ভোর হল দোর খোল

দিনের প্রথম সেটের ম্যাচেই বিদায় ঘন্টা বেজে গেছে বেলজিয়ামের। টানা দ্বিতীয়বার গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় নেবার প্রবল আশঙ্কা নিয়ে কোস্টারিকার বিরুদ্ধে খেলতে নামে জার্মানি। ৪-২ গোলের জয়ও যথেষ্ট হলো না নক আউটে যাবার জন্য। আবারো জার্মানীর জন্যে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে সূর্যোরয়ের দেশ জাপান।

খেলার শুরু থেকেই চিরাচরিত জার্মান পাওয়ার ফুটবলের প্রদর্শনী দেখাতে থাকে ৪ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। খেলার ৯ মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারত জার্মানি। টমাস মুলার গোলের সহজ সুযোগ মিস করেন। তবে লিড নিতে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি তাদের। ১০ মিনিটে গ্যানাব্রির অসাধারণ হেডে ১-০ গোলে এগিয়ে যায় জার্মানি। জার্মান জার্সিতে ২১ তম গোল এটি তার। লিড নিয়েও আক্রমণের ধার কমায়নি জার্মানরা। ১৪ মিনিটে গোরেস্কার হেড কেইলর নাভাস ফিরিয়ে না দিলে ব্যাবধান দ্বিগুণ হতো জার্মানদের। প্রতি আক্রমণে উঠছিলো কোস্টারিকাও। ৪২ মিনিটে সহজতম সুযোগ মিস করে তারা।

দ্বিতীয়ার্ধেই খেলায় ফেরে কোস্টারিকা। ৫৮ মিনিটে তেজেদার গোলে ১-১ এ সমতায় ফেরে তারা। ৭০ মিনিটে খেলার স্রোতের বিপরীতে ভারগাসের গোলে খেলায় লিড নেয় কোস্টারিকা। ততক্ষন পর্যন্ত বেঁচে ছিলো তাদের নক আউটের আশাও। কিন্ত সেই আশা টেকেনি বেশিক্ষণ। হাভার্ৎজে গোলে ২-২ গোলে সমতা ফেরে খেলায়। ৭৬ মিনিটে নাভাসের অতিমানবীয় সেভে গোল বঞ্চিত হয় জার্মানরা। এরপর আক্রমণ প্রতি আক্রমণে জমে উঠে খেলা। খেলার ৮৫ মিনিটে হাভার্ৎজ এর দ্বিতীয় গোলে আবারো লিড নেয় জার্মানরা। ৮৯ মিনিটে ফুলক্রুগের গোলে ৪-২ গোলে এগিয়ে যায় জার্মানি।

নিজেদের খেলার পাশাপাশি গ্রুপের অন্য ম্যাচেও নজর রাখতে হচ্ছিল জার্মানীকে। স্পেনের জয়ই তাদের নক আউটে নিয়ে যেতে পারত। কিন্তু জাপান রূপকথা আটকে দিলো জার্মান যন্ত্র। এই জয় সত্ত্বেও অন্য ম্যাচে জাপানের জয়ের ফলে গ্রুপ পর্ব থেকেই বাদ পড়লো জার্মানি। ২০১৮ এর পর টানা দ্বিতীয়বার লজ্জাজনক বিদায় ৪ বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের।

অন্য খেলায় বিশ্বকাপে আরো একটি অঘটন ঘটিয়ে আবারো রূপকথা রচনা করলো জাপান। ম্যাচের শুরুতেই বল দখলে নিজেদের আধিপত্যের জানান দেয় স্পেন। মাত্র ৮ মিনিটেই সুযোগ পেয়েছিল তাঁরা। কিন্তু বুসকেটসের শট চলে যায় গোলবারের বাইরে দিয়ে। তবে গোলের জন্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি স্পেনকে। ১১ মিনিটের মাথায় আজপিলিকুয়েতার ক্রস থেকে দারুণ হেড করে দলকে এগিয়ে দেন মোরাতা। জাতীয় দলের জার্সি গায়ে ৬০ ম্যাচে এটি তার ৩০তম গোল।

ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই দানের গোলে সমতায় ফেরে জাপান। এর ঠিক ২ মিনিটের মাথায় মিতোমার ক্রস থেকে গোল করেন তানাকা। কিন্তু মিতোমা বলটি ক্রস দেওয়ার আগে সেটি গোল লাইন অতিক্রম করে বাইরে গিয়েছিল কিনা সেটি দেখতে রেফারি ভিএআর এর সহায়তা নেয়। যেখানে খালি চোখে বলটি বাইরে গেছে দেখালেও রেফারি এটিকে বৈধ বলে ঘোষণা দেয় ফলে জাপানও পায় ২-১ গোলের লিড। এরপর খেলায় ফেরায় প্রবল চেষ্টা করতে থাকে লুইস এনরিকের শিষ্যরা। কিন্তু জাপানের রক্ষণ দুর্গ ভেদ করা সম্ভব হয়নি ২০১০ এর চ্যাম্পিয়নদের।

এই জয়ের ফলে জাপান রূপকথা চলছেই। জার্মানির পর স্পেনকে হারিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে দ্বিতীয় রাউন্ডে গেলো ব্লু সামুরাইরা। জাপানের কাছে হেরে রানারআপ হয়ে নক আউটে গেলো স্পেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link