড়া পূর্ণাঙ্গ ক্রিকেট কমপ্লেক্স গড়ে তোলার ব্যাপারে আশাবাদী বিসিবি। প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ক্রিকেটার তৈরির লক্ষ্যেও বিসিবি’র এ নকশায় আছে আলাদা ভাবনা। এখন পর্যন্ত, প্রতিটি বিভাগ ভেন্যু থাকলেও ক্রিকেটারদের আবাসন আর জিমের ব্যবস্থা বেশ অপ্রতুল। এ কারণে বিভাগীয় শহর গুলোতে স্থায়ী ক্যাম্প নিয়মিত হয়ে উঠছে না। ক্রিকেট ক্যারিয়ারের জন্য সবাই ঢাকামুখী হতে বাধ্য হয়। তবে হাতুরুসিংহের পরামর্শে, এবার এ দিকটায় আলাদা করে গুরুত্ব দিয়েছে বিসিবি। এ জন্য তারা একজন প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ দেওয়ার ব্যাপারেও সম্মত হয়েছে।

২০০৪ সালে এইচপি ইউনিট গড়ে তোলে বিসিবি। শুরুতে বয়সভিত্তিক দলের পাশাপাশি সিনিয়র ক্রিকেটাররাও সেখানে প্রশিক্ষণের সুযোগ পেতেন। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে, এইচপি ইউনিটও পাল্টে গিয়েছে। এখন এইচপি ইউনিটে ঢুকতে গেলে একজন ক্রিকেটারকে নির্দিষ্ট বয়সসীমার মধ্যে থাকতে হয়। তাছাড়া, পর্যাপ্ত কোচিং স্টাফও নেই। তবে এইচপি’র নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনার ব্যাপারে এখন থেকে পর্যাপ্ত কোচিং স্টাফ যুক্ত করা ব্যাপারে আশাবাদী বিসিবি।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে বিসিবি’র হেড অব প্রোগ্রাম হিসেবে যুক্ত হন ডেভিড মুর। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই এ অজি কোচ এইচপি ও বাংলাদেশ টাইগার্সের মানোন্নয়নে বেশ দারুণ কাজ করছেন। সেই ধারাবাহিকতাতেই ভবিষ্যৎ অবকাঠামোর জন্য এবার একটি নকশাও করেছেন সুপরিকল্পিত ভাবে। তাঁর সেই সব ভাবনাকে পূর্ণতা দিতে পাশে থাকবেন প্রধান কোচ চান্দিকা হাতুরুসিংহেও। এখন এগুলো ঠিকঠাকভাবে কার্যকর হলেই বদলাবে দেশের ক্রিকেটের অবস্থা, পাল্টে যাবে ক্রিকেট অবকাঠামোর চিত্র।

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link