এশিয়া কাপের দামামা বেজে গেছে। কিন্তু খানিকটা দোলাচলের মধ্য দিয়ে দিন যাচ্ছে ভারত ও পাকিস্তানের। একে তো দুই দলেরই নতুন অধিনায়ক, তার উপর ওপেনিং নিয়ে চলছে মধুর সমস্যা। সেই সমস্যা আবার তিক্ততায় পরিণত হওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়ার নয়। সেই পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার মত অভিজ্ঞ ব্যাটারও অনুপস্থিত।
ভারত দলের ওপেনিং স্থানটা একেবারে পাকাপোক্তই ছিল। রোহিত শর্মার অবসরের পর, অভিষেক শর্মা সেই স্থানে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিলেন। একটা ফ্রেশ স্টার্টের চিন্তা করে সাঞ্জু স্যামসনকে দেওয়া হয় ওপেনিংয়ের দায়িত্বভার। অভিষেক-সাঞ্জুর আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের ভর করে ভালই দিন যাচ্ছিল ভারতের।
এর মধ্যে হুট করেই শুভমান গিলকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এশিয়া কাপের দলে। শুধু তাই নয়, তাকে দেওয়া হয়েছে সহ-অধিনায়কের দায়িত্ব। স্বাভাবিকভাবেই একাদশে তার জায়গা নিশ্চিত তা বলে দেওয়া যায়। এখানেই বরং সংশয়ের সৃষ্টি হবে ভারতের ওপেনিং পজিশন নিয়ে। কার্যত সাঞ্জুকে ছাড়তে হতে পারে ইনিংস উদ্বোধনের দায়িত্ব।
পাকিস্তানের পরিস্থিতি আরও খানিকটা বেগতিক। পাঁচজন ব্যাটার রয়েছেন যারা কি-না প্রত্যেকেই ইনিংস উদ্বোধনের কাজটা করতে জানেন। এছাড়াও সাম্প্রতিক সময়ে তিনটি ভিন্ন জুটি বাজিয়ে দেখেছে পাকিস্তান। সাইম আইয়ুব ও শাহিবজাদা ফারহানের ওপেনিং জুটিতেই তারা রাখতে পারে ভরসা। এছাড়াও ফখর জামান, হাসান নাওয়াজ ও মোহাম্মদ হারিসরাও থাকছেন ওপেনিংয়ের দৌড়ে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা অসীম লুপে আটকে গেলে পাকিস্তানের আম-ছালা সব যাবে।
এমনিতেও তাদের অধিনায়কের এটাই প্রথম বড় টুর্নামেন্ট। এই পর্যন্ত অধিনায়ক হিসেবে মোটে চারটি ম্যাচে জয়ের দেখা পেয়েছেন সালমান আলি আঘা। বড় আয়োজনে দলকে একই সুতোয় গেঁথে রাখা ও প্রতিটা মুহূর্তে মানসিকভাবে চাঙ্গা করার গুরুদায়িত্ব পালন করতে হবে সালমানকে। কতটুকু সামলাতে পারবেন সালমান সে প্রশ্ন থেকেই যায়।
একই পরিস্থিতি ভারতেরও। সুরিয়াকুমার যাদব অধিনায়ক হিসেবে প্রথম কোন বহুজাতিক টুর্নামেন্টে অংশ নিচ্ছে। যদিও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক হিসেবে বেশ ভালই ফলাফল ধরা দিয়েছে সুরিয়ার হাতে। ২২ ম্যাচের ১৮টিতে তিনি পেয়েছেন জয়ের দেখা। স্বাভাবিকভাবে প্রত্যাশা বেশিই থাকছে ভারতের কাছ থেকে। কিন্তু স্নায়ুচাপের লড়াইয়ের টিকে থাকাটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে সুরিয়ার জন্যে।
এমন পরিস্থিতিতে, সুরিয়ারকে খানিকটা নির্ভার করতে পারতেন রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলির মত সব চরিত্র। কিন্তু তারা অবসর নেওয়ায় অভিজ্ঞতার অভাব পরিলক্ষিত হতে পারে ভারত দলে। সেটার প্রভাব কাঙ্ক্ষিত ফলাফল প্রাপ্তিতেও বিড়ম্বনার সৃষ্টি করতে পারে। একই রকম পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে পারে পাকিস্তানও। বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের মত অভিজ্ঞ ক্রিকেটার নেই এশিয়া কাপের দলে।
আর কিছু না হোক, তাদের অভিজ্ঞতা বহু ম্যাচের ফলাফল বদলে দেওয়ার সক্ষমতা রাখে বটে। কিন্তু সেই সুযোগ এবার অন্তত নেই। সেই বিষয়টি মাথায় রেখেই পাকিস্তানকে নামতে হবে শিরোপার লড়াইয়ে। এশিয়া কাপের দুই শিরোপা প্রত্যাশিত দলের একই রকম সমস্যা ও সৃষ্টি হওয়া পরিস্থিতি বরং জমিয়ে তুলতে পারে গোটা টুর্নামেন্টকেই। শেষ অবধি বাঁধা-বিপত্তি পেরিয়ে শিরোপা উঁচিয়ে ধরবে কোন দল।