দু’হাতে বল করতে পারেন, নিয়মিত করেনও – ক্রিকেট বিশ্বের নজর পেতে কামিন্দু মেন্ডিসের জন্য এতটুকুই যথেষ্ট ছিল। তবে এসব তুচ্ছ কারণে তিনি লাইমলাইট পেতে চাননি তাই তো বনে গিয়েছেন অতিমানবীয়, অলৌকিক একটা মেশিন; যে মেশিন থেকে কেবল রানের স্রোত নামে। আট ম্যাচে পাঁচ সেঞ্চুরি আর চার ফিফটি অন্তত সেই কথাই বলে।
সবশেষ গল টেস্টে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি করেছেন এই ব্যাটার; সিরিজের আগের টেস্টেও ১১৪ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেছেন তিনি। লোয়ার মিডল অর্ডার থেকে পাঁচ নম্বরে উঠিয়ে আনার প্রতিদান সম্ভাব্য সেরা উপায়েই দিলেন বটে।
২০২২ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অভিষেক হয়েছিল এই বাঁ-হাতির। ৬১ রানের ইনিংসে সেবার নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়েছিলেন তিনি, কিন্তু পরের ম্যাচ খেলার জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে প্রায় দুই বছর। ধৈর্যের ফল অবশ্য মিষ্টি হয়েছে, বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রত্যাবর্তনের ম্যাচে জোড়া সেঞ্চুরি, পরের ম্যাচে অপরাজিত ৯২ – না না, এতটুকুতেই প্রশংসা করবেন না।
প্রথমবার ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে খেলতে নেমেই সেঞ্চুরি করেছেন কামিন্দু, লর্ডস আর ওভালে সেঞ্চুরি না পেলেও হাফ-সেঞ্চুরি ঠিকই করেছেন। সবমিলিয়ে লাল বলের ক্যারিয়ারের প্রথম আট ম্যাচের সবকয়টিতেই ৫০+ ইনিংস খেলেছেন তিনি, ১৪৭ বছরের টেস্ট ইতিহাসে এমন কীর্তি আর দেখেনি বিশ্ব।
স্রেফ তেরো ইনিংসে পাঁচটি শতক নিজের ঝুলিতে যোগ করেছেন তারকা, এর চেয়ে কম ইনিংসে এতগুলো শতক হাঁকাতে পেরেছেন কেবল তিনজন। হার্বার্ট সাটক্লিফ ও নিল হার্ভির লেগেছে বারো ইনিংসে এবং স্যার এভারটন উইকস মাত্র দশ ইনিংসেই পেয়েছেন পাঁচ সেঞ্চুরির দেখা।
টেস্ট ক্যারিয়ারে কামিন্দু মেন্ডিসের শুরুটা কত রঙিন হয়েছে সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না৷ তবে সকাল সবসময় দিনের কথা বলে না; উড়ন্ত সূচনা পেয়ে কেউ কিংবদন্তি হয়েছেন, কেউ বিনোদ কাম্বলির মত হারিয়ে গিয়েছেন, আবার কেউ মুমিনুল হকের মত কোনরকম টিকে আছেন – লঙ্কান ব্যাটার কোন পথে হাঁটবেন সেটা সময়ই বলে দিবে, তবে শ্রীলঙ্কা যে অমূল্য রত্ন পেয়েছে সেটা এখনই বলা যায়।