পার্থে মাঠের লড়াই ছাপিয়ে, কথার লড়াইও জমে উঠেছে। হার্শিত রানাকে স্টার্ক বলেছিলেন যে তিনি তার (হার্শিত) থেকেও জোরে বল করতে পারেন। কিন্তু ব্যাট হাতে বাইশ গজে নেমে যশ্বসী জয়সওয়াল দিয়েছেন সেই মন্তব্যের উত্তর। তিনি স্টার্ককে উদ্দেশ্য করে বলে বসেছেন, ‘খুব ধীর গতিতে আসছে।’
শুধু যে মুখে মন্তব্য করেই ক্ষান্ত হয়েছেন জয়সওয়াল, তা কিন্তু নয়। ব্যাট হাতেও প্রমাণ করেছেন নিজের দৃঢ়তা। প্রথম ইনিংসের ব্যর্থতা ভুলে দ্বিতীয় ইনিংসে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় নিয়ে মাঠে নেমেছে ভারত। অজি পেসারদের দাপটকে রীতিমত নিষ্ক্রিয় করে দিয়েছেন জয়সওয়াল।
কোন প্রকার প্রলোভনের ফাঁদেও পা দিচ্ছেন না তিনি। স্লেডিংজের চাপে পড়ে হারাচ্ছেন না মেজাজও। উলটো অজি পেস আক্রমণের সবচেয়ে অভিজ্ঞ পেসারকে তাঁতিয়ে তোলার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। বয়সটা তার মোটে ২৩ ছুঁইছুঁই। কিন্তু এই বয়সেই তার টেস্ট গড় ছাপিয়ে গেছে ৫০ এর গণ্ডি। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পার্থ টেস্টেও তুলে নিয়েছেন হাফ-সেঞ্চুরি।
এটি টেস্টে তার অষ্টম হাফ-সেঞ্চুরি। মাত্র ১৫টি টেস্টের মধ্যে তিনটি সেঞ্চুরির দেখা পেয়ে যাওয়া জয়সওয়াল হাফ-সেঞ্চুরিতেই থেমে থাকতে চান না। তিনি বরাবরই নিজের ইনিংসকে লম্বা করতে চান। সে প্রচেষ্টার ব্যতিক্রম ঘটেনি বোর্ডার-গাভাস্কার সিরিজের প্রথম টেস্টেও।
অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে প্রথমবারের মত টেস্ট ম্যাচ খেলতে নেমেছেন জয়সওয়াল। কিন্তু তার বাচনভঙ্গিতে নেই কোন জড়তা। অবিশ্বাস্য এক স্থিতিশীলতা আর শীতল মস্তিষ্ক নিয়ে তিনি সামলে যাচ্ছেন সুইং, বাউন্স আর প্রতিপক্ষে কটু কথা। তবুও হিমালয়ের মত ঠায় দাঁড়িয়ে থাকার চেষ্টা নিমজ্জিত থেকেছেন তিনি, যতক্ষণ পাওয়া গেছে সুযোগ।
এমন অটল মানসিকতাই হয়ত একদিন জয়সওয়ালকে নিয়ে যাবে সত্যিকারের হিমালয়ের উপর। সেসব না হয় হবে সময়ের সাথে সাথে। আপাতত তিনি অজি বধের গল্প লিখতে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন বাইশ গজে।