রিভার্স সুইপে হ্যারি ব্রুক বাউন্ডারি আদায় করে নিলেন। কঠিন উইকেটে রান তোলার বিকল্প নেই। তাইতো তিনি পরের বলেও রিভার্স সুইপ করতে চাইলেন। কিন্তু কুলদ্বীপ যাদব এত ছাড় দেবেন কেন? তিনি দিলেন না। গ্রিপ করা উইকেটে কুলদ্বীপ ড্রিফট করালেন বল। তাতে করে বল আরও থেমে এলো। ব্রুকের যখন শট খেলা শেষ তখন বল পৌঁছালো তার প্যাড অবধি। এরপর স্ট্যাম্পের লাইনের সেই বল জ্বালিয়ে দিল সকল বাতি।
ঠিক এমন ধূর্ততার সাথে বোলিং করে গেছেন কুলদ্বীপ। ইংল্যান্ডের সাথে সেমিফাইনালে তার জন্যে মঞ্চটা ছিল প্রস্তুত। সেখানে দাঁড়িয়ে কুলদ্বীপকে স্রেফ নিজের ঝুলিতে থাকা অস্ত্রগুলোর যথাযথ ব্যবহারটা করতে হতো। ব্যাটারদের ধোঁকা দেওয়া উইকেটে কুলদ্বীপ আরও ধোঁয়াশার সৃষ্টি করলেন। ফ্লাইট, ড্রিফটের মিশেলে অতিষ্ঠ করে তুলেছিলেন ইংলিশ ব্যাটারদের।
গায়ানার উইকেট বৃষ্টির জল পেয়ে খানিকটা ড্যাম্প হয়েছিল বটে। সেখানে দাঁড়িয়ে ভারতীয় ব্যাটাররা ১৭১ রান তুলেছিলেন তাদের স্কোরবোর্ডে। যা প্রয়োজনের থেকেও ছিল বেশি। সে চিত্র অংকন করেছেন ভারতীয় স্পিনাররা। ইংল্যান্ডের ব্যাটিং অর্ডারকে একেবারে নাস্তানাবুদ করে ছেড়েছেন কুলদ্বীপরা।
অবশ্য অক্ষর প্যাটেলের ধ্বংসযজ্ঞের পর উইকেট শিকারির তালিকায় আসতে সময় লেগেছে কুলদ্বীপের। ব্রুকের আগে স্যাম কারানকে প্যাভিলিয়নের পথ দেখিয়েছিলেন তিনি। ঘূর্ণি ধুম্রজাল সৃষ্টি করে তিনি লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন কারানকে। রিভিউ নিয়েও রক্ষা হয়নি তার।
একই দশা হয়েছে ক্রিস জর্ডানের। তিনিও কুলদ্বীপের বলে লেগ বিফোর আউট হয়েই ফিরেছেন সাজঘরে। তাতে করে ভারতের জয় পাওয়াটা ছিল স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। এমন স্লো উইকেটে উপমহাদেশী স্পিনাররা ত্রাসের সৃষ্টি করবেন- সেটাই অবধারিত। তাইতো কন্ডিশনের পূর্ণ ফায়দাই তুলেছেন ভারতীয় স্পিনাররা।
কুলদ্বীপ তিন উইকেট শিকার করে ভারতের জয়কে ত্বরাণ্বিত করেছেন। ৪ ওভারে মাত্র ১৯ রান দিয়েছেন। ইংল্যান্ডের ব্যাটারদের ম্যাচ বের করে নেওয়ার কোন সুযোগই দেননি তিনি। ২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রতিশোধের আগুন নিশ্চয়ই তার ভেতরেও জ্বলজ্বল করে জ্বলছিল।
সেদিন একপেশে ম্যাচে ১০ উইকেটে হেরেছিল ভারত। তাইতো কুলদ্বীপ আরও একটি একপেশে জয় নিশ্চিত করলেন। তবে তা অবশ্যই ভারতের পক্ষে। ইংল্যান্ডের লোয়ার মিডল অর্ডার ধসিয়ে তিনি প্রমাণ করেছেন যে তিনি ঠিক কতটা দূর্ধর্ষ।