জাতীয় দলের বাইরে থাকা যে কয়েকজন ক্রিকেটার বিশ্বকাপ ভাবনায় আছেন তাদের মধ্যে অন্যতম শেখ মেহেদী হাসান। লোয়ার মিডল অর্ডারে ব্যাট করার পাশাপাশি বোলিং করতে পারেন এমন কাউকে খুঁজতে থাকা বাংলাদেশ দলের জন্য তিনি দারুণ অপশন। অবশ্য এ ভূমিকায় তাঁর পাশাপাশি সৌম্য সরকার, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের নামও বিবেচনা করা হচ্ছে।
কিন্তু ইমার্জিং এশিয়া কাপের পারফরম্যান্স দিয়ে সবাইকে ছাড়িয়ে যাচ্ছেন শেখ মেহেদি। তিন ম্যাচেই বল হাতে অবদান রাখার পাশাপাশি নিজের ব্যাটিং দক্ষতাও দেখিয়েছেন।
আসরের প্রথম ম্যাচে শক্তিশালী শ্রীলঙ্কা এ দলের বিপক্ষে ১০ ওভার হাত ঘুরিয়ে দিয়েছেন কেবল ৪৮ রান, অথচ সে ম্যাচে ছয়ের কম ইকোনমি ছিল না কোন বোলারেরই। ব্যাট হাতে ৩০ বলে ৩১ রান করে পরাজয়ের ব্যবধান কমাতে ভূমিকা রেখেছেন তিনি।
দ্বিতীয় ম্যাচে অপেক্ষাকৃত খর্বশক্তির ওমান ‘এ’ দলের সাথে অবশ্য ব্যাটিংয়ে নামতে হয়নি শেখ মেহেদীকে। তবে বোলিংয়ে ঠিকই অবদান রেখেছেন তিনি, দশ ওভারে মাত্র ২৯ রান খরচ করে পেয়েছেন এক উইকেট। আর গ্রুপের শেষ ম্যাচে দেখা মিলেছে অলরাউন্ডার মেহেদীর।
ব্যাটিং ও বোলিং – দুই বিভাগেই নৈপুণ্য দেখিয়েছেন তিনি। ডেথ ওভারে খেলেছেন ১৯ বলে ৩৬ রানের এক ঝড়ো ইনিংস। এরপর কোন উইকেট না পেলেও দশ ওভারে ৩৩ রান খরচ করে কৃপণতার পরিচয় দিয়েছেন।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে এই ম্যাচ নিয়ে মেহেদী বলেন, ‘এই ম্যাচটা অনেক গুরত্বপূর্ণ ছিল, ডু অর ডাই। সেমি-ফাইনাল খেলতে হলে জিততেই হবে- মনের ভেতর এটাই কাজ করছিল। ঠাণ্ডা এবং শান্ত থেকে যেভাবে খেলা যায় সেটাই চেষ্টা করেছি।’
আর এমন দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পর বিশ্বকাপ ও এশিয়া কাপের দলে জায়গা পেতে পারেন শেখ মেহেদী – এমনটাই শোনা যাচ্ছে সবার মুখে। তিনি নিজেও সেসব নিয়ে ভাবছেন কি না এমন প্রশ্নে এই ডানহাতি জানান তিনি ভাবছেন কেবল ইমার্জিং কাপ নিয়েই।
বললেন, ‘সিলেকশন আমার হাতে নাই। আমার হাতে যেটা আছে সেটা হলো প্রসেস আর আমার পারফরম্যান্স। আমি চেষ্টা করে যাচ্ছি বাদ-বাকি উনাদের ইচ্ছা। আপাতত বিশ্বকাপ ও এশিয়া কাপ মাথায় নিয়ে কাজ করছি না। এখন খেলছি ইমার্জিং কাপে, তাই মাথার ভেতরও এটাই আছে।’
দলে জায়গা পেলে শেখ মেহেদীকে খেলতে হবে সাত নম্বর পজিশনে। এই জায়গার গুরুত্ব সম্পর্কে জানা আছে তাঁর। এই অফ স্পিনার মনে করেন, ‘নাম্বার সেভেন খুবই ক্রিটিক্যাল পজিশন। সেটা যেকোনো দলের জন্যই হোক না কেন। এখানে সবচেয়ে সেরা ব্যাটারগুলোই থাকে। আমি জানি না কী করতে পারব। আমি নম্বর সেভেনে খেলছি না, নম্বর এইটে খেলছি। একজন বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে আমার ব্যাটিং উন্নতি করার চেষ্টা করছি।’
অবশ্য ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে খুব একটা চিন্তা করেন না শেখ মেহেদি। যেকোনো পরিস্থিতিতে যেকোনো পজিশনে খেলতে নিজেকে প্রস্তুত রাখছেন তিনি।
এই অলরাউন্ডার বলেন, ‘নম্বর সেভেনটা ম্যাটার করে না। একজন ক্রিকেটার হিসেবে আমার যেকোনো পজিশনে খেলার ইচ্ছাশক্তি থাকতে হবে। আমি নিজেকে ওইভাবে প্রস্তুত করছি।’
ইমার্জিং এশিয়া কাপে যেভাবে পারফর্ম করছেন শেখ মেহেদি তাতে হয়তো তাঁকে একবার মূল এশিয়া কাপেও বাজিয়ে দেখতে পারে টিম ম্যানেজম্যান্ট। সেখানে ভাল করলে মিলবে বিশ্বকাপের টিকেটও, এই তারকার জন্য আগামী কয়েকদিন তাই খুবই গুরুত্বপূর্ণ।