ভারতীয় ক্রিকেট কি অবশেষে সাবালক হচ্ছে?

সিডনি না এলে মূলতান আসতো না। মূলতান না এলে মোহালি আসতো না। আর মোহালি এলো বলেই না মোতেরা এলো। বেশ একটা ম ম গন্ধ ছাড়ছে।

আপিসের কাজকম্ম শেষ করে, আজকের পোস্ট ম্যাচ সাক্ষাৎকার বেশ খুঁটিয়ে মন দিয়ে পড়লাম। সিডনি, মুলতান, আর মোহালির সাংবাদিক সম্মেলনগুলো, নেটসমুদ্র হাতড়ে হাতড়ে যতটা উদ্ধার করা যায় – পড়লাম, দেখলাম, শুনলাম।

২০০৪ জানুয়ারি সিডনিতে এক অধিনায়ক ২৪১* স্টারকে মুখ ফুটে না বলতে পারে নি, জেতা ম্যাচ ড্র করে এসেছিল। জনৈক স্টিভ ওয়াহ, নিজের ঘরের মাটিতে ৮০ রানের একটি অমর ইনিংস খেলে মাথা উঁচু রেখে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। অস্ট্রেলিয়ার হাতে মাত্র চার উইকেট বাকি ছিল। আরো দু-তিন ঘন্টা হাতে থাকলে কী হতো কে বলতে পারে?

কী আশ্চর্য, সেই বছরেই, ২০০৪ মার্চে মূলতানে সেই অধিনায়ক, নিজে হাত নেড়ে ১৯৪* স্টারকে ডেকে নিয়ে শুদ্ধিকরণ করেছিল। যদিও সে নিজে খেলছিল না আর অন্য কেউ ‘প্রক্সি ক্যাপ্টেন’ ছিল।

হাসতে হাসতে ম্যাচ জিতেছিল ইন্ডিয়া আর স্টার নিজের ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন প্রকাশ্য সাংবাদিক সম্মেলনে। সাংবাদিক সম্মেলনের আগে স্টার, তদানীন্তন কোচকে এটাও বলেছিলেন যে তাঁর ডাবলের জন্য টিমের পূর্ব-নির্ধারিত ডিক্লারেশন পেছাবে – এ নিয়ে তিনি সম্পূর্ণ নিশ্চিত ছিলেন।

২০২২ মার্চে সেই অধিনায়ক হেড কোচ। দুম করে ১৭৫* কে ডেকে নিলেন। ভারত আবার জিতল। সাংবাদিক সম্মেলনে স্টার ডাবল হারানো নিয়ে কিছু বললেন না। আজ আবার ২০২৩ মার্চ – সেই প্রক্সি ক্যাপ্টেন এখনো হেড কোচ। চুল দ্রুত সাদা হচ্ছে তাঁর। ১৮৬ রানে, আজকের স্টার ঠুকঠুক না করে, নিজের উইকেট জলাঞ্জলি দিয়ে এলো।

না, ভারত এবার জিততে পারেনি। তবে আজকেও, সাংবাদিক সম্মেলনে কেউ ডাবল নিয়ে কোন কথাও বলে নি। না ক্যাপ্টেন, না স্টার প্লেয়ার। যেন স্টারের ডাবল হলো কী হলো না – সেটা আলোচনার মধ্যে আদৌ না আনার মতো একটা তুচ্ছ ঘটনা।

২০০৪ থেকে ২০২৩। আঠেরো পেড়িয়ে উনিশ। ওপরের ঘটনায় কোন স্টার ব্যাট করছিলেন (বা করছিলেন না), সেটা যদি আমরা আপাতত সরিয়ে রাখি, শুধু স্টার শব্দটির ওপর জোর দিই, অন্তত এটা কি বলার সময় এসেছে যে ভারতীয় ক্রিকেট অবশেষে সাবালক হচ্ছে? স্টারের আগে টিম আসছে?

ওপরের সব কটা ঘটনায় স্টার পাল্টেছে, দল পাল্টেছে, অধিনায়ক পাল্টেছে, কোচ পাল্টেছে। সব ঘটনার সব চরিত্রকে ধরলে শুধু একটাই নাম কমন। রাহুল শারদ দ্রাবিড়। স্টার-সিস্টেমে বিশ্বাস করি না, কিন্তু দ্রাবিড়ের প্রসেসকে তো সেলাম জানাতে পারি।

পুনশ্চ: সুনীল গাভাস্কার সাবালক হচ্ছেন না। ৭২ পেড়িয়ে ৭৩ হলো লিটল মাস্টারের। এবার তো অন্তত বোঝা উচিত – সেঞ্চুরি সেঞ্চুরি করে অহেতুক চাপ দেওয়া ঠিক নয়। বিয়ে হবার পর থেকেই ছেলে-মেয়ে কবে হবে? আর যবে হবে তবে হবে।

সব ঘটনা আবার মার্চে। ঘুরে ফিরে আবার ‘ম’, অতএব মোহাব্বতে দিয়েই শেষ করা যাক।

Mohabbat bhi zindagi ki tarah hoti hai; har mod aasaan nahi hota, har mod par khushi nahi hoti; par jab hum zindagi ka saath nahi chhodte; phir mohabbat ka saath kyun chhodein! মোহাব্বতের জায়গায় প্রসেস (প্রোগ্রেসিভ মাইন্ডসেট) বসিয়ে নিন। ব্যস, এটুকুই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link