বোলিংটা তাঁর স্বভাবজাত। টপ অর্ডার ব্যাটারদের ব্যর্থতার দিনে তিনি আবার হয়ে ওঠেন পুরোদস্তুর ব্যাটার। আর ফিল্ডিংয়ের সময় নান্দনিক ক্যাচ কিংবা শরীর ভাসিয়ে বাউন্ডারি বাঁচানো তো তাঁর রোজকার কাজ।
সময়ের ব্যবধানে রবীন্দ্র জাদেজা যেন হয়ে উঠেছেন অল ইন ওয়ান। তিনি বোলিং করতে পারেন, ব্যাট হাতে কার্যকরী ইনিংস খেলতে পারেন। আর নজরকাড়া ফিল্ডিং তো তাঁর ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই সঙ্গী হয়ে আছে।
পুনেতে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৩৮ রানে ২ উইকেট নিয়েছিলেন জাদেজা। যা বাংলাদেশকে অল্প রানে বেঁধে রাখতে দারুণ ভূমিকা রেখেছিল। তবে বাংলাদেশের দেওয়া ২৫৭ রান তাড়া করতে নেমে সেঞ্চুরি করে বসেন কোহলি। আর তাতেই ম্যাচ সেরা পুরস্কার উঠে যায় তাঁর হাতে।
ম্যাচ শেষের পর অবশ্য জাদেজাকে নিয়ে মজা করে বলেছিলেন, ‘জাড্ডু, এই পুরস্কারটা তোমার কাছ থেকে ছিলাম।’ কোহলির কণ্ঠেই স্পষ্ট সুর, সেঞ্চুরি না হলে ম্যাচ সেরার পুরস্কার পেতে পারতেন জাদেজাই।
জাদেজা ম্যাচ সেরা হন নি৷ তাতে ন্যূনতম আক্ষেপও থাকার কথা নয় জাদেজার। কারণ শেষ বেশ ক’বছর ধরে তিন ফরম্যাটেই ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করে যাচ্ছেন তিনি। ২০২২ সাল থেকে বিশ্ব ক্রিকেটে তৃতীয় সেরা বোলিং ইকোনমি তাঁর। জাদেজার চেয়ে এগিয়ে আছেন মাত্র দুজন, সাকিব আর কেশব মহারাজ।
তবে জাদেজা সবাইকে ছাড়িয়ে গিয়েছেন অন্য জায়গায়। বেশির ভাগ সময়ে মিডল ওভারগুলোতে বল করা জাদেজা ডেথ ওভারেও নিজের মুনশিয়ানা দেখিয়েছেন। ১৩ ইনিংসে মাত্র ৩.৭৪ ইকোনমিতে বোলিং করেছেন তিনি৷
এ ছাড়া বাঁ-হাতি ব্যাটারদের বিপক্ষে দারুণ সফলতা দেখিয়েছেন জাদেজা। সাধারণ বাঁ-হাতি ব্যাটারদের বিপক্ষে বল করতে গিয়ে বাঁ-হাতি স্পিনারদের কিছুটা বেগ পেতে হয়। কিন্তু প্রতি ২৪ রানের বিপরীতে একজন বাঁ-হাতি ব্যাটারকে আউট করেছেন জাদেজা।
বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত জাদেজার ঝুলিতে যোগ হয়েছে ৪ ম্যাচে ৭ উইকেট। তবে এ সময়ে মাত্র ৩.৭৫ ইকোনমি রেটে বোলিং করেছেন বাঁ-হাতি এ স্পিনার। এর চেয়ে কম ইকোনমি রেটে এবারের বিশ্বকাপে বল করেননি আর কোনো বোলার।
ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং— অলরাউন্ডারদের ভুবনে নতুন সাম্রাজ্য তৈরির পথেই এগোচ্ছেন জাদেজা। টেস্টে ক্রিকেট এই মুহূর্তে নাম্বার ওয়ান অলরাউন্ডার তিনি।
ওয়ানডে ফরম্যাটে ব্যাটিংয়ের সুযোগ কম পান বিধায় অলরাউন্ডার স্বত্ত্বায় নিজের জাতটা চেনানোর সুযোগও পান কম। তবে যতটা পাচ্ছেন, তাতে নিজেকে মেলে ধরছেন দারুণ ভাবে। জাদেজার এই দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলাটা তাঁকে রীতিমত করে তুলছে অপ্রতিরোধ্য এখ ক্রিকেটার হিসেবে।