ভিনদেশে যায় চেনা

ভারতের ক্রিকেটে এখন পেস বোলারদের ছড়াছড়ি। জাসপ্রিত বুমরাহ, ভূবনেশ্বর কুমার কিংবা মোহম্মদ শামিরা নিজেদের নিয়ে গিয়েছেন সেরাদের কাতারে। এছাড়া মোহম্মদ সিরাজ কিংবা শারদুল ঠাকুরের মত একঝাক তরুণও পেসারও আছে ভারতের।

তবুও টেস্ট ক্রিকেটে, বিশেষ করে দেশের বাইরের তাঁদের সেরা অস্ত্রের নামটি সবচেয়ে কম উচ্চারিত হয়। গত কয়েক বছরে নিজের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে টেস্ট ক্রিকেটে যিনি নিজেকে ভারতের সেরায় পরিণত করেছেন, ছয় ফুট চার ইঞ্চির সেই পেস বোলারের নাম ইশান্ত শর্মা।

ভারতের ক্রিকেটে পেস বোলারদের নিয়ে আগের মত হাহাকারটা আর নেই। এই দেশ থেকে এখন নিয়মিতই উঠে আসছে বিশ্বমানের পেসার। তবুও দেশের বাইরে টেস্ট ম্যাচ হলেই যেন কপালে ভাঁজ পরে ভারতে। ভারতের সেরা পেসাররা নিজ দেশে যতটা ভয়ঙ্কর, দেশের বাইরেও কী ততটাই? যদিও সম্প্রতি মোহম্মদ সিরাজ কিংবা শার্দুল ঠাকুররা নিজেদের প্রমাণ করছেন তবুও তাঁদের এখনো পাড়ি দিতে হবে লম্বা পথ।

তবে একজন আছে যিনি দেশের বাইরে ভারতের পেস বোলিং অ্যাটাকের মূল শক্তি হয়ে উঠেন। অবাধ্য কন্ডিশনকে নিজের বশে নিয়ে আসেন। ৩৩ বছর বয়সী ইশান্ত শর্মার যত বয়স বাড়ছে ততই নিখুঁত হয়ে উঠছেন। গত কয়েক বছরে দেশের বাইরে নিজেকে ভারতের সেরা বোলার হিসেবে প্রমাণ করেছেন। অবশ্য ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসেরও দেশের বাইরে সফলতম বোলারদের একজন হয়ে উঠছেন ইশান্ত।

২০১৮ সাল থেকে টেস্টে ১৯.৯৭ গড়ে নিয়েছেন ৮৩ উইকেট। যার মধ্যে ৫৯ টিই এসেছে বিদেশের মাটিতে। এছাড়া সবমিলিয়ে দেশের বাইরে ইশান্তের ঝুলিতে আছে ২০৫ টি উইকেট। খুব দ্রুতই হয়তো জহির খান, কপিল দেবদের ছুঁয়ে ফেলবেন এই পেসার। ২০১৫ সাল থেকে বিদেশের মাটিতে যেই ৮০ টি উইকেট নিয়েছেন সেখানে তাঁর বোলিং গড় মাত্র ২২.২৬।

ওদিকে ভারতের তরুণ পেসার মোহম্মদ সিরাজও দেশের বাইরে নিজেকে প্রমাণ করছেন। এখন অবধি ভারতের হয়ে যেই ৭ টি টেস্ট খেলেছেন তাঁর ৫ টিই ছিল দেশের বাইরে। এই ৫ টেস্টে সিরাজে ঝুলিতে আছে ২৪ উইকেট। এছাড়া দেশের বাইরে তাঁর বোলিং গড় ২৬.৬৭। তবে অগ্রজ ইশান্তের মত হতে সিরাজকে এখনো পাড়ি দিতে হবে কঠিন পথ।

তবে দেশের বাইরে ভারতের এই ইশান্ত নির্ভরতা অনেকদিন ধরেই। দেশের বাইরে ভারত যেন ইশান্তের উপর অতিমাত্রায় নির্ভরশীল। ওদিকে ৩৩ বছর বয়সেও দলের চাহিদা পূরণ করে যাচ্ছেন এই পেসার। তবে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে এই পেসারকে ছাড়াই কাজটা করতে পেরেছিল সিরাজ, শারদুলরা।

লর্ডস টেস্টের প্রথম ইনিংসেও একই রকম উজ্জ্বল ছিলেন ইশান্ত। জস বাটলার, মঈন আলী ও স্যাম কুরানকে পরপর ফিরিয়ে ভারতকে ম্যাচে ফিরিয়ে এনেছিলেন। সবমিলিয়ে ৬৯ রান দিয়ে নিয়েছেন ৩ উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসেও মাত্র ১৩ রান দিয়েও নিয়েছেন ২ উইকেট। ওদিকের ইশান্তের পাশাপাশি এই ম্যাচেও সিরাজ নিজেকে প্রমাণ করেছেন। দুই ইনিংসেই নিয়েছেন ৪ টি করে উইকেট।

তবে প্রথম ইনিংসের ব্যক্তিগত ১৮ ওভার শেষে উইকেট শূন্যই ছিলেন ইশান্ত। আগের ইশান্ত হলে হয়তো আর ফিরে আসতে পারতেন না। তবে গত কয়েক বছরে এ যেন এক নতুন ইশান্ত। নিজের সাদামাটা দিনকেও তিনি রঙিন করে তুলতে পারেন। ম্যাচের যেকোন মুহূর্তেই ইশান্ত হয়ে উঠতে পারেন ভয়ঙ্কর, বিধ্বংসী।

লেখক পরিচিতি

আমার ডায়েরির প্রতিটা পৃষ্ঠাই আমার বাইশ গজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link