একদম শুরুর দিকে ক্রিকেটে প্রচলিত ছিল আন্ডারআর্ম বোলিং। বোলার মাথার ওপর থেকে হাত না ঘুরিয়ে কোমরের নিচ থেকে লো ট্রাজেক্টরিতে যে বল ছুঁড়ে দেন তাই আন্ডারআর্ম বোলিং নামে পরিচিত। আঠারো শতকের পুরোটাই ছিল আন্ডারআর্ম বোলারদের যুগ। এরপর ঊনবিংশ শতকের গোড়ার দিকে জন উইলিসের হাত ধরে এল রাউন্ডআর্ম বোলিং। অর্থাৎ বল ডেলিভারির সময় হাত থাকবে কাঁধ এবং কোমরের মাঝামাঝি উচ্চতায়।
১৮২২ সালে কেন্টের হয়ে এমসিসির বিপক্ষে একটি ফার্স্ট ক্লাস ম্যাচে সর্বপ্রথম রাউন্ডআর্ম অ্যাকশনে বোলিং করেন উইলিস। কিন্তু আম্পায়ার সরাসরি ‘নো’ ডেকেছিলেন তাঁকে। কেননা তখনকার ক্রিকেট আইন অনুযায়ী, রাউন্ডআর্ম বোলিংকে মনে করা হত অবৈধ।
অবশেষে ১৮৩৫ সালে বৈধতা পায় রাউন্ডআর্ম বোলিং। তখন এক যোগে অসংখ্য আন্ডারআর্ম বোলার অ্যাকশন বদলে হয়ে যান রাউন্ডআর্ম বোলার; তবে একজন বাদে। নাম তাঁর উইলিয়াম ক্লার্ক, ইংরেজ ক্লাব নটিংহ্যামশায়ার এবং ঐতিহাসিক ‘অল ইংল্যান্ড’ একাদশের প্রতিষ্ঠাতা। ১৮৫৬ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত যতদিন বেঁচে ছিলেন, আন্ডারআর্ম অ্যাকশনে বোলিং করে গেছেন।
১৮৩৫-১৮৬৪ সাল পর্যন্ত ছিল রাউন্ডআর্ম বোলিংয়ের যুগ। উইলিয়াম লিলিহোয়াইট, আলফ্রেড মাইন, জন জ্যাকসন এবং ডব্লু জি গ্রেসরা ছিলেন রাউন্ডআর্ম স্টাইলের চ্যাম্পিয়ন বোলার। এরপর আসে ওভারআর্ম বোলিং; রাউন্ডআর্মের মত ওভারআর্ম বোলিংও প্রথমদিকে নিষিদ্ধ ছিল।
১৮৬২ সালে ইংলিশ ফাস্ট বোলার এডগার উইলশেয়ার ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটে সর্বপ্রথম ওভারআর্ম বোলিং করেন। তাঁর টানা ছয়টি ডেলিভারিকে অবৈধ ঘোষণা করে ‘নো’ ডেকেছিলেন আম্পায়ার জন লিলিহোয়াইট। অবশেষে ১৮৬৪ সালে ক্রিকেটীয় আইনে সংস্কার আনে এমসিসি কর্তৃপক্ষ। রীতিমতো আইন পাশ করে জানিয়ে দেয়া হয়, ‘থ্রোয়িং’ ব্যতীত সব ধরনের বোলিং অ্যাকশনই বৈধ।
ওভারআর্ম বোলিং প্রবর্তনের পর সবার কৌতুহলের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়ায় হারিয়ে যেতে বসা আন্ডারআর্ম বোলিং। একেবারে বিলুপ্ত হয় না, হলেও আন্ডারআর্ম বোলিংকে তখন বলা যায় বিলুপ্তপ্রায়। তখনও যারা লুপ্তপ্রায় আন্ডারআর্ম স্টাইলের একনিষ্ঠ অনুসারী ছিলেন তাদের মধ্যে সবচাইতে উল্লেখযোগ্য হলেন ডব্লু জি গ্রেসের বড় ভাই ইএম গ্রেস। তাঁর বোলিং স্টাইলের নাম ছিল ‘স্লো রাইট আন্ডারআর্ম’।
