জাকের সত্যিকার অর্থেই সাত নম্বরের সমাধান

যদিও দিনটা হয়নি জাকেরের। দিনটা হয়নি বাংলাদেশের। এমন বিধ্বংসী এক ইনিংস খেলেও জাকেরকে হতাশ বদনে ছাড়তে হয়েছে মাঠ।

২০০ স্ট্রাইকরেট! ছয়টা ছক্কা, চারটা চার। কি অসাধারণ এক ইনিংসই না খেলে গেলেন জাকের আলী অনিক। জাতীয় দলের হয়ে পাওয়া সুযোগের প্রথম দিনেই জাকের নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ রাখলেন। বুঝিয়ে দিলেন, পরিণত হয়েই তিনি এসেছেন। তিনি বাংলাদেশের শত সন্ধানের শেষ ফলাফল হয়েই এসেছেন।

যদিও দিনটা হয়নি জাকেরের। দিনটা হয়নি বাংলাদেশের। এমন বিধ্বংসী এক ইনিংস খেলেও জাকেরকে হতাশ বদনে ছাড়তে হয়েছে মাঠ। দলকে যে জয় এনে দিতে পারেননি তিনি। দলের জয়টাকে একহাত দূরত্বে রেখেই যে তিনি হেঁটেছেন প্যাভিলিয়নের পথে।

তবে তিনি যা করে দেখিয়েছেন, তা সত্যিকার অর্থেই প্রশংসার দাবি রাখে। তিনি যা করে গেলেন তাতে অন্তত খানিকটা স্বস্তিই খুঁজে নেওয়া যায়। জাকেরই তো জয়ের শেষ আশা হয়ে টিকে ছিলেন বাইশ গজে। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের অসমাপ্ত কাজটুকু শেষ করবার প্রয়াশই তো তিনি করে গেছেন।

একটা সময় ১০ বলে ১১ রান নিয়ে স্রেফ অপেক্ষা করেছেন জাকের। কেননা অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ যে তখনও ছিলেন ড্রাইভিং সিটে। অভিজ্ঞ এই ব্যাটারকে সঙ্গ দিয়ে যাওয়াই ছিল তার প্রধান কাজ। তিনি তাই করেছেন। এরপর মাহমুদউল্লাহ ৫৪ রানে আউট হলে, নিজের খোলস ছেড়ে বেড়িয়ে আসতে শুরু করেন জাকের। মারকাটারি সব শটের ঝুলি খুলে বসেন।

শ্রীলঙ্কান বোলারদের দিশেহারা করে তোলেন তিনি। নিজের ইনিংসের ছয়টা ছক্কা হাঁকানোর আগে পর্যন্ত একটিও চার আসেনি তার ব্যাট থেকে। অসামান্য দক্ষতার পরিচয় দিয়ে গেছেন পুরোটা সময় ধরে। আকাশ ছুঁতে চাওয়া আস্কিং রানরেটের সাথে পাল্লা দিয়ে রান তুলেছেন জাকের।

৩৪ বলে তার খেলা ৬৮ রানের ইনিংসটিতেই জয়ের শেষ স্ফুলিঙ্গটি জ্বলে উঠেছিল। যদিও তার প্রস্থানেই সে আশার প্রদীপ দপ করে নিভে যায়। পরাজয় ছাপিয়ে জাকেরের এই ইনিংসটি অন্তত বলে যায়, তিনি ভুল পছন্দ নন। তার প্রতি এতদিন অবহেলায় হয়েছিল। ভাগ্যিস দেশসেরা কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন ওমন বিস্ফোরক মন্তব্য করেছিলেন।

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ চলাকালীন সময়ে একদিন সালাহউদ্দিন বলেন, ‘জাকেরের কথাটা সবসময় আপনারা হয়ত ভুলে যান কেউ জিজ্ঞেস করেন না। ছেলেটা একটু কালো যে কারণে আমার মনে হয় বোর্ডও তাকে দেখে না ঠিকমত। দেশের জন্য আপনারা সাত নাম্বারে প্লেয়ার খোঁজেন। সে গত কয়েক বছরে খুবই ভালো খেলছে। তার স্ট্রাইক রেট যদি দেখেন সে প্রতিটা দিনই আমাদের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে রানটা করে দিয়ে আসে। সে অনেক সেন্সিবল। আমার মনে হয় এই ছেলেটাকে সুযোগ দেওয়া উচিত।’

এরপরই আলিস আল ইসলামের ইনজুরিতে জাকের আলীকে সংযুক্ত করা হয় স্কোয়াডে। অন্তত জহুরির চোখ যে একেবারেই ভুল রত্ন বাছাই করেননি, সেটা প্রমাণের দায়িত্ব ছিল জাকেরের হাতে। গুরু সালাউদ্দিনের মান যেমন বাঁচিয়েছেন জাকের, তেমনি বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্টের দুশ্চিন্তাই যেন ঘোচালেন তিনি।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...