মিচেল মার্শ, ইশ যদি ইনজুরি তাড়া না করত!

ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই তাঁর প্রতিভা নিয়ে সংশয় ছিল না কারো। কিন্তু ক্রমাগত ইনজুরির কারণে মিচেল মার্শ সেই প্রতিভার পরিস্ফুটন ঘটাতে পারছিলেন না। তবে এবারের আইপিএলে ইনজুরিমুক্ত এক মৌসুম কাটানোর সুবাদে ইঙ্গিত দিচ্ছেন ফিরে আসার। 

ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই তাঁর প্রতিভা নিয়ে সংশয় ছিল না কারো। কিন্তু ক্রমাগত ইনজুরির কারণে মিচেল মার্শ সেই প্রতিভার পরিস্ফুটন ঘটাতে পারছিলেন না। তবে এবারের আইপিএলে ইনজুরিমুক্ত এক মৌসুম কাটানোর সুবাদে ইঙ্গিত দিচ্ছেন ফিরে আসার। 

শেন ওয়াটসন কিংবা জেমস ফকনারদের উত্তরসূরি হিসেবেই অস্ট্রেলিয়া জাতীয় দলে আগমণ মার্শের। বয়সভিত্তিক ক্রিকেট খেলার সময়েই পেয়ে গিয়েছিলেন ভবিষ্যৎ তারকার খেতাব। মারকুটে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি কার্যকরী মিডিয়াম পেস বোলিংয়ের মার্শেই অস্ট্রেলিয়া খুঁজে পেয়েছিল তাঁদের ভবিষ্যৎ। 

জাতীয় দলে ডাক পেতে তাই বেশিদিন অপেক্ষা করতে হয়নি। ব্রেট লির ইনজুরির সুবাদে সদ্য কৈশোর পেরোনো মার্শকে একাদশে সুযোগ করে দিয়েছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। মার্শও সুযোগটা হেলায় হারাননি, প্রথম ম্যাচেই খেলেছিলেন ৩৬ রানের প্রতিশ্রুতিশীল এক ইনিংস। সবাই ভেবেছিলেন এরপরের মসৃণ পথটা এগোতে সমস্যা হবে না মার্শের। 

কিন্তু ক্রমাগত ইনজুরি আর ফিটনেসের সমস্যা পিছিয়ে দিয়েছে এই অলরাউন্ডারকে। তাঁর পারফরম্যান্স নিয়ে কখনোই প্রশ্ন ওঠেনি, কিন্তু ভাগ্যটা বরাবরই বিরূপ আচরণ করেছে এই তারকার প্রতি। যখনই ফর্মে ফিরেছেন, তখনই ইনজুরি হানা দিয়েছে মার্শের রাজ্যে। সবাই ধরেই নিয়েছিল ইনজুরির কারণে আরো এক ক্রিকেট প্রতিভা বোধহয় হেলায় হারিয়েই গেল। 

তবে মার্শ হাল ছাড়েননি। যতবার মাঠের বাইরে ছিটকে গেছেন, ফিরে এসেছেন কঠোর পরিশ্রমে। অস্ট্রেলিয়াকে জিতিয়েছেন পরম আরাধ্য টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা। ইনজুরি সমস্যা এখনো পিছু না ছাড়লেও, মার্শ যখনই সুযোগ পাচ্ছেন নিজের সেরাটাই দিচ্ছেন। 

উইকেটের চারপাশে শট খেলার সামর্থ্যের পাশাপাশি দুর্দান্ত বোলিং, সব মিলিয়ে টি-টোয়েন্টির বৈশ্বিক তারকা হবার সমস্ত গুণাবলীই আছে মার্শের মাঝে। খেলতে পারেন ব্যাটিং অর্ডারের যেকোনো পজিশনে, নিজের দিনে একাই পাল্টে দিতে পারেন ম্যাচের ফলাফল। কিন্তু ইনজুরি সমস্যার কারণেই কিনা ফ্যাঞ্চাইজি দলগুলো কখনোই ভরসা করতে পারেনি এই তারকাকে। 

তবে আইপিএলের দল দিল্লী ক্যাপিটালস আস্থা রেখেছিল মার্শের উপর। ২০২২ আইপিএল নিলামে সাড়ে ছয় কোটি রুপির বড় অংকের বিনিময়ে এই অলরাউন্ডারকে দলে ভেড়ায় দলটি। কিন্তু দলটির হয়ে প্রথম মৌসুমটা মোটেই ভালো কাটেনি এই তারকা, আট ম্যাচে ১০২ রানের পাশাপাশি শিকার করেছিলেন চার উইকেট। 

এবারের মৌসুমের শুরুটাও দুঃস্বপ্নের মতো হয়েছিল মার্শের। ব্যাটে রান পাচ্ছিলেন না, বোলিংয়ের দেখা মিলছিল না পুরনো ছন্দ। মাঝে তো আইপিএল থেকে ছুটি নিয়ে অস্ট্রেলিয়া উড়ে গিয়েছিলেন বিয়ের পিড়িতে বসতে। তবে ফেরার পর থেকেই ইঙ্গিত দিচ্ছেন পুরনো রূপে ফেরার। 

চেন্নাই সুপার কিংসের বিপক্ষে ম্যাচে ব্যাটে রান না পেলেও বল হাতে ঠিকই আলো ছড়িয়েছেন এই তারকা। আহামরি গতি না থাকলেও তাঁর নিয়ন্ত্রিত লাইন-লেংথে দিশা হারিয়েছেন চেন্নাইয়ের ব্যাটাররা।

ইনিংসের মাঝের ওভারের পাশাপাশি ডেথ ওভারেও ধরে রেখেছিলেন ছন্দটা। শেষ পর্যন্ত তিন ওভারে মাত্র ১৮ রান দিয়ে শিকার করেছেন তিন উইকেট। ব্যাট হাতেও অবশ্য ফর্মে ফেরার ইঙ্গিত ছিল। কিন্তু ফিরতে হয়েছে দুর্ভাগ্যজনক এক রান আউটে। 

১১ ম্যাচে চার জয় নিয়ে পয়েন্ট তালিকার সবচেয়ে তলানিতে আছে দিল্লী ক্যাপিটালস। মার্শ তাই যত দ্রুত চেনা ছন্দে ফিরবেন, ততই মঙ্গল দলটির জন্য। 

Get real time updates directly on you device, subscribe now.

আরও পড়ুন
মন্তব্যসমূহ
Loading...