আন্ডারআর্ম বোলিং স্টাইলের আরেক নাম ছিল ‘লব’। আর এই ‘লব’ বোলারদের মজা করে ডাকা হত ‘লবস্টার’। ঊনিশ শতকের শেষভাগে এসে একদমই অনিয়মিত হয়ে পড়েন ক্রিকেট মাঠের এই ‘লবস্টার’রা। ১৮৮০ সালের দিকে হঠাৎই ৩১ বছর বয়সী এক ইংরেজ ‘লবস্টার’ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে পাঁচ উইকেট নিয়ে রীতিমতো হইচই ফেলে দেন। নাম তাঁর ওয়াল্টার ‘আলেকজান্ডার’ হামফ্রে।
১৮৭১ থেকে ১৮৯৬ সাল পর্যন্ত কাউন্টি দল সাসেক্সের হয়ে ২৪৮টি প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ খেলা ওয়াল্টার ‘আলেকজান্ডার’ হামফ্রেকে মনে করা হয় তাঁর সময়ের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার। শুরুতে জেনুইন ব্যাটসম্যান হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করলেও শেষদিকে পরিণত হন ‘লবস্টারে’। ফার্স্ট ক্লাস ক্যারিয়ারে মাত্র ২১.৫২ গড়ে হামফ্রের শিকার ৭১৮ উইকেট। তবে কখনও টেস্ট খেলার সুযোগ পান নি তিনি।
বল হাতে হামফ্রের সাফল্যের পেছনে মূল কারিগর মনে করা হয় তাঁর কাউন্টি দলের অধিনায়ক অস্ট্রেলিয়ার বিলি মারডককে। মারডকের ক্যাপ্টেন্সিতেই ১৮৯২ সালে ৯২টি এবং ১৮৯৩ মৌসুমে ১৫০টি উইকেট দখল করেন হামফ্রে। ১৮৯৪-৯৫ সালের দিকে আর্চি ম্যাকলারেনের নেতৃত্বাধীন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেও এক ইনিংসে নিয়েছিলেন ৬ উইকেট। হামফ্রের বয়স তখন ৪৫ বছর!
হামফ্রেকে নিয়ে মারডকের ছিল অভিনব কৌশল। নতুন কোন ব্যাটসম্যান ক্রিজে এলেই হামফ্রেকে আক্রমণে নিয়ে আসতেন তিনি; ব্যবহার করতেন অল্প সময়ের জন্য ছোট ছোট স্পেলে।
এরই মাঝে ১৮৮৪ সালে টেস্ট ক্রিকেটের সর্বপ্রথম আন্ডারআর্ম বোলার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন ইংল্যান্ডের আলফ্রেড লাইটেলটন। ওভাল টেস্টে পার্টটাইম ‘লব বোলিং’ দিয়ে তুলে নেন অস্ট্রেলিয়ান ইনিংসের শেষ চার উইকেট।
১৮৯৬ সালে হামফ্রের অবসরের পর ‘লবস্টার’দের প্রতিনিধি হিসেবে হাজির হন ডিগবি জেফসন। ১৮৯৯ সালে অ্যামেচার ক্রিকেটারদের নিয়ে গড়া ‘জেন্টলম্যান্স একাদশ’ ইনিংস ব্যবধানে হারিয়ে দিয়েছিল পেশাদারদের দল প্লেয়ার্স একাদশকে। লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত সে ম্যাচে মাত্র ২১ রানে ৬ উইকেট নিয়ে জেন্টলম্যানদের জয়ের নায়ক ছিলেন জেফসন।
১৯০০-১৯০৪ সাল পর্যন্ত কাউন্টি দল সারের অধিনায়ক ছিলেন জেফসন। ২০৫টি ফার্স্ট ক্লাস ম্যাচে তাঁর শিকার ২৯৭ উইকেট। ক্যারিয়ারের সেরা বছর ১৯০১ সাল; ১৮.৬৪ গড়ে নিয়েছিলেন ৭৭ উইকেট।
