সেলিব্রেশন যেভাবে করতে হয়

এখনও ছবিটা চোখের সামনে স্পষ্ট। অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফের বল কোনরকমে অফে ঠেলে জাহির দৌড়ালেন। উল্টোদিকে কাইফ। ওভার থ্রো।

সুচতুর মোহাম্মদ কাইফ সঙ্গে সঙ্গে ডাক দিলেন জহির খানকে, দ্বিতীয় রান নেবার জন্যে। রান আউট মিস। নাসের হুসেইন বসে পড়েছেন হতাশায়, ফ্রেডি ফ্লিনটফ পিচের উপরে বসে, কপালে হাত।

কয়েক মাস আগে ওয়াংখেড়েতে সিরিজ ড্র করে ফুটবলের স্টাইলে জামা খুলে দৌড়েছিলেন ফ্লিনটফ। আজকে পাশা উল্টে গেছে। দ্রুত ক্যামেরা জুম করলো লর্ডসের ব্যালকনিতে।

সেটা লর্ডসের ব্যালকনি না যুবভারতী? বোঝা দায়। তাবিজ মাদুলি অগ্রাহ্য করে বঙ্গসন্তান তখন এক হাতে জার্সি খুলে বনবন করে ঘোরাচ্ছেন। মুখে যেসব শব্দ বেরোচ্ছে তা এখানে লিখলে সম্ভবত কালকেই আমার প্রোফাইল রেস্ট্রিক্ট হয়ে যাবে।

টিট ফর ট্যাট এর অর্থ যদি কেউ না জেনে থাকেন, এই পনেরো সেকেন্ড দাদাকে দেখলে তাঁকে আর কোনো বই টই পড়তে হবেনা। রিভেঞ্জ ইস সুইট, ইন্ডিড।

মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়েতে ফ্লিনটফ যখন জামা খুলেছিলেন, একজনকেও বলতে শুনিনি যে ব্যাপারটা অশোভন কিছু। বরং উল্টোটাই শুনেছি, ভারতীয় সাবেক ক্রিকেটাররাও চুপ ছিলেন।

যেনো আবেগের এমন বহিপ্রকাশ খুব স্বাভাবিক। আর সৌরভ গাঙ্গুলির বেলায়? বিদেশি প্রাক্তন ক্রিকেটার ও বিশেষজ্ঞ ছেড়ে দিন, ভারতীয়দের মধ্যে থেকেই ফিসফাস, সমালোচনা, এমন করা উচিত হয়নি, হাজার হোক লর্ডসের ব্যালকনি! তার একটা ঐতিহ্য নেই?

এই কলোনিয়াল মানসিকতা থেকে আমরা বেরোতে পারলামনা আর। দাদার অবশ্য তাতে কিছু যায় আসেনি। সৌরভ গাঙ্গুলি তাঁর সবথেকে র ফর্মে ধরা দিয়েছিলেন সম্ভবত দুবার। একটা ব্রিসবেনে সেঞ্চুরির পর। আরেকটা এইদিন, লর্ডসের ব্যালকনিতে।

সৌরভ গাঙ্গুলি ভারতীয় ক্রিকেটকে অনেক কিছু শিখিয়েছেন। অনেক কিছু দিয়েছেন। ১৩ জুলাই, ২০০২ তারিখে তিনি আমাদের শিখিয়েছিলেন কিভাবে সেলিব্রেট করতে হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link