টি-টোয়েন্টি দলে মেহেদী হাসান মিরাজ যেন এক গোলক ধাঁধা। তাকে নিয়ে টিম ম্যানেজমেন্ট বেশ বিপাকেই যেন পড়েছে। দলে সাকিব আল হাসানের অভাব পূরণে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে তাকে। কিন্তু অভাবকে আরও বেশি মনে করিয়ে দিচ্ছেন তিনি।
মিরাজকে নিয়ে নির্দিষ্ট কোন পরিকল্পনা নেই যেন বাংলাদেশের। তাকে স্রেফ বাজিয়ে দেখা হচ্ছে। দিল্লিতে প্রথম ওভারেই তার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে নতুন বল। অথচ তাসকিন আহমেদ, তানজিম হাসান সাকিবদের মত পেসাররা ছিলেন। এসেই মিরাজ বেদম প্রহারের শিকার হলেন। প্রথম ওভারেই ১৫ রান হজম করেন ডান-হাতি অফস্পিনার।
এরপর পুরো বোলিং ইনিংসে ৪৬টি রান দিয়েছেন মিরাজ। স্পিন সহায়ক উইকেটে মিরাজ যথেষ্ট ভাল বোলার। উইকেটও পান তিনি। কিন্তু ব্যাটিং উইকেটে তিনি বেশ নির্বিষ একজন স্পিনার। তবুও তাকে দিয়ে ইনিংসের শুরু করানো সাহসী সিদ্ধান্ত। তবে সে সিদ্ধান্তের পেছনে ছিল না পর্যাপ্ত পরিকল্পনা।
একটা গ্যাম্বেল করার চেষ্টাই হয়ত অধিনায়ক নাজমুল শান্ত করেছেন। সেই চেষ্টাতেই অবশ্য ক্ষান্ত হয়নি বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্ট। ব্যাট হাতে মিরাজ বরাবরই অ্যাংকর রোল পালন করে থাকেন। তেমন একজন ব্যাটারকে বাংলাদেশ ব্যাট করতে পাঠিয়েছে পাঁচ নম্বরে।
প্রায় একই রকম পরিস্থিতিতে ভারত পড়েছিল। পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার আগেই তিনটি উইকেট পড়ে যায় ভারতের। সেখান থেকে ভারত ইনিংস বড় করবার দিকে মনোযোগ দেয়নি। বরং কাউন্টার অ্যাটাক করতে চেয়েছে। রিঙ্কু সিং ও নিতিশ কুমার রেড্ডি রীতিমত লণ্ডভণ্ড করেছে বাংলাদেশের মনোবল।
সেই একরকম পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ খোলস বন্দী হওয়ার পন্থাই বেছে নেয়। মিরাজকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় ইনিংসের হাল ধরার জন্য। হাল তিনি ধরতে পারেননি। টি-টোয়েন্টি অবশ্য হাল ধরার কিছু নেইও। আপনি হয় জয়ের জন্য যাবেন, কিংবা পরাজয় মেনে নেবেন, মাঝের কোন কিছুর অস্তিত্ব টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নেই।
আর সেখানেই বারবার বাংলাদেশ পিছিয়ে যায়। বাংলাদেশ হয়ত ম্যাচে জয় পেত না। কিন্তু ওই যে পালটা আক্রমণের ইন্টেন্ট দেখানো প্রয়োজন ছিল। সেটা কোনভাবেই মিরাজকে দিয়ে সম্ভব নয়। মিরাজের থেকে প্রত্যাশা করাও বোকামি। ঠিক সে কারণেই মিরাজ একটা ধুম্রজাল, অন্তত টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে।
তাকে নিয়ে স্পষ্ট হওয়া উচিত বাংলাদেশের। স্রেফ একজন অলরাউন্ডার প্রয়োজন বলেই মিরাজের অন্তর্ভুক্তি- এমন মানসিকতা থেকে অতিদ্রুত বেড়িয়ে আসা উচিত। সেই সাথে প্রয়োজনে একজন অলরাউন্ডার ছাড়াই খেলার ছক আঁকা উচিত বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্টের। সে পথে এগুবে বাংলাদেশ, নাকি গৎবাঁধা বুলি আওড়াবে?