খেলাটা বেশ সাবলীল গতিতেই যাচ্ছিল। নিউজিল্যান্ডের ব্যাটাররা রান করছিলেন, বাংলাদেশি বোলাররাও নিয়মিত বিরতিতে উইকেট তুলছিলেন। কিন্তু ঝিমিয়ে পড়া দর্শকদের হঠাৎ জাগিয়ে তোলেন হাসান মাহমুদ; অবিশ্বাস্য কোন ডেলিভারিতে নয়, ইশ সোধিকে মানকাড আউট করে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেন তিনি।
৪৬তম ওভারের কথা, স্ট্রাইকে তখন লকি ফার্গুসন। অন্য পাশে সেট ব্যাটার ইশ সোধি বোধহয় ব্যাটিং প্রান্তে ফিরতে একটু তাড়াহুড়ো দেখান, বল করার আগেই বেরিয়ে যান ক্রিজ থেকে। আর তাতেই মানকাডের সুযোগ পেয়ে যান হাসান মাহমুদ, কোন কিছু না ভেবেই স্ট্যাম্প ভেঙে দিয়ে আবেদন করেন আম্পায়ারের কাছে।
টিভি রিপ্লে-তে দেখা যায় হাসান মাহমুদ যখন স্ট্যাম্পে বল লাগিয়েছিলেন ইশ সোধি তখন ক্রিজের বাইরে। আইসিসির নিয়মানুযায়ী ড্রেসিং রুমের পথ ধরতে হয় কিউই তারকাকে। এর মধ্য দিয়ে প্রথম বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে মানকাড আউট করার কীর্তি গড়লেন এই ডানহাতি পেসার, এর আগে অবশ্য যুব পর্যায়ে সৌম্য সরকার এমনটা করেছিলেন।
আউটেই চমক শেষ হয়নি, ইশ সোধি ফিরে যাওয়া শুরু করার কিছু মুহূর্ত পরেই আবার ফিরে আসেন তিনি। ঘটনার আকস্মিকতায় থমকে যাওয়া দর্শেকরা খানিক পরেই বোঝেন রহস্য, মানকাড আউটের আবেদন তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ দল। লিটন দাসের ডাকে তাই আবারো বাইশ গজে ফিরে আসেন সোধি।
ফেরার সময় ঘটনার দুই মূল নায়ক হাসান মাহমুদ আর ইশ সোধি জড়িয়ে ধরেন একে অপরকে। কয়েক মিনিটের এই নাটকীয়তায় শেষমেশ জয়টা তাই হয়েছে ক্রিকেটেরই। এমন আউটে আইসিসির আইনগত কোনো বাঁধা নেই। তাই তো লিটন-হাসানের সিদ্ধান্তটা খুবই অভাবনীয় ও অপ্রত্যাশিত।
তবু ইতিহাস হয়েছে, নতুন কিছু দেখেছে লাল-সবুজের ক্রিকেটপ্রেমীরা। মিরপুরের গ্যালারিতে থাকা কিংবা টিভিসেটে চোখ রাখা দর্শকেরা সাক্ষী হয়েছে ইতিহাসের, আর সেই ইতিহাস আলোচনার খোড়াক জোগাবে অনেক দিন।