আন্ডারআর্ম বোলারদের সাফল্যের গন্ডিটা শুধুমাত্র ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেটেই সীমাবদ্ধ ছিল না। লবস্টারদের প্রতিনিধি হিসেবে টেস্ট আঙিনাতেও সফলতা পেয়েছেন, ইতিহাসে এমন বোলারও আছেন। তবে মাত্র একজন, ইংল্যান্ডের জর্জ সিম্পসন-হেওয়ার্ড। তাঁকে মনে করা হয় আন্ডারআর্ম বোলিংয়ের ইতিহাসে অলটাইম গ্রেটদের একজন হিসেবে। কিংবদন্তি ‘লবস্টার’ উইলিয়াম ক্লার্কের চেয়েও তাঁকে এগিয়ে রাখেন অনেকে।
তো এই ভদ্রলোক সম্পর্কে একটু খুলে বলা যাক। জর্জ সিম্পসন-হেওয়ার্ডের জন্ম ১৮৭৫ সালের ৭ জুন। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ১৮৯৫ সালে, কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটির হয়ে। কাউন্টি দল উস্টারশায়ারের হয়ে কাউন্টি খেলেছেন ১৮৯৯-১৯১৪ সাল পর্যন্ত। ইংল্যান্ড জাতীয় দলে অভিষিক্ত হন ৩৪ বছর বয়সে, ১৯০৯ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে।
ইংল্যান্ড ৩-২ ব্যবধানে সিরিজ হারলেও ৫ ম্যাচে মাত্র ১৮.২৬ গড়ে ২৩ উইকেট নিয়ে ঠিকই নিজের জাত চিনিয়েছিলেন জর্জ। অবশ্য ওটাই ছিল তাঁর ক্যারিয়ারের প্রথম ও শেষ সিরিজ! সেরা বোলিং পারফরম্যান্সটা এসেছিল জোহানেসবার্গে নিজের অভিষেক টেস্টে ৪৩ রানে ৬ উইকেট।
বিশিষ্ট ক্রীড়ালেখক সাইমন হিউজ তাঁর ‘And God Created Cricket’ বইতে জর্জ সিম্পসন-হেওয়ার্ড সম্পর্কে লিখেছেন, ‘It sounds absurd but he was picked for England after taking a stack of wickets for Worcestershire, and bamboozled the South Africans with his spinning moon balls.’
একটু পেছন ফিরে যাওয়া যাক। ক্যারিয়ারের শুরুতে সিম্পসন-হেওয়ার্ড ছিলেন একজন ডানহাতি সিম বোলার। ঘটনাচক্রে পরিণত হন লবস্টারে। একদিন সন্ধ্যার পর স্থানীয় ক্লাবে গিয়েছিলেন বিলিয়ার্ড খেলতে। একটা বিলিয়ার্ড বল হাতে নিয়ে নাড়াচাড়া করতে করতে হঠাৎ আবিষ্কার করলেন বল বেশ স্পিন করছে। ওই একটা ঘটনাই তাঁর জীবন বদলে দিয়েছিল। পরবর্তীতে পাড়ার ক্রিকেটেও একই ভাবে বল স্পিন করানোর চেষ্টা করলেন তিনি।
প্রথমবার সফল না হলেও হাল ছাড়লেন না। বাড়ির আঙিনায় স্ট্যাম্প পুঁতে একা একা অনুশীলন করে যেতে লাগলেন। প্রথমে ১২ গজ দূর থেকে, ধীরে ধীরে দুরত্ব বাড়াতে লাগলেন। এভাবেই কঠোর পরিশ্রম, নিষ্ঠা আর অধ্যবসায়ের গুণে একসময় শিখে ফেলেন ‘লব’ বোলিংয়ের যাবতীয় কলাকৌশল। তিনি নিজেই বলেছেন, প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটের বাইশ গজের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করতে তাঁর সময় লেগেছিল ৩ বছরেরও বেশি।
