রুতুরাজ গায়কড়, ভারতের টেস্ট সমস্যার সমাধান

ভারতীয় টেস্ট দলে প্রথম বারের মতো সুযোগ পেয়েছেন রুতুরাজ গায়কোয়াড়। ৩৫ বছর বয়সী চেতেশ্বর পুজারা বাদ পড়ায় ভারতের ভবিষ্যৎ ‘নাম্বার থ্রি’ ভাবা হচ্ছে গায়কড়কে। 

টি-টোয়েন্টিতে দারুণ সক্ষমতার প্রমাণ দেওয়া গায়কড়কে নিয়ে লাল বলের ক্রিকেটেও বেশ আশাবাদী ভারতীয় নির্বাচকরা। তরুণ এ ব্যাটারের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে পরিসংখ্যান বলছে, ২৮ ম্যাচে ৪২.১৯ গড়ে ব্যাটিং করছেন তিনি। 

মন্দ নয়। তবে দুর্দান্তও নয়। কারণ পূজারার স্থলাভিষিক্ত হওয়ার দৌড়ে ছিলেন, প্রায় ৮০ গড়ের ব্যাটার সরফরাজ খানও। এ ছাড়া অভিমন্যু ঈশ্বরন, মায়াঙ্ক আগারওয়ালরাও রঞ্জি ট্রফিতে ব্যাট হাতে দাপট দেখিয়েছিলেন। 

তারপরও তাদের বাদ দিয়ে উইন্ডিজ সফরে গায়কড়কে মনে ধরেছে ভারতীয় নির্বাচকদের। মূলত, বেশ কিছুদিন ধরেই টেস্ট দলের বিবেচনায় ছিলেন তিনি। এর আগে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালে প্রাথমিকভাবে গায়কড়কে স্ট্যান্ডবাই হিসেবে রাখা হয়েছিল। তবে নিজের বিয়ের কারণে সে সফর থেকে সরে দাঁড়ান তিনি।

ভারতীয় টেস্ট দলে গায়কড়ের সংযুক্তিতে অবশ্যই ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন সাবেক ক্রিকেটার দিলীপ ভেঙসরকার। তাঁর মতে, গায়কোয়াড়ের সব ধরনের ক্রিকেট খেলার সক্ষমতা রয়েছে।

এ নিয়ে তিনি ভারতীয় এক গণমাধ্যমে বলেন, ‘আইপিএল দিয়ে ওর উত্থান হলেও ওর সব ধরনের ক্রিকেট খেলার সক্ষমতা আছে। লাল বল কিংবা সাদা বল। আমি এখানে ফরম্যাট ভেদে মানিয়ে নেওয়ার ব্যাপারটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে মানতে নারাজ। একজন দুর্দান্ত ব্যাটার সব ফরম্যাটেই মানিয়ে নিতে পারে। আমি রুতুরাজকে নিয়ে আশাবাদী। আশা করছি, ও তিন ফরম্যাটেই মানিয়ে নিতে পারবে।’

ভেঙ্গসরকারের মতো একই মত চেন্নাই সুপার কিংসের ব্যাটিং কোচ মাইক হাসিরও। তিনি বলেন, ‘ওর মধ্যে যে ব্যাপারটা আমার সবচেয়ে ভাল লাগে, তাহলো- তাঁর নিজস্ব একটা টেকনিক আছে। আর এই অনন্য স্বত্বাই তাঁকে আলাদা করে তুলেছে। সে সবসময় আত্মবিশ্বাসী থাকে। আমার কোনো সন্দেহ নেই গায়কড়ের ব্যাপারে। পর্যাপ্ত সুযোগ পেলে সেও নিজেকে প্রমাণ করতে পারবে। আমি ওর খেলার ধরনের ভক্ত।’

এই মুহূর্তে টেস্ট ক্রিকেটের সংজ্ঞাটাও খানিকটা পাল্টে গিয়েছে। সিংহভাগ টেস্ট প্লেয়িং দেশই ওল্ড স্কুল টেকনিক থেকে লাল বলের ক্রিকেটেও আক্রমণাত্বক ক্রিকেটের পন্থা অবলম্বন করছে। পুজারার জায়গায় গায়কোয়াড়ের অন্তর্ভূক্তির আরেকটা কারণও এটাই। কারণ রুতুরাজের ব্যাটিং টেকনিকে গতিময়তা আছে। 

গুঞ্জন আছে, রুতুরাজের এমন ব্যাটিংয়ের কারণে গত বছরেই নাকি তাঁকে দলে ভেড়াতে চেয়েছিলেন তৎকালীন কোচ রবি শাস্ত্রী। তবে শেষ শাস্ত্রী সেটি করতো পারেননি।

এক বছর পরে হলেও অবশেষে ভারতোর লাল বলের ক্রিকেট অন্দরমহলে ঢোকার সুযোগ পেলেন রুতুরাজ গায়কড়। এখন দেখার পালা, জাতীয় দলে গায়কোয়াড়ের এই আগমন কতটা ভারতীয় দলের জন্য ফলপ্রসূ হয়। 

অবশ্য রুতুরাজকে দীর্ঘমেয়াদে দলে দেখতে চান মাইক হাসি। তিনি বলেন, ‘ওকে মেলে ধরার জন্য সময় দিতে হবে। চেন্নাইয়ের হয়ে আইপিএলে ওর শুরুটা যে খুব ভাল হয়েছিল তা নয়। কিন্তু পরবর্তীতে ঠিকই নিজের জাত চিনিয়েছিল। তাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও সে টানা সুযোগ পাওয়ার দাবী রাখে। আমার কোনো সন্দেহ নেই যে, সুযোগ পেলে গায়কোয়াড়ও সামর্থ্যের প্রতিদান দিবে। আমি ওকে নিয়ে অনেক ভীষণ আশাবাদী।’

লেখক পরিচিতি

বাইশ গজ ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি বৃত্ত অঙ্কন করার চেষ্টা করি...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link