শেষ হাসি হবে কার!

‘নানা মুনির নানা মত’- প্রবাদটি শুনেছেন তো। ভারত-পাকিস্তান ম্যাচটির আগে বিশ্ব ক্রিকেটের অবস্থা ঠিক এমনই। একে তো এটি বিশ্বকাপের হাইভোল্টেজ ম্যাচ। এই বছরে এটা এই দুই দলের তৃতীয় সাক্ষাৎ। ২৩ অক্টোবর মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর মাঠের লড়াইয়ের দিকে মুখিয়ে আছে ক্রিকেট বিশ্ব। কিন্তু বাইশ গজে মোকাবেলার আগেই শুরু হয়ে গিয়েছে ম্যাচটিকে ঘিরে নানা আলোচনা-সমালোচনা।

এই তালিকায় দুই দেশের ভক্ত সমর্থকদের থেকে শুরু করে, পিছিয়ে নেই সাবেক ক্রিকেটাররাও। আজকাল প্রায়ই সাবেক ক্রিকেটার এবং ক্রিকেট বিশ্লেষকদের ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ নিয়ে মন্তব্য করে খবরের শিরোনাম হতে দেখা যাচ্ছে। আবার একজন সাবেকের মন্তব্যের জেরে আরেকজন পাল্টা মন্তব্য দেয়াটাও বেশ সাধারণ ঘটনা হয়ে গিয়েছে।

পাকিস্তানের বোলিং গ্রেট আকিব জাভেদ তাদের মধ্যে একজন। ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের ফেবারিটিজম ব্যক্তি বিশেষে ভিন্ন। মজার ব্যাপার হল আপনি এই দুই দলের খেলার ফলাফল ভবিষ্যদ্বাণী করতে পারবেন না। কারণ দু’টো দলই নিজেদের সবটুকু নিঙড়ে দিয়ে শেষ বল অব্দি জেতার চেষ্টা করে এবং যে কোনো ধরণের পরিস্থিতি মোকাবেলা করে জেতার সামর্থ্য রাখে।

দুই দেশের সাবেকরা মনে প্রাণে নিজ দেশকে সমর্থন করলেও, অভিজ্ঞতার জায়গা থেকে অন্য দল নিয়ে মন্তব্য করতে বাঁধা নেই। এই যে বিশ্বকাপজয়ী পাকিস্তানি পেসার আকিব জাভেদ ভারতীয় দলটি নিয়ে তাঁর মতামত দিয়েছেন। তাঁর মতে, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য রোহিত শর্মার নেতৃত্বাধীন দলটি সেরা অবস্থানে নেই।

তিনি বলেন, ‘ভারত নিজেদের সেরা ফর্মে নেই। তাঁদের ব্যাটিং সাইড আগে সংগ্রাম করলেও শক্তিশালী হয়েছে। কিন্তু বুমরাহ বিহীন ভারতের বোলিং আক্রমণে তেমন শক্তিশালী নয়। তাঁদের বাকী বোলাররা সাধারণ মিডিয়াম পেসার। তবে হ্যাঁ, হার্দিক পান্ডিয়া আছেন, তিনি ভারতের জন্য গেম চেঞ্জার হতে পারেন।’

সাবেক এই ফাস্ট বোলার তাঁর মন্তব্য দিয়ে যেন ভারতকে কিছুটা হুশিয়ারী বার্তা দিলেন। তিনি ভারতের বোলিং দুর্বলতাকে সামনে এনে সম্ভবত নিজেদের শক্তিশালী বোলিং লাইন আপের জানান দিলেন। কিংবা নিজের দেশের বিপক্ষে ম্যাচের আগে প্রতিপক্ষের মানসিক চাপ বাড়ানোর এক নিখুঁত পাঁয়তারা করলেন।

তবে এটা সত্য যে, পাকিস্তানের বোলিং আক্রমণ অত্যন্ত শক্তিশালী। দেশটি যেন পেস তাণ্ডবের মিলনমেলা। সদ্য ইনজুরি কাটিয়ে দেশটির প্রধান পেসার শাহীন আফ্রিদি ফিরে আসায় পাকিস্তান দলটি বেশ শক্তিশালী অবস্থানে আছে। শাহিন ছাড়াও হারিস রউফ, নাসিম শাহরা যেকোন দলকে বিধ্বস্ত করে দেয়ার ক্ষমতা রাখে।

কিন্তু বুমরাহকে ছাড়া ভারত বোলিংয়ে কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও, ভারতের ব্যাটিং সাইড দারুণ শক্তিশালী। বিরাট কোহলির ফর্মে ফেরা এক্ষেত্রে প্লাস পয়েন্ট। তাঁরা তাঁদের আক্রমণাত্মক ব্যাটিং দিয়েই প্রতিপক্ষকে নাস্তানাবুদ করতে সক্ষম। বুমরাহর শূন্যস্থানে দলে এসেছেন মোহাম্মদ শামি। আর্শদ্বীপ সিং, ভুবনেশ্বর কুমার ও হার্শাল প্যাটেল নিজেদের দিনে তাক লাগিয়ে দিতে পারেন। তাছাড়া যুজবেন্দ্র চাহাল ও রবিচন্দ্রন অশ্বিনের মতো দারুণ স্পিনারও আছে দলটিতে।

ওই ঘুরেফিরে একই ব্যাপার। টি-টোয়েন্টি হলো ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ খেলা। ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কোন একটি দলকে এগিয়ে রাখা যাবে না অন্যটির চেয়ে। বাইশ গজের লড়াইয়ে মুখোমুখি ফলাফল নির্ধারণ করে দিবে পারফরমেন্সই। বাবর নাকি রোহিত কে হাসবে শেষ হাসি? উত্তরটা তোলা থাক ম্যাচের দিন অবধি। অবশ্য তাঁর আগ পর্যন্ত ভক্ত-সমর্থকদের মাতামাতির ব্যাপারটি বেশ মন্দ নয়।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link