সিম্পসন-হেওয়ার্ডের বোলিং স্টাইল ছিল ‘আন্ডারআর্ম অফ ব্রেক লব’। তিনি বল গ্রিপ করতেন পাঁচ আঙুলের সাহায্যে। সাধারণ লব বোলারদের মত খুব বেশি ফ্লাইট দিতেন না তিনি, বেশ জোরের ওপর বল করতেন। উইকেট থেকে প্রচুর টার্নও পেতেন। বল ডেলিভারির সময় তাঁর আঙুলগুলো থেকে ‘ক্লিক’ করে একটা সাউন্ড হত যেটা স্পষ্ট শুনতে পেতেন ব্যাটসম্যানরা।
স্টক ডেলিভারি অফ ব্রেক হলেও লেগ ব্রেক, স্লোয়ার, কুইকারসহ অনেকগুলো ভ্যারিয়েশন ছিল তাঁর বোলিংয়ে। লো ট্রাজেক্টরিতে একই একশনে লেগ ব্রেক-অফ ব্রেক দুটোই করতে পারতেন তিনি!
উইজডেনের ভাষ্যমতে, ‘His leg break was conventionally bowled, turned much slower and was much less deadly.’
তাঁর অফ ব্রেকগুলোর কোনটা দশ-বারো ইঞ্চি, কোনটা ছয় ইঞ্চি, কোনটা আবার দুই থেকে তিন ইঞ্চি টার্ন করত। কোনটা পড়ার পর থেমে গিয়ে স্লো হয়ে যেত, কোনটা আবার স্কিড করত। ধারণা করা হয়, যে বলটা সবচেয়ে বেশি টার্ন করত সেটা নাকি থাম্ব ও লিটল ফিঙ্গারের সাহায্যে বিশেষ কায়দায় গ্রিপ করতেন তিনি।
ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক স্যার পেলহাম ওয়ার্নারের মতে, ‘He bowled several different off-breaks, one turning a lot, another six inches and the third an inch or two.”
তবে সবচেয়ে স্পেশাল ডেলিভারিটা ছিল বোধ হয়, ‘স্ট্রেইটার’। ইট ওয়াজ ভেরি ক্লেভারলি ডিজগাইজড। নরমাল ডেলিভারি দেবার সময় তাঁর আঙুল থেকে যে ‘ক্লিক’ সাউন্ডটা শোনা যেত, এই বলটা রিলিজের সময় সেটা পাওয়া যেত না। কিন্তু তিনি নন-বোলিং হ্যান্ড (বাঁ-হাত) দিয়ে ঠিক অনুরূপ একটা শব্দ করতেন, বল রিলিজের সময়েই। ফলে ব্যাটসম্যানরা বুঝতেই পারত না ওটা ‘স্ট্রেইটার বল’ নাকি ‘অফ ব্রেক’।
স্ট্রেইটার বলের কার্যকারিতা অনেকটা লেগ স্পিনারের ফ্লিপারের মতন। বল পড়ার পর সোজা হয়ে যেত এবং প্রায় দ্বিগুণ গতিতে স্কিড করত। অনেকের মতে, কিংবদন্তি লেগ স্পিনার ক্ল্যারি গ্রিমেটের উদ্ভাবিত ডেলিভারি ‘ফ্লিপার’ আবিষ্কারের পেছনে সিম্পসন-হেওয়ার্ডের ‘স্ট্রেইটার’ বলের একটা বড় প্রভাব ছিল।
১৯০৬-০৭ সালের দিকে এমসিসির হয়ে একবার নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়েছিলেন জর্জ। ৪ ম্যাচে ১৬.৮৮ গড়ে ৩৫টি উইকেটও নিয়েছিলেন। সেখানেই সিম্পসন-হেওয়ার্ডের বোলিং মাঠে বসে স্বচক্ষে দেখবার সৌভাগ্য হয়েছিল ১৫ বছরের কিশোর ক্ল্যারি গ্রিমেটের। গ্রিমেটের ভাষায়, ‘He could spin a ball more than any bowler I had seen at the time. How could such vicious spin be applied underarm, I wondered. Surely some different principle of spinning must be involved.’
