২০১৯ সালের জানুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতেই চতুর্থ টেস্টে সুযোগ পেয়ে পাঁচ উইকেট নিয়েছিলেন কুলদীপ যাদব। এরপর দুই বছর অপেক্ষার পর ঘরের মাটিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২০২১ সালের দ্বিতীয় টেস্টে সুযোগ হয় কুলদীপের। এরপর আর খেলানো হয়নি তাকে।
১৮ জুন সাউদাম্পটন থেকে শুরু হতে চলা বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপের ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হবে ভারত। তারপর ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলবে ভিরাট কোহলির দল। এই বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজের জন্য শুক্রবার বিসিসিআই ২০ জনের দল ঘোষনা করে। এছাড়াও ৪ জনের স্ট্যান্ডবাই ও রাখা হয়। কিন্তু এর কোনটিতেই জায়গা হয়নি কুলদীপ যাদবের।
নির্বাচকদের মতে পারফর্মেন্স করতে না পারায় দল থেকে বাদ পড়েন। কিন্তু দলে পারফর্ম করার জন্য শেষ ২ বছরে দল যথেষ্ট সুযোগ না পাওয়ারই হতাশা ব্যাক্ত করেছেন এই চায়নাম্যান।
২০ জনের দল ঘোষনার পর ভারতীয় প্রাক্তন তারকা ক্রিকেটারদের সহ অনেক ক্রিকেটারই কুলদীপের না থাকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেছেন। অনেকে তার দলে অন্তর্ভুক্তির ব্যাপারে জোরালো দাবি জানিয়েছে। এসব নিয়ে এতো আলোচনা – সমালোচনার মাঝেই এক সাক্ষাৎকারে কুলদীপ যাদব নিজেই তার মনের কথা সবার কাছে ব্যক্ত করেছেন।
কুলদ্বীপ বলেন, ‘যতটা আশা করেছিলাম সেই রকম ম্যাচ খেলার সূযোগ পাইনি আমি। যে কারণে আমার আত্মবিশ্বাসের অভাব দেখা দেয়। যখন পরপর ম্যাচ খেলার সুযোগ পাওয়া যায় তখন এমনিতেই আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়। যত বেশি দলের বাইরে বসে থাকতে হয়, লড়াইটা তত কঠিন হয়ে যায়। আমি নিজের উপর মারাত্মক চাপ অনুভব করি। ফেব্রুয়ারি মাসে চেন্নাইয়ে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট খেলেছিলাম। কোভিডের কারণে আগের বছর সেভাবে খেলা হয়নি। যে কারণে পরিস্থিতি আমার জন্য খুব কঠিন হয়ে উঠেছিল।’
তিনি এর সঙ্গে বলেন, ‘কখনো কখনো আমার মনে হয় এটা কি হচ্ছে? খুবই কঠিন সময় ছিল। মাঝে মাঝে মনে হয় আমি আর আগের কুলদীপ নই। কখনো আবার মনে হয় আমি একি রয়েছি। এবং আবার সুযোগ পাওয়ার অপেক্ষা করতে থাকি। এমন একটা সময় ছিল, যখন প্লেয়ারদের মাঠে জল পৌছে দিতাম এবং রিজার্ভ বেঞ্চে বসে থাকতাম। সেই সময় মনে হতো ঐ জায়গাটাই আমার। আবার মাঝে মাঝে রিজার্ভ বেঞ্চে বসে থাকতে আর ভালো লাগতো না, মনে হয় আমিও খেলি। নিজেকে সব সময় অনুপ্রাণিত করার চেষ্টা করি। আবার নিজেকে খুশি রেখে বোঝানোর চেষ্টা করতে থাকি যে আমি বলটা ভালো করি। তাও নিজেরই কিছু দ্বিধা থেকে যায়।’
আবার এই আসরের আইপিএল এ কলকাতা নাইট রাইডার্স স্থগিত হওয়ার আগ পর্যন্ত সাতটি ম্যাচ খেললেও কোন ম্যাচেই মূল একাদশে সুযোগ মেলেনি কুলদীপ যাদবের। এই কারণেই স্বভাবতই আরো হতাশ ছিলেন তিনি।
সেই সময় তিনি নিজের যোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছিলেন, ‘যখন কলকাতার হয়ে আইপিএল এ মূল একাদশে ও সুযোগ পেলাম না তখন আমার মনে হয়েছিলো আমি এতটাই খারাপ? এটা ম্যানেজমেন্টের সিদ্ধান্ত এবং তাদের গিয়ে জিজ্ঞেস করাটাও ঠিক হতো না। স্পিনিং উইকেট থাকার পরও আমি চেন্নাইয়ে খেলতে পারিনি। আমি এই সিদ্ধান্তে অবাক হয়েছিলাম। কিন্তু কিছুই করার ছিলো না। এমনিতেই জৈব সুরক্ষা বলয়ে থাকাটা খুব চ্যালেঞ্জিং ছিলো। তার মধ্যে আমি খেলার সুযোগ না পাওয়ায় আমার কিছুই ভালো লাগছিলো না।’
অভিষেকের পর থেকেই ২০১৯ পর্যন্ত দলে নিয়মিত থাকলেও, টেস্ট দলে খুব কমই সূযোগ হতো এই বাহাতি চায়নাম্যানের। কুলদীপ যাদব ২০১৯ সালের পর থেকেই পারফর্ম করার যথেষ্ট সুযোগ পায়নি, তাও স্কোয়াদে ছিলেন, ডাক পড়েছে, সুযোগ হয়নি পরে আবার দল থেকে বাদ পড়ে। তো কুলদীপ যাদবের এখন সময়টা খারাপ যাচ্ছেই বটে।