শেষ পাঁচ ওভারে জয়ের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার দরকার ছিল ৩০ রান। সেখান চার ওভারে ভারত রান দিল মোটে ১৪ টা। সৌজন্যে জাসপ্রিত বুমরাহ, ডেথ বোলিংয়ে দুই ওভারে পান এক উইকেট, হজম করেন মাত্র ছয় রান। ম্যাচটা কার্যত সেখানেই শেষ।
শেষ ওভারে জিততে দক্ষিণ আফ্রিকার দরকার ১৬ রান, আকাশ সমান এক লক্ষ্য। প্রথম বলেই হার্দিক পান্ডিয়ার ফুলটস। স্ট্রাইকে ডেভিড মিলার। সেখান থেকে তিনি ছক্কা হাঁকাতে গিয়েছিলেন মিলার। এই কাজটা এখনকার সময় তাঁর চেয়ে ভাল আর কেই বা পারেন। কিন্তু শেষ রক্ষা আর হল কোথায়!
বাউন্ডারি লাইনে ক্রিকেট ইতিহাসেরই সেরা ক্যাচটা সম্ভবত ধরে ফেললেন সুরিয়াকুমার যাদব। ব্যাস, ১৭ বছর পর আবারও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জিতল ভারত। ২০০৭ সালে দলের সেই নবীন সদস্যটা ক্যারিয়ারের শেষ বেলায় এসে অবশেষে একটা আইসিসি ইভেন্টের শিরোপা হাতে নেওয়ার সুযোগ পেল।
ভারতের জন্য এই ক্ষেত্রটা বোলিংয়ে একমাত্র একজন মানুষই করে দিয়ে গেছেন। তিনি আর কেউ নন, বুম বুম বুমরাহ। বার্বাডোজের বিশুদ্ধ ব্যাটিং উইকেটে এমন ইকোনমিক বোলিং করা সবার জন্য সম্ভব নয়। সেই অসম্ভবকে সম্ভব করাও এই বুমরাহর চেয়ে ভাল আর কেউ জানেন না।
চার ওভার বোলিং করে রান দিয়েছেন মাত্র ১৮ রান। দু’টো জরুরী উইকেট। রান দিয়েছেন গুণে গুণে। ইকোনমি রেট মাত্র ৪.৫। দুই দলের মধ্যে পার্থক্য গড়ে দিয়েছেন এই বুমরাহই।
এটা গোটা বিশ্বকাপেরই চিত্র। ১৫ টা উইকেট এই ডান হাতি পেসার পেয়েছেন গোটা আসর জুড়ে, টুর্নামেন্টের তৃতীয় সর্বোচ্চ। ইকোনমি রেট ৪.১৭ – যা কিনা টুর্নামেন্টের সেরা। অমরত্ব ছোঁয়ার জন্য এর চেয়ে বেশি কিছু দরকার হয় না।
দুই বছর আগে সেমিফাইনাল থেকে এই বিশ্বকাপের মঞ্চ থেকে বাদ পড়েছিল ভারত। সেবার দলেই ছিলেন না। থাকবেন কি করে, তিনি যে ইনজুরি নিয়ে লম্বা সময়ের জন্য চলে গিয়েছিলেন মাঠের বাইরে।
ভারতের মত সেই দু:খ তাই বুমরাহ’রও কম নয়। দু’বছর পর তিনি ফিরেছেন। ভারতও ১৩ বছর পর কোনো বিশ্বকাপের শিরোপা জিতল। বার্বাডোজে ফিরে আসল ভারতীয় রূপকথার রাত। আর এই রূপকথার নায়ক একজনই – জাসপ্রিত বুমরাহ, রিমেম্বার দ্য নেইম! অনেকে আসবেন, যাবেন – কিন্তু ভারতীয় ক্রিকেটে আজীবন বেঁচে থাকবে এই একটা নাম। স্বর্গীয় চেয়ারে তাঁর আসন নিশ্চিত হল।