অলিম্পিক পদকজয়ীরা কত টাকা পান!

ফিলিপিন্সের ভারোত্তোলক হিডিলিন দিয়াজ চলমান টোকিও অলিম্পিকসে তার দেশের হয়ে স্বর্ণপদক জেতেন, যেটি ফিলিপিন্সের ইতিহাসেই প্রথম অলিম্পিক স্বর্ণপদক। স্বাভাবিকভাবেই দেশটিতে এখন দিয়াজকে ঘিরে আনন্দের বন্যা বইছে। ইতোমধ্যে ফিলিপিন স্পোর্টস কমিশন ও দেশটির বড় বড় ব্যবসায়ীরা তাকে ৩৩ মিলিয়ন ফিলিপিন্স পেসো (প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকা) পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এছাড়া দুটি বাড়ি, আজীবনের জন্য ফ্রি বিমান খরচসহ বহু পুরস্কারের ঘোষণাও ইতোমধ্যে চলে এসেছে।

আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি পদক বিজয়ীদের আলাদা করে কোনো অর্থ দেয় না, তবে বিভিন্ন দেশের কর্তৃপক্ষ ও ব্যবসায়ী মহল বিজয়ীদেরকে বিশাল অঙ্কের অর্থ পুরস্কার দিয়ে থাকে।

যেমন- যুক্তরাষ্ট্রের একজন অলিম্পিক স্বর্ণপদক বিজয়ী সে দেশের কর্তৃপক্ষ থেকে ৩৭,৫০০ মার্কিন ডলার অর্থ পুরস্কার পায়, কিন্তু সিঙ্গাপুরের কেউ যদি অলিম্পিকে স্বর্ণপদক জেতেন, তাহলে তিনি প্রায় ২০ গুণ বেশি, ৭,৩৭,০০০ মার্কিন ডলার পান। কাজাখস্তানের স্বর্ণপদক বিজয়ী পান ২৫০০০০ মার্কিন ডলার, অষ্ট্রেলিয়ার বিজয়ী পান ১৫ হাজার মার্কিন ডলার। কোন দেশের অলিম্পিক মেডেল বিজয়ী কত অর্থ পান, তার একটা তালিকা কমেন্ট বক্সে দেওয়া হলো।

তবে অর্থ পুরস্কারের বাইরেও বিভিন্ন দেশ তাদের অলিম্পিক মেডেলজয়ীদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দিয়ে থাকে। যেমন, মার্কিন বিজয়ীরা স্বাস্থ্য বীমা, প্রথম সারির মেডিকেল ফ্যাসিলিটিস এবং কলেজ টিউশন ফি পান। সিঙ্গাপুরের স্বর্ণপদকজয়ীরা  ৭,৩৭,০০০ মার্কিন ডলার পেলেও এ অর্থের উপর তাদেরকে ট্যাক্স দিতে হয় এবং এর একটি অংশ আবার ভবিষ্যত ট্রেনিং এবং উন্নয়নের জন্য জাতীয় স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনকে দিয়ে দিতে হয়।

কোন দেশের অ্যাথলেট কী রকম উপার্জন করতে পারবেন, তা নির্ভর করে দেশগুলোর ক্রীড়া সংস্কৃতির উপরও। যেমন যুক্তরাষ্ট্রের অলিম্পিক পদকজয়ীরা তাদের মেধা ও অভিজ্ঞতা প্রাইভেট সেক্টরে কাজে লাগিয়ে প্রচুর পরিমান আয় করতে পারেন। কিন্তু সিঙ্গাপুর ও ভারতের মতো দেশে সে সুযোগ সীমীত এবং এসব দেশের সরকারগুলো বিজয়ীদেরকে চওড়া অর্থ পুরস্কার দেয়, যাতে অন্যরাও উৎসাহিত হয়ে অলিম্পিকে অংশ নেয়।

একজন অলিম্পিক স্বর্ণপদকজয়ী মালয়েশিয়ান দেশটির কর্তৃপক্ষ থেকে ২,৩৬,১৪৯ মার্কিন ডলার পুরস্কার পান। দেশটির একজন অলিম্পিক ব্রোঞ্জজয়ী যে অর্থ পুরস্কার পান, তা যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার স্বর্ণজয়ীর চেয়েও বেশি।

তবে অলিম্পিকে অংশ নেওয়ার জন্য বা পদক জেতার জন্য নিজেকে যে দীর্ঘ সময় ধরে প্রস্তুত করতে হয়, সেটা সব দেশে সব অ্যাথলেটের জন্য সমান সুবিধার নয়। বেশি প্রতিযোগীতাসম্পন্ন দেশগুলোতে অ্যাথলেটরা ট্রেনিং ও অন্যান্য ফ্যাসিলিটি ব্যবহারে অর্থ ছাড় পান।

অনেকে আবার স্বাভাবিক চাকরি করে সেই অর্থ দিয়ে ট্রেনিং করেন। যেমন, এই টোকিও অলিম্পিকে মার্কিন ব্যাডমিন্টন প্রতিযোগী ঝ্যাং বিউয়েন ক্রাউডসোর্সিং করে তার টোকিওযাত্রার অর্থ জোগাড় করেছেন। ফোর্বসের তথ্য অনুসারে যুক্তরাষ্ট্রের অলিম্পিক দলের অধিকাংশ সদস্যেরই কোনো এজেন্ট বা স্পন্সর নেই।

তবে কেউ কেউ আছে যারা বিভিন্ন স্পন্সরশিপ থেকে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার পান। এটা নির্ভর করে সেই অ্যথলেট অলিম্পিকে কতটা সফল কিংবা তার সফলতার সম্ভাবনা কতটুকু। যেমন- জাপানিজ টেনিস স্টার নাওমি ওসাকা গত ১২ মাসে বিভিন্ন স্পন্সরশিপ থেকে ৫৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করেছেন এবং এই বিপুল অর্থ আয়ের মাধ্যমে তিনি নিজের সর্বকালের সবচেয়ে দামি নারী অ্যাথলেটে পরিণত করেছেন। তবে এই ধরণের বড় বড় স্পন্সরশিপ খুবই বিরল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link