এমন মাস্টারমাইন্ড কোচের আবির্ভাব নাকি এর আগে বাংলাদেশে হয়নি। তাঁর সুনামের কোনো শেষ নেই। সেটা এতটাই যে, নিজের অতিত ইতিহাস ভুলে, আবারও অনেক আশা নিয়ে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল চান্দিকা হাতুরুসিংহকে।
অথচ, এই হাতুরুসিংহেই সেই ব্যক্তি যিনি আগের মেয়াদে স্বদেশে চাকরি পেয়ে মাঝপথে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সাথে চুক্তিভঙ্গ করে ছেড়ে দেন কোচের দায়িত্ব। এমনকি নিজের দেশ শ্রীলঙ্কাতেও টিকতে পারেননি বেশিদিন, সেখানেও তাঁর বিরুদ্ধে পাওয়া গেছে হাজারো অভিযোগ।
কিন্তু, বিশ্বকাপ স্বপ্নে বুঁদ বিসিবি সেসব অতিত আর অভিযোগ ভুলেই দায়িত্ব তুলে দিয়েছিল ‘দ্য মাস্টারমাইন্ড’-এর হাতে। কিন্তু, ফলাফল লবডঙ্কা। নতুন কোচ ও নতুন অধিনায়কের অধীনে বিশ্বকাপের মঞ্চে ভরাডুবি হয় বাংলাদেশ দলের। এখানেই শেষ হয়, বিরাট রকমের শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগও আসে হাতুরুসিংহের বিরুদ্ধে।
আর সেটা যে কেবলই অভিযোগ নয়, তা বিসিবির সাম্প্রতিক কিছু পদক্ষেপেও স্পষ্ট। হয়তো, দ্রুতই হাতুরুসিংহের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থাও নেবে দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক এই সংস্থা। তবে, হাতুরুসিংহের তাতে থোড়াই যেন কেয়ার।
তিনি চলছেন নিজের খেয়ালখুশি মতই। বিশ্বকাপ কিংবা এশিয়া কাপের মঞ্চে বসে তিনি যেমন পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছেন সেটার রেশ থাকছে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে চলমান সিরিজেও। প্রথম ওয়ানডে যেন হাতুরুসিংহের ‘মাস্টারমাইন্ড’ গেম প্ল্যানের আরেক অধ্যায় রচনা করল।
ডানেডিনের বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে বাংলাদেশ খেলতে নামে তিনজন ওপেনার নিয়ে। তারা হলেন সৌম্য সরকার, এনামুল হক বিজয় ও লিটন দাস। ওপেনিংয়ে লম্বা সময়ের প্রমাণিত লিটন দাসকে খেলতে হয় চার নম্বরে। কেন? কারণ ওপেন করবেন হাতুরুসিংহের ‘প্রিয় পাত্র’ সৌম্য সরকার।
তিনি অবশ্য খুব বেশি কালক্ষেপন করেনি। চার বলের স্থায়ী ইনিংসে রানের খাতাই খুলেননি। এর আগে ছয় ওভার বোলিং করে হজম করেন ৬৩ রান। আচ্ছা, এত খরুচে বোলিংয়ের পরও বৃষ্টিতে ৩০ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে সৌম্যকে ছয় ওভার বোলিং করতে হল কেন?
কারণ হল, বাংলাদেশ খেলতে নেমেছে কার্যত চারজন বোলার নিয়ে। হ্যাঁ, ৫০ ওভারের ম্যাচে চারজন বোলার। এমনই অভিনব হাতুরুসিংহের পরিকল্পনা। শুরুতে স্ট্রাইক বোলারদের দিয়ে বোলিং করানো নাজমুল হোসেন শান্তর হাতে শেষের দিকে সৌম্য ছাড়া কোনো বিকল্প ছিল না।
ঠিক যেমন, বিসিবি ধারণা ছিল চান্দিকা হাতুরুসিংহে ছাড়া কোনো বিকল্প ‘মাস্টারমাইন্ড’ নেই! কিন্তু, যে কোচের এত সুনাম তাঁর পরিকল্পনা এতটা ঠুনকো কেন হবে? প্রশ্নটা উঠছে বারবার!