আমরা কি বড্ড তাড়াহুড়ো করে ফেললাম? জাকের আলী অনিককে শুধু টি-টোয়েন্টির বিবেচনায় সমালোচনার আঁস্তাকুড়ে ছুড়ে ফেলেছিলাম সকলে মিলে। কিন্তু আদোতে এত দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া কি ঠিক হয়েছে?
আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে অভিষেক হয়েছে জাকেরের। ভাগ্যক্রমে একাদশে সুযোগ পেয়েছেন তিনি। মুশফিকুর রহিম ইনজুরির কারণে ছিটকে গেছেন। তার বদলে উইকেটের পেছনে দায়িত্ব পালন করবেন বলেই একাদশে জাকেরের অন্তর্ভুক্তি।
তবে ব্যাট হাতে কার্যকর একটা ইনিংস খেলে গেলেন তিনি। শারজাহের স্লো উইকেটে পরিস্থিতির চাহিদা মেনে ব্যাটটা চালিয়ে গেছেন তিনি। ২৭ বলে ৩৭ রানের ঝকঝকে এক ইনিংস খেলেছেন। সাত নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ব্যাট চালিয়েছেন প্রায় ১৩৭ স্ট্রাইক রেটে।
তিনি যখন ব্যাট হাতে বাইশ গজে এসেছেন, তখন প্রতিষ্ঠিত ব্যাটারদের প্রায় সবাই প্যাভিলিয়নে ফিরেছেন। তিনি মূলত জুটি গড়েছেন টেল এন্ডার ব্যাটারদের সাথে। ১৮৩ রানের সময় তিনি মাঠে নেমেছিলেন তিনি। এরপর দলের সংগ্রহ নিয়ে গেছেন ২৫২ অবধি। যেখানে উপড়ের দিকে অধিকাংশ ব্যাটারই ব্যাট চালাতে হিমশিম খেয়েছেন, সেখানে যথাযথ প্রয়োজন মেনে ব্যাট চালিয়েছেন তিনি।
অভিষেক ম্যাচেই দায়িত্বশীল ফিনিশার রুপে হাজির হয়েছেন জাকের। এছাড়াও টেস্টের অভিষেক ম্যাচে অর্ধশতক এসেছিল তার ব্যাট থেকে। টি-টোয়েন্টিতে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৬৮ রানের একটি দূর্দান্ত ইনিংস দিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন। এরপর টুকটাক ব্যাট চালিয়েছেন। কিন্তু আকাশচুম্বী প্রত্যাশার প্রতিদান দিতে ব্যর্থ হয়েছিলেন।
টি-টোয়েন্টির সেই ব্যর্থতায় তাকে বাতিলের খাতায় ফেলতে বসেছিলেন অনেকে। অফ সাইডে বেশ লিমিটেড শট তার। টেকনিক্যাল লুপহোল রয়েছে। সেসব মিলিয়ে তার নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে একজন খেলোয়াড়কে দ্রুতই ছুড়ে ফেলার সিদ্ধান্তই বরং প্রশ্নের উদ্রেক ঘটায়।
ঘরোয়া ক্রিকেটের দূর্বলতা একজন খেলোয়াড়কে যথাযথ প্রস্তুতি নিতে সহয়তা করে না। এই আলোচনা তো নতুন নয়। তাইতো একজন খেলোয়াড়কে আন্তর্জাতিক সার্কিটে এসেই নিজেকে নতুন করে প্রস্তুত করতে হয়। সে সুযোগের সময়ে আমরা সকলে মিলে জাকেরকে বাতিলে খাতায় ফেলেছিলাম। তিনি বরং আরেকটু সুযোগ পেতেই পারেন।