দুজনই আশি-র ঘরে আটকা পড়েছেন। সেঞ্চুরি মিসের আক্ষেপ নিয়ে হেঁটেছেন প্যাভিলিয়নের দিকে। তবে ভারতের ইনিংসে শুরুর কালো মেঘ সরিয়ে আলো জ্বালিয়েছিলেন তাঁরাই। তাঁরা ইশান কিষাণ-হার্দিক পান্ডিয়া জুটি।
ভারতের ইনিংসে তখন ৬৬ রানে নেই ৪ উইকেট। শাহীন আফ্রিদির পেস তাণ্ডবে সাজঘরে ততক্ষণে ফিরে গিয়েছেন রোহিত শর্মা আর বিরাট কোহলি। তাদের পথ ধরে হারিস রউফের গতির কাছে হার মানেন শুভমান গিল, শ্রেয়াস আইয়ারাও। ভারতের ইনিংসের এমন নাজুক অবস্থার আরো কতটা প্রকট আকার ধারণ করে, তাতেই যেন চোখ ছিল সবার।
তবে পাকিস্তানি পেসারদের প্রতাপের পর দেখা মিলে ভারতের নয়নাভিরাম ব্যাটিং সৌন্দর্য্যও। টপ অর্ডারদের খেই হারিয়ে ফেলার দৃশ্যপটটা এরপরে বদলে দেন কিষাণ-পান্ডিয়া জুটি। ৬৪-৪ থেকে ঐ একই উইকেট রেখে ভারতের ইনিংসকে নিয়ে যান ২০০ এর ঘরে। গড়ে তোলেন ১৩৮ রানের মহাগুরুত্বপূর্ণ জুটি।
উইন্ডিজের বিপক্ষে ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ৩ টিতেই ফিফটি হাঁকিয়েছিলেন ইশাণ কিষাণ। ব্যাট হাতে বাহাঁতি এ ব্যাটার সেই ছন্দের দেখা মিলল এশিয়া কাপের মঞ্চেও। ৫ নম্বরে যখন তিনি ব্যাটে নামলেন, তখন পাকিস্তানি পেসারদের তাণ্ডবে রীতমত নাস্তানাবুদ হচ্ছিল ভারতীয় ব্যাটাররা। কিন্তু তিনি উইকেটে গিয়েই শুরু করলেন পাল্টা আক্রমণ।
আর এরপরই রক্ষণাত্মক খোলস থেকে বেরিয়ে আসতে শুরু করে ভারত। আর সেই যাত্রায় তাঁকে দারুণ সঙ্গ দেন হার্দিক পান্ডিয়া। দুজনের সাবলীল ব্যাটিংয়ে ভারতও শুরুর বিপর্যয় সামলে চ্যালেঞ্জিং স্কোরের ভিত্তি পেয়ে যায়।
দলীয় সংগ্রহের পাশাপাশি এ দুই ব্যাটারও পৌঁছে যান ব্যক্তিগত অর্ধশতকে। অর্ধশতকের পর দুজন ছুটেছিলেন শতকের পথেও। তবে শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। ৮১ বলে ৮২ রানের ইনিংস খেলে হারিস রউফের বলে আউট হন ইশান কিষাণ। ৯০ বলে ৮৭ রানের ইনিংস খেলে শাহীন আফ্রিদির স্লোয়ারে ধরা দেন হার্দিক পান্ডিয়া।
হার্দিক-কিষাণের জুটিতে ভারত লড়াই করার মতো সংগ্রহ ঠিকই পেয়েছে। তবে এ জুটির ব্যাটিংয়ে ৩০০ এর পথে হেঁটেও বাকিদের ব্যর্থতায় তা আর হয়ে ওঠেনি। শেষ ৬২ রান তুলতে ৬ টি উইকেট হারায় ভারত। ভারত অলআউট হয় নির্ধারিত ৫০ ওভারের ৭ বল বাকি থাকতেই, ২৬৬ রানে।
অবশ্য ক্যান্ডির পাল্লেকেল্লে স্টেডিয়ামের অতীত পরিসংখ্যান ভারতের আশার পালে হাওয়াই দিচ্ছে। ই মাঠে ওয়ানডে ফরম্যাটে প্রথম ব্যাট করা দলের গড় সংগ্রহ ২৪৮। সেখানে ভারত স্কোরবোর্ডে জমা করেছে ২৬৬ রান।
পাকিস্তানের জন্য ম্যাচ জিততে হলে পরিসংখ্যানকে তোয়াক্কা না করেই চলতে হবে। কারণ পাল্লেকেলেতে পরে ব্যাট করা দলের গড় সংগ্রহ ২০১ রান। তবে এই মাটিতে হওয়া ৩৭ ম্যাচের ২১ টিতেই জিতেছে পরে ব্যাট করা দল। পাকিস্তান নিশ্চয় এমন পরিসংখ্যানকে নিজেদের আনুকূল্যেই নিতে চাইবে। তবে এমন পুঁজি নিয়ে ভারতীয় বোলারাও তো ছাড় দিতে চাইবে না। ভারত-পাকিস্তান মহারণে পাল্টা হুংকার তো তাঁরাও দিতে চাইবে।