কলিস ‘একদিনের’ কিং

দর্শকদের মনে উৎকন্ঠা, কিং কি পারবেন ফাইনালের চাপ সামলে দলের বিপদে হাল ধরতে নাকি থেমে যাবেন ক্যামিওতেই? হ্যাঁ, কিং সেদিন পেরেছিলেন। মাত্র ১৩ গড়ের নাম সর্বস্ব কিং সেদিন আক্ষরিক অর্থেই হয়ে উঠেছিলেন ‘কিং’। নিজের মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলেই হাঁকালেন চার! ১০ চার ও ৩ ছক্কার সাহায্যে খেললেন ৬৬ বলে ৮৬ রানের বিস্ফোরক ইনিংস! এমন এক ইনিংস যা ভিভ রিচার্ডসের মত ব্যাটসম্যানকেও দর্শক বানিয়ে রেখেছিল! ১৩৯ রানের জুটিটা যে ভিভ নয়, কিংই ডমিনেট করেছিলেন!

লর্ডস, ১৯৭৯। বিশ্বকাপ ফাইনালে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই চাপের মুখে শিরোপাধারী চ্যাম্পিয়ন উইন্ডিজ। ডেসমন্ড হেইন্স (৯), গর্ডন গ্রিনিজ (২০), আলভিন কালিচরণ (৪), ক্লাইভ লয়েড (১৩) — একে একে সবাই ফিরলেন ব্যর্থ হয়ে। ভিভ রিচার্ডসকে সঙ্গ দেয়ার মত ছিলেন কেবল কলিস কিং; ব্যাটিং অলরাউন্ডার হলেও সাত ওয়ানডে খেলে যার গড় মাত্র ১৩!

অবশ্য আগের ম্যাচেই (পাকিস্তানের বিপক্ষে সেমিফাইনাল) মাত্র ৮ গড় নিয়ে খেলতে নেমে যিনি উপহার দিয়েছিলেন ২৪ বলে ৩৪ রানের ‘প্রাইসলেস’ ক্যামিও। যার সুবাদে গড়টাও বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ১৩-তে।

দর্শকদের মনে উৎকন্ঠা, কিং কি পারবেন ফাইনালের চাপ সামলে দলের বিপদে হাল ধরতে নাকি থেমে যাবেন ক্যামিওতেই? হ্যাঁ, কিং সেদিন পেরেছিলেন। মাত্র ১৩ গড়ের নামসর্বস্ব কিং সেদিন আক্ষরিক অর্থেই হয়ে উঠেছিলেন ‘কিং’।

নিজের মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলেই হাঁকালেন চার! ১০ চার ও ৩ ছক্কার সাহায্যে খেললেন ৬৬ বলে ৮৬ রানের বিস্ফোরক ইনিংস! এমন এক ইনিংস যা ভিভ রিচার্ডসের মত ব্যাটসম্যানকেও দর্শক বানিয়ে রেখেছিল! ১৩৯ রানের জুটিটা যে ভিভ নয়, কিংই ডমিনেট করেছিলেন!

সেদিন মাঠে কলিস কিংয়ের আধিপত্য বোঝাতে একটা তথ্য দিই। কিংয়ের যখন ফিফটিও হয়নি, ভিভ ছিলেন নব্বইয়ের কোটায়। তারপর যখন তিনি আউট হলেন, ভিভ তখনও ছিলেন নব্বইয়ের ঘরে!

ধারাভাষ্যকার টনি কোজিয়ারের ভাষায়, ‘It was a complete carnage at Lord’s. It didn’t matter who was bowling, King kept despatching them to the ropes. And what a knock it turned out to be.’

কিংয়ের বিদায়ের পর স্বরূপে হাজির হলেন ভিভও। খেললেন ১১ চার ও তিন ছক্কায় সাজানো ১৫৭ বলে ১৩৮ রানের মহাকাব্যিক এক ইনিংস। উইজডেনের বিচারে যেটি ওয়ানডের সর্বকালের দ্বিতীয় সেরা ইনিংস!

উল্লেখ্য, কিং আউট হওয়ার পর ভিভ ছাড়া শেষ পাঁচ ব্যাটসম্যানের মিলিত অবদান ছিল মাত্র ৫ রান!

নির্ধারিত ৬০ ওভার শেষে উইন্ডিজের সংগ্রহ গিয়ে দাঁড়ায় ৯ উইকেটে ২৮৬, ফাইনাল জেতার জন্য যা ছিল যথেষ্ট; এবং হলোও তাই। একতরফা ম্যাচে উইন্ডিজ পেল ৯২ রানের অনায়াস জয়। ব্যাট হাতে ঝড় তোলা কিং অবদান রাখেন বল হাতেও, ১৩ রান খরচায় নেন একটি উইকেট।

ফাইনালে ৮৬ রান করার সুবাদে কলিস কিংয়ের ওয়ানডে গড় বেড়ে গিয়ে দাঁড়াল ২৫। তারপর আর বাড়েনি, বরং কমেছে। ১৮ ওয়ানডের ক্যারিয়ার শেষ করেন ২৩ গড় নিয়ে; ফিফটিও ওই একটিই।

ওয়ানডের পাশাপাশি নয় খানা টেস্টও খেলেছেন কিং। টেস্টের পারফরম্যান্স অবশ্য তুলনামূলক বেটার, ৩২ গড়ে রান তুলেছেন, হাঁকিয়েছেন দুটো ফিফটি আর একটি সেঞ্চুরি!

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...