অম্ল-মধুর শঙ্কার মাঝে কিলিয়ানের মাদ্রিদ যাত্রা

উয়েফা সুপার কাপ দিয়ে মাঠে নামছেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। কত জল্পনা, শত কল্পনা শেষে রিয়াল মাদ্রিদের শুভ্রতা গায়ে জড়িয়ে এমবাপ্পে নামবেন সবুজ গালিচায়। অবশেষে এমবাপ্পে সাগার শেষ হচ্ছে মাঠে নেমেই। তবে এমবাপ্পেকে ঘিরে হওয়া আলোচনার শেষটা বোধহয় সেখানে হচ্ছে না কোনভাবেই।

কেননা এখনও অনেকের মনে রয়েছে সংশয়। রিয়াল মাদ্রিদকে খানিক বিপাকেই ফেলে দিলেন ফ্রেঞ্চ এই তারকা। দলটার ভারসাম্য খানিক ব্যহত হয়েছে বটে। কেউ কেউ তো দলের মধ্যে অন্দরকোন্দলের আশঙ্কাও করছেন বটে। তাছাড়া যতটা প্রত্যাশা নিয়ে এমবাপ্পে এসেছেন, সেটুকু প্রত্যাশা পূরণ হওয়া নিয়েও রয়েছে দ্বিধা।

এই মৌসুম শুরুতে একেবারে বিনে পয়সায় তাকে নিজেদের করে নিয়েছে লস ব্ল্যাঙ্কোসরা। এর আগে অন্তত দু’বার রিয়ালে প্রায় চলেই এসেছিলেন এমবাপ্পে। কিন্তু নানা নাটকীয়তার শেষে এমবাপ্পে আর সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে আসেননি। কিন্তু এবার যখন এলেন, পুরো বার্নাব্যু-তে ছিল উপচে পড়া ভিড়।

তবুও কোথাও একটা সংকোচবোধ কাজ করছে। এর পেছনে কারণ হিসেবে সামনে আসছে এমবাপ্পের ‘ইগো’। প্যারিস সেইন্ট জার্মেই-তে তিনি রীতিমত রাজকীয় সমাদর পেয়েছে। এমনও শোনা যায়, তিনি ছিলেন পিএসজি-এর অলিখিত অধিপতি।

কিন্তু রিয়াল মাদ্রিদে তিনি আর দশজন খেলোয়াড়ের মত বিবেচিত হবেন, সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। রিয়াল মাদ্রিদ ক্লাব কখনোই ক্লাবের স্বার্থের উপরে ব্যক্তিগত স্বার্থকে প্রাধান্য দেয়নি। কোন খেলোয়াড়কেই বিশেষ সুবিধাও দেয়নি। এমবাপ্পেও তার ব্যতিক্রম হবেন না। এখানেই হয়ত এমবাপ্পের মানিয়ে নিতে সমস্যা হবে। তাতে করে পারফরমেন্সও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

অন্যদিকে, তার অন্তর্ভুক্তি দলের ফরমেশনকেও প্রভাবিত করবে। স্বভাবজাতভাবে কিলিয়ান এমবাপ্পে একজন লেফট উইঙ্গার। তিনি বাঁ দিক থেকে আক্রমণ করবেন। কিন্তু রিয়াল মাদ্রিদে আগে থেকেই সে পজিশনে খেলেন ভিনিসিয়াস জুনিয়র। শুধু খেলেন বললেও ভুল বলা হয়, তিনি অন্যতম কাণ্ডারি।

তার কল্যাণেই লস ব্ল্যাঙ্কোসরা গেল মৌসুমে জিতেছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও লা লিগা। ধারণা করা হচ্ছে, অঘটন না ঘটলে তিনিই জিততে চলেছেন ব্যালন ডি’অর। একই পজিশনে সময়ের অন্যতম দুই তারকা থাকা একদিক থেকে যেমন আশীর্বাদের, তেমনি দুশ্চিন্তার। এমবাপ্পে আর ভিনিসিয়াসের মধ্যে পজিশন নিয়ে একটা স্নায়ুযুদ্ধ শুরু হতে পারে মৌসুম মাঠে গড়ালে।

যদিও এমবাপ্পেকে সেন্টার ফরোয়ার্ডের দায়িত্ব পালন করতে দেখা যেতে পারে। তাতে করেও তার পারফরমেন্সের অবনতি হতে পারে। এছাড়া দলের খেলার ধরণেও আমুল পরিবর্তন চোখে পড়তে পারে। রক্ষণের কাজে খুব একটা সহয়তা সচারচর করতে দেখা যায় না এমবাপ্পেকে। সেদিক থেকেও খানিক বিপাকে পড়তে হতে পারে মাদ্রিদকে।

তবে ক্লাবটা যখন রিয়াল মাদ্রিদ, তখন সকল শঙ্কাই যেন ক্ষণস্থায়ী। মাদ্রিদের জার্সি গায়ে অনেক সাদামাটা খেলোয়াড়ও বনে যান তারকা। আবার ভিন্ন চিত্রও রয়েছে অনেক। এখন দেখবার বিষয় কিলিয়ান এমবাপ্পের ভাগ্যে ঠিক কি রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link