২০২০ সালে তিনি এই বাংলাদেশের বিপক্ষেই হেরে গিয়েছিলেন ফাইনালে। ভারতের জন্য অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের শিরোপা জিতে যাওয়াটা খুবই নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা। তারপরও দক্ষিণ আফ্রিকার সেই দিনটা নিশ্চয়ই আক্ষেপে ভাসিয়েছিল যশস্বী জয়সওয়ালকে।
আক্ষেপের আগুণে পুড়ে তিনি নিজেকে তিল তিল করে গড়ে তুলেছেন। সৌজন্যে ভারতের ক্রিকেট কাঠামো। ভারতের ক্রিকেট কাঠামো রত্নের যত্ন নিতে জানে। সেজন্যই যশস্বীর আজ এত যশ খ্যাতি। তিনি ভারতীয় ক্রিকেটেরই বিরাট এক আবির্ভাব। আন্তর্জাতিক ময়দানে দাপিয়ে বেড়ানো এই ব্যাটারের আগুনটা এবার টের পেল সেই বাংলাদেশ দল।
২০২০ সালের যুব বিশ্বকাপের আসরের অবিসংবাদিত সেরা ক্রিকেটার ছিলেন জয়সওয়াল। ফাইনালেরও সেরা ব্যাটার। কিন্তু, দলগত পারফরম্যান্সের বিচারে সেদিন ভারতকে ছিটকে ফেলতে পেরেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু, যুব পর্যায়ে পাশাপাশি হাঁটা দলটিই খেই হারিয়ে ফেলে মূল মঞ্চে এসে। এজন্যই আন্তর্জাতিক ময়দানের টেস্ট পরিসরে বাংলাদেশ জাতীয় দলকে অবলীলায় উড়িয়ে দিতে জানেন জয়সওয়ালরা।
সেই পার্থক্যটা গড়ে দেয় ভারতীয় ক্রিকেটের কাঠামো। সেই কাঠামোতে রঞ্জি ট্রফি, দুলীপ ট্রফি, আইপিএল কিংবা সৈয়দ মুশতাক আলী ট্রফি – অনেক কিছুই আছে। এত সব ক্রিকেটের মাঝে থেকে, উন্নত সব কোচদের সাথে কাজ করার সুযোগ পেয়ে জয়সওয়ালরা হয়ে ওঠেন নেক্সট বিগ থিঙ। বাংলাদেশকে স্রেফ উড়িয়ে দেওয়াই নয়, তাঁরা নিজেদের বিশ্বসেরা বানানোর মানসিকতা নিয়ে গড়ে তুলতে শেখেন।
শিখে শিখেই এবার তিনি উচিৎ শিক্ষাটা দিতে পারলেন বাংলাদেশের টেস্ট দলকে। চেন্নাই থেকে কানপুর – চারটা ইনিংসেই খেলেছেন জয়সওয়াল। এর তিনটিতেই হাফ-সেঞ্চুরি। এর মধ্যে যে কানপুরে যে মোটে দু’দিনের মত সময় খেলাার সুযোগ পেয়েই বাংলাদেশকে হারিয়ে দিতে পারল ভারত – তাঁর কৃতিত্ব অবধারিত ভাবে অনেকটাই এই জয়সওয়ালের।
বাংলাদেশের বিপক্ষে জয়সওয়ালের ব্যাটিং গড় এখন ৬৩। তিনি এর চেয়ে বেশি গড় নিয়ে খেলেছেন ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। এর মধ্যে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে হোম সিরিজে খেললেও, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তাঁর রান এসেছে ভিন্ন কন্ডিশনে। ফলে, কন্ডিশনের সাথেও নিজেকে মানিয়ে নিতে শিখে যাচ্ছেন জয়সওয়াল। এই জয়সওয়ালরা জিতে গেলেই তো বারবার জিতে যায় ভারত!