এমনটাই চেয়েছিলেন টেলর

নিজের ওপর একেবারেই বড় কোনো বিশ্বাস ছিল না তার। মনে করতেন, ওয়ানডেতে চললেও চলতে পারেন; টেস্টে তাঁকে দিয়ে হবে না।

সেই ২০০৬ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অভিষেক সিরিজে মোট ৪৬ রান করার পর ধরে নিলেন, ওয়ানডেটাও তাঁকে দিয়ে হবে না। তিনি ভেবেছিলেন, এখানেই ক্যারিয়ার শেষ।

তারপর কেটে গেছে আরো ১৫ টি বছর। না, পারফরম্যান্সের জন্য কোনো সময়ই রস টেলর শেষ হয়ে গেছেন বলে কেউ রায় দেয়নি। নীরবে একটু একটু করে বেড়ে উঠেছেন নিউজিল্যান্ডের সেরা হিসেবে। কেবল ওয়ানডে নয়, চুটিয়ে খেলেছেন টেস্ট ক্রিকেট।

আজ এই ২০২১ সালের শেষ লগ্নে এসে যখন অবসরের ঘোষণা দিলেন, তখন তিনি আক্ষরিক অর্থেই নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেটের ইতিহাসের সবচেয়ে সফল ব্যাটসম্যান। আর এই ক্যারিয়ারটা চলতি মৌসুম শেষেই শেষ করে দেওয়ার পরিকল্পনা জানালেন, জানালেন আর নয় বাইশ গজ।

হেসে বললেন, ‘আমি তো প্রথম সিরিজের পরই ভেবেছিলাম, আমি শেষ। সেখান থেকে এতো দূরে এসে যে বিদায় বলতে পারছি, এতেই খুশি আমি।’

টেলর চাইলে আরও কিছুকাল হয়তো চালিয়ে যেতে পারতেন। তিনি বলছেন যে, সেরকমই একটা পরিকল্পনা ছিলো। কিন্তু এই কোভিডকালে টানা কোয়ারেন্টিনে থাকতে থাকতে ক্লান্ত হয়ে একটু এগিয়ে আনলেন অবসরের সময়টা।

গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই এটা নিয়ে ভাবছিলেন বলে টেলর বললেন, ‘গত কয়েক সপ্তাহ ধরে আমার মাথায় এটাইবড় চিন্তা কাজ করছিলো। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজটা কাছে চলে এসেছে। আমার কোয়ারেন্টিন এবং সেখান থেকে ফেরা। এসব করতে করতে আসলে একটু ক্লান্ত। আমার মনে হয়, এর ফলে আমার সিদ্ধান্ত নেওয়াটা সহজ হয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলাটাও ভালো অভিজ্ঞতা হবে। তবে অস্ট্রেলিয়া হলো সেই জায়গা, যেখানে আমি বারবার খেলতে চাই। আর ওয়ানডে ফরম্যাটটা আমি সবচেয়ে বেশি উপভোগ করি। সেটা খেলে শেষ করতে পারাটা খুব ভালো ব্যাপার হবে।’

ওয়ানডে বা টেস্ট যাই বলেন, এই যে, নিজের ইচ্ছেতে শেষ করতে পারছেন, এটাকেই বড় ব্যাপার বলে বলছেন টেলর। অন্তত অচল বলে চলে যেতে হচ্ছে না তাকে। তিনি বলছিলেন, ‘নিজের মনমত শেষ করতে পারাটা দারুন ব্যাপার। আমি মনে করি, আমার ও আমার পরিবারের জন্য এটাই সেরা সময়। এটা ঠিক যে, আমার আরও কিছুদিন ক্রিকেট খেলে যাওয়া সম্ভব ছিলো। হয়তো আমি আরও কিছুদিন জোর করে চালিয়ে তারপর অবসর নিতে পারতাম। কিন্তু আজকের যুগে সেটা করাটা ঠিক না।’

এভাবে আগেভাগে জানানোয় শেষ ম্যাচটাতে তকাকে নিয়ে যে হইচই হবে, সেটা বুঝতে পারছেন টেলর। সারাজীবন হইচই থেকে দূরে থাকা টেলর এটা মেনেও নিয়েছেন ভক্তদের কথা ভেবে। তিনি বলছিলেন, ‘একটা বিদায়ী সম্বর্ধনা আমি আসলে খুব পছন্দ করার লোক নই। কিন্তু এটাও সত্যি যে, এটা হওয়া দরকার। আমি ব্যক্তিগতভাবে একটা স্ট্যাম্প তুলে নিয়ে চুপচাপ চলে যাওয়ার পক্ষের মানুষ। কিন্তু আমার পরিবার ও ভক্তদের তো আমাকে শেষবারের মত উইকেটে দেখতে আসার সুযোগ দিতে হবে।’

তাই হোক। সবাইকে সুযোগ দিয়েই বিদায় বলুন টেলর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link