ফুটবল শ্রেষ্ঠত্বের প্রতীক ব্যালন ডি’ অর উঠবে কার হাতে, সবটা জুড়েই কি ডেমবেলে থাকবেন, নাকি সম্ভাবনার শেষ আশাটা বাঁচিয়ে রেখেছেন লামিন ইয়ামাল কিংবা কিলিয়ান এমবাপ্পে?
২০২৪-২৫ মৌসুম জুড়ে ছিল ইউরোপের নানা চমক আর অর্জনের গল্প। প্যারিস সেন্ট জার্মেইনের ইতিহাস, ইন্টার মিলান অপ্রাপ্তি, বার্সার আক্ষেপ সবই ছিল মৌসুম জুড়ে। তবে ব্যক্তিগত অর্জনের হিসাব যে এখনো বাকি!
ব্যালন ডি’অরের খাতায় সবচেয়ে আলোচনায় থাকা নাম নি:সন্দেহে উসমান ডেমবেলে। প্যারিস সেন্ট জার্মেইয়ের এই ফরাসি উইঙ্গার এবার ইউরোপ সেরা হয়েছেন। শুধু তাই নয় ফ্রেন্স ক্যাপ এবং লিগ ওয়ানও রয়েছে নামের পাশে। লিগ ওয়ানের সর্বোচ্চ গোল স্কোরার সেই সাথে হয়েছেন প্লেয়ার অফ দ্য ইয়ারও।
চ্যাম্পিয়নস লিগ জুড়ে প্যারিসের ট্রাম্পকার্ড ছিলেন ডেমবেলে। ১৫ ম্যাচে ৮ গোল, সাথে ৬ অ্যাসিস্ট—সবমিলিয়ে প্যারিসের সবটা জুড়ে ছিলেন তিনি। এবারই ক্লাব ক্যারিয়ারে নিজের সবচেয়ে পরিণত ও ধারাবাহিক মৌসুম কাটিয়েছেন এই ফরাসি উইঙ্গার। তাই ব্যালন ডি অরের অন্যতম দাবিদার তিনিই।
তবে স্পেনের বিস্ময় বালক লামিন ইয়ামালেরও সম্ভাবনা আছে বেশ জোরালো ভাবেই। বার্সেলোনাকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপা না জেতাতে পারলেও ফুটবল নৈপুণ্যে জানান দিয়েছেন তিনিই সময়ের সেরা। চ্যাম্পিয়নস লিগের ১৩ ম্যাচে করেছেন ৫ গোল আর ৪ অ্যাসিস্ট।
এছাড়াও লা লিগা , স্প্যানিশ সুপার ক্যাপ , কোপা দেল রে জয় সেইসাথে স্পেনের প্লেয়ার অফ দ্য সিজনেও নাম আছে ইয়ামালের। তাই তো ডেমবেলে ঘাড়ের উপর নি:শ্বাস ফেলছেন তিনিও।
এ পর্যায়ে এসে অনেকেই ধরেই নিচ্ছেন ডেম্বেলের হাতেই উঠবে ফুটবল শ্রেষ্ঠত্ব। তবে এখনো বাকি কিছু হিসাব-নিকাশ যা উল্টে দিতে পারে পাশার দান। সামনে আছে ন্যাশনস লিগ। আর এই লিগের পারফরম্যান্সটাই হতে পারে সম্ভাবনার শেষ সুযোগ।
যদি লামিন ইয়ামাল জাদুকরী খেলাটা সেখানে দেখাতে পারেন তবে নিশ্চিতভাবে সুযোগ থাকবে ডেমবেলে টেক্কা দেওয়ার। তবে ডেম্বেলেও নিশ্চয়ই নিজেকে মেলে ধরতে চাইবেন স্ব:মহিমায়।
তালিকায় আরেকটা নামেরও ক্ষীণ আশা রয়েছে—রিয়ালের কিলিয়ান এমবাপ্পে। লা লিগার সর্বোচ্চ গোল স্কোরারের সামনেও রয়েছে বেশ কিছু সুযোগ। ন্যাশনস লিগে যদি ফ্রান্সের হয়ে সব আলো কেড়ে নিতে পারেন, কে জানে—তাঁর হাতেও চলে আসতে পারে সোনার হরিণ। এছাড়াও ইউরোপিয়ান গোল্ডেন বুট জেতাও সম্ভাবনা বাড়িয়ে রাখছে এই স্পিডস্টারের।
তবে ক্লাব ওয়ার্ল্ড কাপের পারফরম্যান্স ডেম্বেলে এবং এমবাপ্পেকে এগিয়েই রাখবে। কেননা এখানে যে ইয়ামালের সুযোগটা থাকছে না। ব্যালন ডি’অর মানে শুধুই ব্যক্তিগত নৈপুণ্য নয়, বরং দলের জয়ে নিজের প্রভাবকেও গুরুত্ব দেওয়া হয় এখানে। ঠিক তাই, সামনে থাকা ন্যাশনস লিগ হতে পারে এই প্রতিযোগিতার মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো মঞ্চ। তাই তো আন্তর্জাতিক লড়াই কৌতূহল বাড়াচ্ছে দ্বিগুণ।
সব মিলিয়ে ডেমবেলে ও ইয়ামালকে নিয়ে এখন আলোচনা বেশি, তবে ব্যালন ডি’অরের মঞ্চ যে শেষ মুহূর্তেও দিতে পারে চমক, এমনটা ফুটবল বিশ্ব বহুবার দেখেছে।