জুড বেলিংহ্যাম, তুরুপের তাস

বিশ্বকাপের সেরা ম্যাচআপ। ইংল্যন্ডের সব আছে, কিন্তু একটা কিলিয়ান নেই। কিন্তু কারুরই তো জুড নেই। জুড বেলিংহ্যাম। বল ধরলে সময় থমকে যায়। মাঠের ঘাসরাও আন্দোলিত হয়। জুডকে দেখার জন্য দাঁড়িয়ে আছে সময়, সপ্তাহান্তে পাথরের দুর্গে যদি একটা ঘাসফুলের দেখা পাওয়া যায়। কান পেতে আছি জুড, হেই জুড।

বিশ্বকাপে ইংল্যন্ড ফুটবল দলের হাতে সমস্ত অস্ত্র মজুদ। ফরোয়ার্ড লাইনে কেন না থাকলে ক্যালাম উইলসন আছেন। দুই উইং-এ ফডেন আর সাকা অথবা স্টার্লিং গ্রিলিস আর রাশফোর্ড। মাঝমাঠে ডেক্লান রাইস আর ক্যালভিন ফিলিপ্স, একটু উপরে মেসন মাউন্ট।

ডান পাশে রিস জেমস না থাকলেও রয়েছেন টিএএ, রয়েছেন কিএরন ট্রিপিয়ার। বাঁদিকে রয়েছেন লিউক শ। মাঝখানে বেন হোয়াইটের চোট হলেও রয়েছেন হ্যারি ম্যাগুইর। যিনি লাল রং-এ ছড়ালেও ইংল্যন্ডের জার্সিতে ইমমুভেবল ওয়াল, অনড় দেওয়াল।

সঙ্গে সিটির স্টোন্স বা টটেনহ্যামের এরিক ডায়ার। চোট কাটিয়ে ফিরে এসেছেন কাইল ওয়াকার। তিন ব্যাক সিস্টেমের ডানদিকের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। গোলে পিকফোর্ডের বল প্লেয়িং ক্ষমতা সেরকম না হলেও শট স্টপার হিসাবে মন্দ না।

অথচ এই ইংল্যন্ড দলটায় রয়েছে একটি উনিশ বছরের ছেলে। প্রথম একাদশের একমাত্র, যিনি ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলেন না। গত বছর যখন ট্রানস্ফার জানলা খোলা ছিল, তখন কথা শুনছিলাম, এ বছর হাল্যান্ডকে ছাড়বে বরুশিয়া ডর্টমুন্ড আর পরের বার জুড। হেই জুড, জুড বেলিংহ্যাম, বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের অধিনায়ক, ইংল্যন্ডের আর্মব্যান্ডহীন অধিনায়ক, ব্যান্ডমাস্টার জুড, উনিশ বছরের জুড।

জুড বল ধরলে মাঠটা স্লো মোশনে চলতে থাকে, বাঁদিকের একটা হাফস্পেসে অপারেট করেন জুড, যেখানে নীল সাদার হুয়ান রোমান রিকেলমে করতেন, যেখানে নীল সাদার জিনেদিন জিদান করতেন। যাঁরা বল পায়ে পেলে, বৃষ্টির ফোঁটায় প্রতিবিম্ব দেখা যেত, জুডের দেখা যায়। জুড মিড ব্লকের প্রথম প্রেস, জুড প্রথম আক্রমণের কুঁড়ি, জুড পাথর কোঁদা সিস্টেমের একমাত্র তুলির টান।

আর এই জুডকে ঘিরেই স্বপ্ন দেখছে তিন সিংহের সমর্থকরা। ৫৫ বছর হয়ে গেল, কেউ কথা রাখেনি। সামনে অদম্য শক্তির কিলিয়ান এমব্যাপের ফ্রান্স। কিন্তু তবু স্বপ্ন দেখছে ইংল্যন্ড, জুডের জন্যই স্বপ্ন দেখছে, পরের সপ্তাহান্তে জুড মাঝমাঠের দখল নেবে আর ইংল্যন্ড নেবে কাপের, তার পরের সপ্তাহান্তে।

বিশ্বকাপের সেরা ম্যাচআপ। ইংল্যন্ডের সব আছে, কিন্তু একটা কিলিয়ান নেই। কিন্তু কারুরই তো জুড নেই। জুড বেলিংহ্যাম। বল ধরলে সময় থমকে যায়। মাঠের ঘাসরাও আন্দোলিত হয়। জুডকে দেখার জন্য দাঁড়িয়ে আছে সময়, সপ্তাহান্তে পাথরের দুর্গে যদি একটা ঘাসফুলের দেখা পাওয়া যায়। কান পেতে আছি জুড, হেই জুড।

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...