বোলিংয়ের সময় কোন ট্রেডিশনাল স্লিপ রাখতেন না সিম্পসন। ফিল্ডিং সাজাতেন ৪-৫ ফরমেশনে। অফ সাইডে ৪ জন (পয়েন্ট, কাভার, মিড অফ, লং অফ) আর লেগ সাইডে রাখতেন ৫ জন (লেগ স্লিপ, শর্ট স্কয়ার লেগ, ডিপ স্কয়ার লেগ, ডিপ মিড উইকেট, মিড অন)। তাঁর উদ্দেশ্য ছিল পরিষ্কার। ‘স্টাম্প টু স্টাম্প’ বোলিং করা; পেস এবং টার্নের ভ্যারিয়েশন দিয়ে ব্যাটসম্যানকে বিভ্রান্ত করা।
চলুন জর্জ সিম্পসন-হেওয়ার্ডের ফার্স্ট ক্লাস পরিসংখ্যানটাও একটু জেনে আসি। ২০০টি প্রথম শ্রেণীর ম্যাচে তাঁর শিকার ৫০৯ উইকেট, মাত্র ২১.৩৯ গড়ে। স্ট্রাইক রেট ৪০.২৪।
ইনিংসে ৫ উইকেট শিকার করেছেন ৩১ বার, ম্যাচে ১০ উইকেট ১ বার। সেরা বোলিং ৫৪ রানে ৭ উইকেট।
ক্যারিয়ারের সেরা সময় কাটিয়েছেন ১৯০৮ সালে। মাত্র ১৮ গড়ে নিয়েছেন ৮২ উইকেট। আর ব্যাট হাতটাও মন্দ ছিল না। আছে সাড়ে ৫ হাজারের ওপর রান। নয়-দশ নম্বরে নেমে তিনটি সেঞ্চুরিও আছে!
১৯১৪ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবার সাথে সাথেই শেষ হয়ে যায় জর্জ সিম্পসন-হেওয়ার্ডের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ার। তাঁর অবসরের পর ‘লবস্টার’দের হারিয়ে যাওয়া ছিল কেবল সময়ের অপেক্ষা। হয়েছিলও তাই। সিম্পসন-হেওয়ার্ডের পর জেনুইন ‘লব’ বোলার হিসেবে প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট খেলতে পেরেছেন মাত্র একজন, ট্রেভর ম্যালোনি। তাঁর বোলিং স্টাইল ছিল ‘আন্ডারআর্ম লেগ ব্রেক লব’।
১৯২১ সালে কাউন্টি দল সারের হয়ে তিনটি প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ খেলেছেন ম্যালোনি; ইংরেজ কিংবদন্তি স্যার জ্যাক হবসের উইকেটসহ নিয়েছেন মোটে চারখানা উইকেট!
লব বোলারদের প্রসঙ্গে বিস্তারিত উল্লেখ রয়েছে ইংরেজ কিংবদন্তি রণজিৎ সিংজির লেখা ‘Jubilee Book of Cricket’ বইতে। বইটির প্রকাশকাল ১৮৯৭ সাল।
রণজিৎ সিংজির বই থেকে হুবহু কয়েক লাইন তুলে দিচ্ছি, ‘When runs are of no consequence and getting wickets is all important, a lob bowler is a treasure. His great aim is to bowl balls which are difficult to score off unless hit in the air. Most batsmen fall victim to lobs, not so much by the intrinsic difficulty and merit of the bowling, but on account of their own nervousness and anxiety to score. In matches where nerve plays an important part, even bad lobs are extraordinarily successful.’