শ্রীলঙ্কার এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সূচনাটা যাচ্ছেতাই হয়েছে। এশিয়া কাপের চ্যাম্পিয়ন দলটি বিশ্বকাপ মিশন শুরু করেছে হার দিয়ে। তাও প্রতিপক্ষ নামিবিয়ার মতো দেশের বিপক্ষে ৫৫ রানের পরাজয় স্বীকার করতে হয়েছিলো। যারা কিনা ক্রিকেটীয় শক্তিমত্তায় শ্রীলঙ্কা থেকে বেশ পিছিয়ে।
‘এ’ গ্রুপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে কাল মুখোমুখি হতে যাচ্ছে শ্রীলঙ্কা এবং আরব আমিরাত। প্রথম ম্যাচটিতে হারের ফলে লঙ্কানরা কিছুটা মানসিক চাপ নিয়েই কালকের লড়াইয়ে নামবে। কারণ তাদের পরিস্থিতি এখন এমন যে, টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূল রাউন্ডে যাওয়ার জন্য তাঁদের সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে পরবর্তী দুটি ম্যাচ জিততেই হবে।
নিজেদের বর্তমান অবস্থান নিয়ে শ্রীলঙ্কান ক্রিকেট দলের সদস্য চামিকা করুণারত্নে বলেন, ‘আপনারা জানেন আমরা গতকাল ম্যাচ হেরেছি। এবং তাই এখন যেকোনোভাবে আমাদের জিততে হবে। সবকিছুর বিনিময়ে হলেও আমাদের পরের দুটি ম্যাচ জিততে হবে। আমি মনে করি দলের সবাই এটা জানে। আমরা অবশ্যই পরের দুটি ম্যাচে শতভাগ উজাড় করে দিবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই গ্রুপের চারটি দলই ভালো ক্রিকেট খেলছে। এমনকি গতকাল শেষ ম্যাচেও, সংযুক্ত আরব আমিরাত বনাম নেদারল্যান্ডসের ফলাফল একেবারে শেষ বল অব্দি নির্ভর করেছে। আমরা জানি না কী ঘটতে পারে। কারণ এই খেলাটি সর্বদা উত্তেজনাপূর্ণ এবং অনেক মজার। যেকোন কিছু ঘটতে পারে, সুতরাং দেখা যাবে।’
নামিবিয়ার কাছে তাদের হারের পর দাসুন শানাকার মতো চামিকা করুণারত্নেও নিজ দলের ব্যর্থতা স্বীকার করার পাশাপাশি প্রতিপক্ষকে জয়ের কৃতিত্ব দিয়েছেন। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমাদের জন্য এটি একটি খারাপ দিন ছিল। তবে আমাদের মেনে নিতে হবে যে নামিবিয়া গতকাল ব্যাটিং, বোলিং এবং ফিল্ডিং তিনটি বিভাগেই ভাল ক্রিকেট খেলেছে। এখন আমাদের যা করতে হবে তা হলো আমরা যে ভুলগুলি করেছি সে ভুলগুলি পর্যালোচনা করতে হবে। সুতরাং আমরা এটিকে আরও গুরুত্ব সহকারে নেব। পরের কয়েকটি ম্যাচ আমরা সেরাটা দিয়ে খেলবো। কারণ আমরা এর চেয়ে ভালো করার সামর্থ্য রাখি।’
শ্রীলঙ্কা এবছরের এশিয়া কাপের মিশনটিও প্রথম ম্যাচে হার দিয়ে শুরু করেছিল। কিন্তু শেষমেশ তাঁরা ঘুরে দাড়িয়েছে এবং চ্যাম্পিয়ন হয়ে শিরোপা অর্জন করেই দেশে ফিরে গিয়েছিলো। এভাবে এশিয়া কাপ জয়ের পর, শ্রীলঙ্কাকে অনেকেই বিশ্বকাপের জন্য ডার্ক হর্স বলে আখ্যায়িত করেছিল।
এশিয়া কাপের সাথে চলতি বিশ্বকাপের সাদৃশ্য নিয়ে তিনি বলেন, ‘এশিয়া কাপে আমরা প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের কাছে হেরেছিলাম।কিন্তু তারপরে আমরা সব ম্যাচ জিতেছি। কিন্তু আমরা এখন সেই সাদৃশ্য নিয়ে মাথাঘামাচ্ছি না। কারণ এশিয়া কাপ শেষ হয়ে গেছে। এটা এখন ইতিহাস। এই মুহুর্তে আমাদের বিশ্বকাপ নিয়ে ভাবতে হবে। কারণ এবার ভিন্ন জায়গা, ভিন্ন কন্ডিশন এবং ভিন্ন দেশ।’
তবুও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ নিয়ে আশাবাদী তিনি। নিজেদের সবটুকু দিয়ে সামনের সংকট পেরিয়ে সুপার টুয়েলভে পৌছুঁতে তিনি এবং গোটা শ্রীলঙ্কান দল বদ্ধপরিকর। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমাদের সবকিছু আছে। আমাদের কাছে পাওয়ার–হিটিং আছে, আমাদের এমন খেলোয়াড় আছে যারা খেলাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। আমাদের দলে ফিট খেলোয়াড়, শক্তিশালী খেলোয়াড় এবং মননশীল এবং কৌশলী খেলোয়াড় – সবাই আছে। সবমিলিয়ে আমাদের যা করতে হবে তা হলো আমাদের সঠিক মনোভাব আনতে হবে। ম্যাচ জয়ের জন্য এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।’