ব্যাট হাতে স্বপ্নের মত একটা বছর কাটিয়েছেন। বাইশ গজে যা করতে চেয়েছেন তাই হয়েছে। বাংলাদেশের ক্রিকেটের সুন্দরতম ফুল হয়ে ফুটেছিলেন লিটন দাস। টেস্ট, ওয়ানডে কিংবা টি-টোয়েন্টি সব ফরম্যাটেই ছিলেন অনবদ্য। তবে বছর ঘুরতেই হল ছন্দপতন। এবছরের শুরুটাই হল বাজে ভাবে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে যে লিটনকে দেখা গেল, সেই লিটন যে বড্ড বেমানান।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের কোন ম্যাচেই দুই অংকের স্কোর গড়তে পারেননি। প্রথম ম্যাচে করতে পেরেছিলেন ৭ রান। পরের দুই ম্যাচে তো আর রানের খাতাই খুলতে পারলেন না। পরপর দুই ম্যাচে শূন্য রানে ফিরলেন ড্রেসিং রুমে। লিটনকে এমনভাবে দেখা যে ভীষণ পীড়াদায়ক।
এবছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এই প্রথম মাঠে নামল বাংলাদেশ। দল হিসেবেও বাংলাদেশের শুরুটা ভালো হয়নি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাঠে সিরিজ হারতে হয়েছে। ব্যাটারদের ব্যর্থতা এর বড় কারণ। বাংলাদেশের এমন ভরাডুবির অন্যতম কারণ হতে পারে লিটনের রান না পাওয়া।
গত বছর লিটন নিজেকে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন আপের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশে পরিণত করেছেন। উপর থেকে তিনি রান করে দেয়ায় পরের ব্যাটারদের জন্য কাজটা অনেক সহজ হয়ে যেত। মিডল অর্ডার ব্যাটাররা নিজের ইনিংস সাজানোর জন্য সময় নিতে পারতেন। কিংবা তাঁদের জন্য একটা মঞ্চ প্রস্তুত করে দিয়ে যেতেন লিটন।
তবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে সেটা হল না। ফলে প্রতি ম্যাচেই ব্যাটিং লাইন আপে ধস নেমেছে। সেখান থেকে আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি বাংলাদেশ। বড় দলের সাথে ম্যাচ জিততে হলে যে লিটনের রান করাটা কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা ইতোমধ্যেই প্রমাণ হয়ে গিয়েছে।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজে সর্বসাকুল্যে তাঁর স্কোর সাত রান। ফলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে লিটন কী নিজের ছন্দ হারিয়ে ফেললেন। যদিও একটা সিরিজ খারাপ যেতেই পারে কোন ব্যাটারের। এত দ্রুত কিছু বলাও কঠিন। তবুও লিটনের দ্রুত রানে ফেরাটা বাংলাদেশের জন্য ভীষণ জরুরী।
লিটন দাস বড় ইনিংস করতে পারেননি সর্বশেষ ভারতের বিপক্ষে সিরিজেও। সেখানে দুই ম্যাচে শুরু পেলেও সেগুলোকে আর বড় করতে পারেননি। ভারতের সাথে প্রথম ম্যাচে করেছিলেন ৪১ রান। এরপর শেষ ম্যাচেও তাঁর ব্যাট থেকে এসেছিল ২৯ রান।
ফলে সর্বশেষ ছয় ওয়ানডে ম্যাচে কোন অর্ধশতকের দেখা পাননি এই ব্যাটার। এই সময়ে ভারতের বিপক্ষে ঐ ৪১ রানের ইনিংসটাই সর্বোচ্চ। ফলে লিটনের ফর্ম নিয়ে খানিকটা দুশ্চিন্তায় থাকতেই পারে বাংলাদেশ দল।
এই ব্যাটার যত দ্রুত নিজের চেনা ছন্দে ফিরে আসবেন ততই মঙ্গল বাংলাদেশের জন্য। সেজন্য নিশ্চয়ই লিটনের সাথে কথা বলবেন টিম ম্যানেজম্যান্ট কিংবা কোচরা। কেননা এই বছরটা যে বাংলাদেশের জন্য ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। ওয়ানডে বিশ্বকাপও আছে ভারতের মাটিতে। সবমিলিয়ে যে করেই হোক চেনা লিটনকে চাই।
ওদিকে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে শেষ ম্যাচেও ব্যাটিং বিপর্যয়ে বাংলাদেশ। আজ আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ফিরে যান দুই ওপেনার। এরপর নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুশফিকুর রহিম মিলে খানিকটা সামাল দেয়ার চেষ্টা করেন। তবে চট্টগ্রামের উইকেটেও খুব একটা ভালো ব্যাটিং প্রদর্শনী করতে পারেনি বাংলাদেশ।