হৃদয়ের তাহলে ঐশ্বরিক শক্তি নেই

টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকদের একজন, ব্যাটে হাতে আছেন ফর্মে, সবার প্রশংসাও মিলছে – সবমিলিয়ে তাই লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগে বেশ আত্মবিশ্বাসী ছিলেন তাওহীদ হৃদয়। কিন্তু সেই আত্মবিশ্বাস-ই কাল হয়ে দাঁড়ালো তাঁর জন্য। শুরুতেই আক্রমণাত্বক হতে গিয়ে আউট হতে হয়েছে তাঁকে। অবশেষে হৃদয়ের একটু তবে ছন্দপতন হল।

শেষ ম্যাচটা তাই স্মরণীয় করে রাখতে পারলেন না এই তরুণ, আক্ষেপ নিয়েই ফিরতে হচ্ছে দেশে। ১৩৫ রানের টার্গেট, আধুনিক টি-টোয়েন্টিতে এই রানকে ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই। তবে দ্বিতীয় ওভারেই চারিথ আসালঙ্কা আউট হয়ে চাপ বাড়ান দলের উপর। সেসময় তিন নম্বর পজিশনে ব্যাটিং করতে আসেন তাওহীদ হৃদয়। সুযোগ ছিল অন্যদিনগুলোর মতই রয়ে সয়ে খেলার, ধীরেসুস্থে খেললেই বরং দল উপকৃত হতো।

কিন্তু তরুণের তাজা প্রাণ হয়তো একটু বেশিই উপভোগ করতে চাইলো ব্যাটিংটাকে; নিজের মোকাবিলা করা প্রথম বলেই ডাউন দ্য উইকেটে এসে খেলতে যান বিনুরা ফার্নান্দোকে। ব্যাটে বলে হয়নি, টপ এজ হয়ে ক্যাচ উঠে যায়। ডিপ মিড উইকেট থেকে সামারাবিক্রমা দৌড়ে এসে লুফে নেন সেটা। আর বিদেশী লিগে প্রথমবারের মড গোল্ডেন ডাকের স্বাদ পান হৃদয়।

তাওহীদ হৃদয়ের আউট হওয়া সেই ওভারের প্রথম তিন বল ঠিকঠাক খেলতে পারেননি রহমানউল্লাহ গুরবাজ; পরের বলে কোনমতে সিঙ্গেল নিয়ে স্ট্রাইক দেন ছন্দে থাকা হৃদয়কে। অন্যদিন হলে হয়তো বুঝে শুনেই খেলতেন এই বাংলাদেশী তারকা, তবে আজ কি যেন হলো; বোধহয় কাউন্টার এটাক করে ডানা মেলতে থাকা চাপকে মাটিতে ফেলতে চেয়েছিলেন। তবে শেষমেশ আউট হয়ে উল্টো বিপদ বাড়িয়েছেন দলের।

পরের ওভারে অবশ্য গুরবাজও প্যাভিলিয়নের পথ ধরেছেন। টপ অর্ডারের তিন ব্যাটারকে হারিয়ে জাফনা কিংস পাওয়ার প্লেতে তুলতে পেরেছে মাত্র ২২ রান, তাতেই ১৩৫ রানের টার্গেটকে পাহাড়সম মনে হচ্ছে থিসারা পেরেরার দলের কাছে। ষষ্ঠ ওভারে ১৫ রান না আসলে অবশ্য আরো বাজে দেখাতো স্কোরবোর্ড।

এর আগে টসে জিতো ডাম্বুলা অউরাকে ব্যাটিংকে পাঠিয়েছিল তাওহীদ হৃদয়ের জাফনা কিংস। প্রতিপক্ষের ব্যাটারদের চাপে রেখে সেই সিদ্ধান্ত সঠিক প্রমাণ করেন দলটির বোলাররা। শেষপর্যন্ত কুশল পেরেরার ৩৬ বলে ৪০ রানের ইনিংসে ভর করে ১৩৪ রান সংগ্রহ করে ডাম্বুলা।

ম্যাচের জয়-পরাজয় ছাপিয়ে বাংলাদেশে এখন আলোচনার বিষয় তাওহীদ হৃদয়ের এমন আউট। দুর্দান্ত গেমসেন্স আর নির্ভার একজন ব্যাটসম্যানের এমন আউট দেখাটা নিঃসন্দেহে সমর্থকদের পীড়া দিবে; হৃদয় দ্রুতই নিজেকে শুধরে নিবেন, এমন ঘরানার আউটও আর হবেন না সেটাই আপাতত তাদের প্রার্থনা। কেননা আসন্ন বড় টুর্নামেন্টে এই ডানহাতিকে বড্ড প্রয়োজন লাল-সবুজের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link