দুই দিনের সফরে মঙ্গলবার পাকিস্তান সফরে গিয়েছেন ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) একটি প্রতিনিধি দল। পাকিস্তান সফরের এই প্রতিনিধি দলে ছিলেন আইসিসি’র চেয়ারম্যান গ্রেগ বার্কলে আর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জিওফ অ্যালারডাইস। ২০০৮ সালের পর দীর্ঘ ১৫ বছর বাদে এই প্রথম আইসিসির কোনো চেয়ারম্যান পাকিস্তান সফরে গেলেন।
মূলত, এই সফরে ২০২৩ বিশ্বকাপে পাকিস্তান দলের ভারতে যাওয়া না, যাওয়া নিয়ে আলোচনা হবে। এর পাশাপাশি আইসিসি থেকে প্রাপ্য আয়ের ব্যাপারে পিসিবি’র সাথে বিশদ আলোচনার কথা রয়েছে।
আইসিসির শীর্ষ স্থানীয় কর্মকর্তাদের এ সফরে পিসিবিও আনুষ্ঠানিকভাবে একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে পাকিস্তানের এ ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থা থেকে বলা হয়, আইসিসির চেয়ারম্যানের সঙ্গে উক্ত আলোচনায় পিসিবির প্রধান নাজাম শেঠি, প্রধান পরিচালন কর্মকর্তাসহ বোর্ডের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা অংশ নিবেন।
অবশ্য, পাকিস্তানের বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ নিয়ে এমন অনিশ্চিয়তার সূত্রপাত এশিয়া কাপ থেকেই। এ বছরের সেপ্টেম্বরে পাকিস্তানের মাটিতে এশিয়া কাপ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কূটনৈতিক বৈরিতায় ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড তাতে আপত্তি জানায়।
এর পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তান হাইব্রিড মডেলে এশিয়া কাপ আয়োজনের প্রস্তাব দিলেও ভারত এখন পর্যন্ত তাদের সিদ্ধান্তে অনড় অবস্থানে আছে। শুধু তাই নয়, গুঞ্জন আছে, বিসিসিআইয়ের ক্ষমতার দাপটে পুরো এশিয়া কাপই এখন গড়াতে পারে নিরপেক্ষ ভেন্যুতে।
আর ভারতের এমন বিপরীতমুখী অবস্থানে চটে গিয়ে পিসিবিও হুমকি দিয়ে বসে। ভারতের মতো তাঁরাও প্রাথমিক ভাবে ভারতে গিয়ে বিশ্বকাপ খেলতে আপত্তি জানিয়েছে। বিশ্বকাপে তাদের জন্য নিরপেক্ষ ভেন্যুর দাবি জানিয়েছে পিসিবি।
মূলত, এরপর থেকেই বিশ্ব ক্রিকেটে কিছু অস্থিতিশীল অবস্থা তৈরি হয়। আর এই বিরাজমান অবস্থা কাটাতেই পাকিস্তান সফরে গিয়েছে আইসিসি’র প্রতিনিধি দল। যেখানে মূল আলোচনাটাই হবে পাকিস্তানের বিশ্বকাপ অংশগ্রহণের সম্ভাব্যতা নিয়ে।
এ ছাড়া উক্ত আলোচনায় আইসিসির প্রস্তাবিত লভ্যাংশ বণ্টন নিয়েও কথা বলবে পিসিবি। সম্প্রতি ২০২৪-২৭ চক্রে আইসিসি দলগুলোর জন্য লভ্যাংশ বন্টন করে। সেখানে সর্বোচ্চ ৩৮.৫ শতাংশ লভ্যাংশ পাওয়ার কথা ভারতের। আর পাকিস্তানের জন্য মাত্র ৫.৭৫ শতাংশ লভ্যাংশ প্রস্তাব করে আইসিসি।
এতেই অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন পিসিবির চেয়ারম্যান নাজাম শেঠি। তাই লভ্যাংশ বন্টন কিভাবে হয়েছে, সে ব্যাপারে আইসিসির সাথে আলোচনা করার কথা রয়েছে পিসিবির। আইসিসি অবশ্য আশাবাদী, সকল সমস্যার নিরসন ঘটবে দুই দিনের এই সফরেই। তবে নিজেদের মাটিতে এশিয়া কাপ আয়োজন করতে না পারলে পাকিস্তানের আদৌ ভাবনার রদবদল ঘটবে কিনা, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।