বাবা জাহাঙ্গীর আলম লম্বা একটা সময় খেলেছেন বাংলাদেশ দলে; চাচা জুয়েল হোসেন মনাও গায়ে জড়িয়েছিলেন বাংলাদেশের জার্সি। যার রক্তেই মিশে আছে ক্রিকেট সেই জিসান আলম যে বড় ক্রিকেটার হওয়ার লক্ষ্যে ছুটবেন সেটা তো জানা কথাই। বয়সভিত্তিক দল, ঘরোয়া ক্রিকেটে নিজেকে প্রমাণের পর এবার হাইপারফরম্যান্স ইউনিটের হয়ে বিদেশের মাটিতেও আগুন ঝরালেন তিনি।
টপ এন্ড টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে বাংলাদেশ এইচপি দল এখন আছে অস্ট্রেলিয়ায়, নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে তাসমানিয়ার বিপক্ষে আগে ব্যাটিংয়ে নেমেছিল তাঁরা। আর সেটার পূর্ণ ফায়দা নিয়েছেন তরুণ এই ব্যাটার। মাত্র ২৩ বল খেলে করেছেন ৩৮ রান, দুই চারের সঙ্গে তিন ছক্কায় ইনিংসটি সাজিয়েছেন তিনি। তাঁর এমন পারফরম্যান্সের কল্যাণেই পাওয়ার প্লের সর্বোচ্চ ব্যবহার সম্ভব হয়েছে।
টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে মেলবোর্ন রেনিগেডসের বিপক্ষে ভাল করতে পারেননি এই ডান-হাতি, সেই ক্ষোভ থেকেই বোধহয় এদিন শুরু থেকেই আগ্রাসী হয়ে উঠেছিলেন; বোলারদের কড়া শাসন করেছিলেন।
স্পিনার ম্যাকমিলানের বলে স্লগ সুইপ করে দুই ছয় কিংবা পেসার মন্টেগোমেরিকে লং অনের উপর দিয়ে উড়িয়ে পারতে জায়গা থেকে নড়তে হয়নি তাঁকে। বটম হ্যান্ডের শক্তি ব্যবহার করেই বাউন্ডারি বের করেছেন তিনি। ঘরোয়া ক্রিকেটেও এমন আক্রমণাত্মক ইনিংস রয়েছে তাঁর, তাই তাসমানিয়ার বিপক্ষে ইনিংসকে মোটেই ফ্লুক বলা যায় না।
জিসানের প্রিয় খেলোয়াড় রোহিত শর্মা, পছন্দের কারণ রোহিতের ভয়ডরহীন ব্যাটিং। তিনি নিজেই সেজন্য হেঁটেছেন একই পথে; রোহিতের মতই বোলারদের এতটুকু সুযোগ দিতে নারাজ। দু’জনের ব্যাটিং স্টাইলেও মিল আছে অনেক, দ্রুত রান তোলাই লক্ষ্য তাঁদের।
না, এই প্রতিভাবানকে বাংলাদেশের হিটম্যান বলে বাড়াবাড়ির দরকার নেই। তিনি স্বকীয়তা নিয়েই নিজেকে গড়ে তুলুক বাংলাদেশ দলের জন্য। এই উদীয়মান তারকা যেভাবে খেলেন তাতে তিনি ব্যর্থ হতে পারেন কোন কোন দিন, কিন্তু সেই ব্যর্থতা যেন তাঁর অ্যাপ্রোচে প্রভাব ফেলতে না পারে – তাঁকে যেভাবে খেলতে দেখছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা সেভাবেই দেখতে চান সবসময়।