জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটের সর্বকালের অন্যতম সেরা অধিনায়ক তিনি। খেলোয়াড়ী জীবনে তাঁর অর্জনও কম নয়। কোচ হিসেবেও শীর্ষমানের। সেই হিথ স্ট্রিকই আইসিসির দুর্নীতি দমন বিধি ভঙ্গ করেছেন। যদিও, যা তিনি করেছেন তার তুলনায় সাজা বেশ কম।
আর তাঁর অপধার এতটাই গুরুতর যে তাঁকে আট বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছে ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি। এই আট বছরে তিনি মাঠ কিংবা মাঠের বাইরে – সব রকমের ক্রিকেটীয় কর্মকাণ্ডে সাথে কোনোভাবেই নিজেকে যুক্ত করতে পারবেন না। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আইসিসি এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দেখা গেছে, তিনি আইসিসিরি দুর্নীতি দমন বিধির চারটি ধারা ভঙ্গ করেছেন। জিম্বাবুয়ের সর্বকালের সেরা এই ফাস্ট বোলারের বিরুদ্ধে অভিযোগ খুবই গুরুতর। ২০১৭ ও ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত কয়েকটা ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে নীতিবিরুদ্ধ কাজের সাথে জড়িত ছিলেন। এর মধ্যে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল), বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল), পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল) ও আফগানিস্তান প্রিমিয়ার লিগও (এপিএল) ছিল।
শুধু ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট নয়, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও এমন কিছু কাজের সাথে তিনি জড়িত বলে জানিয়েছে আইসিসি। জানা গেছে যে দলগুলোতে তিনি কোচি করিয়েছেন সেখানে কয়েক দফা বাজিকরদের হয়ে তিনি দলের কয়েকজনকে প্রস্তাব দিয়েছেন। আইসিসি জানিয়েছে, একজন জাতীয় দলের অধিনায়ক সহ কমপক্ষে চারজন ক্রিকেটারকে তিনি বাজিকরদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন।
তবে, সবচেয়ে বড় যে অন্যায়টা তিনি করেছেন – সেটা হলে দলের অন্দরমহলের খবর তিনি নিয়মিত বাজিকরদের কাছে সরবরাহ করতেন। এমনকি ২০১৮ সালে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়ের মধ্যকার সিরিজ চলাকালেও তিনি তথ্য পাচার করেছেন। তখন তিনি জিম্বাবুয়ে দলের কোচ ছিলেন।
আইসিসির দুর্নীতি দমন কমিশনের তদন্তের শুরুতেই নিজের দোষ শিকার করে নিয়েছেন বাংলাদেশের সাবেক এই পেস বোলিং কোচ। তাই তাঁর সাজার পরিমান তুলনামূলক কম হয়েছে।
২০২৯ সালের ২৮ মার্চে স্ট্রিকের সাজা শেষ হবে। তখন থেকে তিনি পুনরায় ক্রিকেটে সম্পৃক্ত হতে পারবেন। আইসিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক অ্যালেক্স মার্শাল বলেন, ‘হিথ স্ট্রিক অভিজ্ঞ একজন সাবেক ক্রিকেটার ও জাতীয় দলের কোচ। তিনি দুর্নীতি বিরোধী অনেকগুলো সেশনে অংশ নিয়েছেন আর এই বিধিগুলোর ব্যাপারে তাঁর বেশ ধারণা আছে। তিনি এর সাজার ব্যাপারেও জানেন। একজন সাবেক অধিনায়ক ও কোচ হিসেবে তিনি একটা ভরসা ও সম্মানের জায়গা ধারণ করেন ক্রিকেটে। তাই তার এই একাধিক আইন ভঙ্গ করা মোটেও কাম্য ছিল না। মিস্টার স্ট্রিক আমাদের দুর্নীতি বিরোধী প্রোগ্রামগুলোতে অংশ নিতে সম্মত হয়েছেন, তাঁর প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। তিনি পুনরায় শুদ্ধ হয়ে আইন মেনে ও শৃঙ্খলাবদ্ধ হয়ে ক্রিকেটে ফিরতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।’
খেলোয়াড়ী জীবনে জিম্বাবুয়ের হয়ে ৬৫ টি টেস্ট ও ১৮৯ টি ওয়ানডে খেলেছেন হিথ স্ট্রিক। এছাড়া সমৃদ্ধ প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে খেলেছেন ১৭৫ টি ম্যাচ।