মোনাঙ্ক প্যাটেল, স্বপ্নবাজ এক সেনাপতি

শাহিন শাহ আফ্রিদির ফুলার লেন্থের বলটা স্ট্যাম্প লাইন ধরেই এগিয়ে যাচ্ছিল। সেই বলটায় অসাধারণ টাইমিং। বোলারের মাথার উপর দিয়ে বল গিয়ে আছড়ে পড়ল সীমানার বাইরে। পপিং ক্রিজের কাছে আফ্রিদির হতাশাই প্রমাণ করে মোনাঙ্ক প্যাটেলের সেই ছক্কা কতটা আহত করেছে গোটা পাকিস্তানকে।

কেননা সেই ছক্কার মধ্য দিয়েই তো যুক্তরাষ্ট্রের অধিনায়ক ছুয়েছেন অর্ধশত রানের মাইলফলক। সেই ছক্কার ঠিক আগে শাহিনের বলে বাউন্ডারি আদায় করে ফিফটির কাছাকাছি পৌছে গিয়েছিলেন মোনাঙ্ক প্যাটেল।

তবে, ব্যক্তিগত অর্জনের চাইতেও বড় কিছু অর্জনের দিকেই ছিল তার নজর। যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে বড় জয়ের পথেই দলকে রেখেছিলেন মোনাঙ্ক।

১৬০ রানের লক্ষ্যমাত্রা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের সামনে। নবাগত, খর্বশক্তির দল- পাকিস্তানের বিপক্ষে কি আর এমন লড়াই করবে! তাছাড়া পাকিস্তানের পেস আক্রমণও যে দিচ্ছিল হুঙ্কার।

সময়ের অন্যতম পেস আক্রমণের বিপক্ষেও লড়াই চালিয়ে গেলেন মোনাঙ্করা। বিশেষ করে অধিনায়ক হিসেবে দলকে উজ্জীবিত করবার কাজটা মোনাঙ্কেরই করতে হত।

সেই কাজটা দারুণভাবে করেছেন মার্কিন দলের অধিনায়ক। ৩৮ বলে ৫০ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলে গেছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রকে দেখিয়ে গেছেন জয়ের স্বপ্ন। কেননা তিনি যখন আউট হন তখন যুক্তরাষ্ট্রের সংগ্রহ তিন উইকেট হারিয়ে ১১১ রান। ১৫ তম ওভারের শুরু তখন। জয়ের জন্যে ৩৫ বলে ৪৯ রানের প্রয়োজন ছিল।

জয়ের রাস্তাটা খুলে দিয়ে গিয়েছিলেন মোনাঙ্ক। সে অনুসন্ধানের মাঝেই ৭টি চারের মার এসেছে মোনাঙ্কের ব্যাট থেকে। এছাড়াও আফ্রিদির বলে একটি দৃষ্টিনন্দন ছক্কারও মঞ্চায়ন হয়েছে তার ব্যাটের আঘাতে। জয়-পরাজয় ছাপিয়ে মোনাঙ্কের এই ইনিংসটি বহুকাল জ্বলজ্বল করবে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে।

তাছাড়া মোনাঙ্কের সেই ইনিংসটি একটা উদাহরণ হয়ে থাকবে ছোট দলগুলোর জন্যেই। নবাগত দলের অধিনায়কদেরই হতে হয় সম্মুখভাগের সেনাপতি।

জয় পাওয়া সম্ভব- এমন বার্তা ছড়িয়ে দিতে হয় দলের মাঝে। তাহলেই তো অপ্রাপ্তির তালিকাটা ক্রমশ ছোট হতে শুরু করবে। স্বপ্নগুলো বড়ই দেখতে হয়, মোনাঙ্করা সেটাই যেন বারেবারে বুঝিয়ে দিয়ে যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Share via
Copy link